“এখনো অনেক কিছু পাওয়ার আছে”

0

ইশতিয়াক পারভেজ॥ সুপার টুয়েলভের তিন ম্যাচ হেরে বসেছে বাংলাদেশ। পরিসংখ্যান বলছে এখনো সেমিফাইনাল খেলার সুযোগ আছে। এ জন্য অস্ট্রেলিয়া, উইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার জয়-পরাজয়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। সেই সঙ্গে শেষ দুটি ম্যাচও জিততে হবে টাইগারদের। এমন সমীকরণ যা কল্পনাতেই বেশি মানায়। এরপরও অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ অনেক কিছু পাওয়ার আশায় আছেন। কি পাবেন তিনি! এমন প্রশ্ন সকল ভক্ত-সমর্থকের। তবে টাইগার অধিনায়কের বিশ্বাসটা অনেক দৃঢ়। তিনি বলেন, ‘এখনো অনেক কিছু পাওয়ার আছে। সেমিফাইনালের আশা হয়তো কিছুটা ক্ষীণ হয়ে গেছে। কিন্তু দুটি ম্যাচ আছে। আমরা যদি ম্যাচ দুটি জিততে পারি, দলের জন্য ভালো কিছু হবে। ‘হ্যাঁ, শেষ দুটি ম্যাচ জিততে পারলে অন্তত মান রক্ষা হবে। ফিরে পাবে আত্মবিশ্বাস। দুবাই থেকে ফিরেই তারা মুখোমুখি হবে দক্ষিণ আফ্রিকার। জিততে পারলে নিজেদের ফিরে পাবে টিম বাংলাদেশ।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কা ও উইন্ডিজের বিপক্ষে জয় হাতের মুঠো থেকে ফসকে গেছে মাহমুদুল্লাহদের নিজের ভুলে। ঐতিহাসিক এই মাঠেই যেন সব হারিয়ে বসেছে টাইগাররা। এবার ২রা নভেম্বর বাংলাদেশ বিশ্বকাপে তাদের চতুর্থ ম্যাচ খেলবে আবুধাবিতে। এই ভেন্যুতে এটি তাদের শেষ ম্যাচ। এর আগে এখানে প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ৮ উইকেটের হার ছিল যে অসহায় আত্মসমর্পণ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই মাঠে জিততে হলে নিজেদের উজাড় করে দিতে হবে। তবে আপাতদৃষ্টিতে সেই শক্তি দেখা যাচ্ছে না বাংলাদেশ শিবিরে। এরই মধ্যে দলের দুই সেরা ক্রিকেটার ইনজুরি আক্রান্ত। সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহান এই ম্যাচে খেলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। বিসিবি’র মেডিকেল বিভাগের প্রধান চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা দুজনকে (সাকিব ও সোহান) পর্যবেক্ষণে রেখেছি। ম্যাচের আগে তাদের অবস্থা আবারো দেখা হবে। এরপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তারা খেলতে পারবেন কিনা!’ যদি শেষ পর্যন্ত তারা খেলতে না পারে তাহলে টাইগারদের সামনে আরও বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।’
সর্বশেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে টগবগে ফর্মে রয়েছে প্রোটিয়ারা। গতকাল রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে চার উইকেটে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
অনেক আশা নিয়ে যাওয়া টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের প্রাপ্তি এখনো বলতে গেলে শূন্য। এমনিতে এই কন্ডিশনে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানো কিংবা অস্ট্রেলিয়াকে কঠিন সময় উপহার দেয়া বাংলাদেশের জন্য অসম্ভব হওয়ার কথা নয়। কিন্তু দলের যে ছন্নছাড়া অবস্থা, তাতে সেই আশা করাও এখন কঠিন! তবে টাইগার অধিনায়ক আশায় বুক বেঁধেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি সবাই। মরিয়া হয়েই চেষ্টা করছি সবাই মিলে। মাঠে শতভাগ নিবেদন দেয়ার চেষ্টা করছি। ভুল হচ্ছে। তবে আমরা দুটি ম্যাচ জয়ের চেষ্টা করবো।’
চাপেই ভেঙে পড়েছে টাইগাররা
বাংলাদেশ দলের তিন ম্যাচে সবচেয়ে দৃষ্টিকটু ছিল ফিল্ডিং ও ব্যাটিং। বিশেষ করে শারজায় জিততে থাকা দুটি ম্যাচই হাত ফসকে বেরিয়ে গেছে ফিল্ডিং ব্যর্থতার কারণে। কেন এমন বেহাল দশা ফিল্ডিংয়ের! দলের সঙ্গে থাকা নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন মনে করেন চাপেই ভেঙে পড়েছে টাইগাররা। তিনি বলেন, ‘আমরা কিন্তু যথেষ্ট ফিল্ডিং অনুশীলন করি। কিন্তু যেটা হয়েছে যে বড় কোনো আসরে খেলতে নামলে মনস্তাত্ত্বিক চাপটা নিতে হয়। এটাই হয়েছে আমাদের। যারা ক্যাচ মিস করেছেন তারা দলের সেরা ফিল্ডার। আসলে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ঐ চাপটা নেয়া খুবই প্রয়োজন। আমার মনে হয় এই চাপ সামলানোর বিষয়টি নিয়ে কাজ করা উচিত। আর অনুশীলন যেটা হয় সেটা যথেষ্ট বলেই আমি মনে করি। কারণ ফিল্ডিং অনুশীলন কিন্তু সবাইকেই করতে হয়। এটাতে কোনো গ্যাপ নেই। যেটা বললাম আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্যাচ নেয়ার যে চাপটা সেটি শিখতে হবে।’
বিশ্বকাপ থেকে ফিরেই টাইগারদের সামনে পাকিস্তান চ্যালেঞ্জ। শুরু হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজের চ্যালেঞ্জ নিয়ে। তিন ম্যাচের এই সিরিজে এমন দল নিয়ে লড়াই করা কতোটা কঠিন হবে সবারই জানা। তাহলে কি দলে পরিবর্তন আসছে! এ বিষয়ে বাশার বলেন, ‘আমরা কিন্তু এখনো বিশ্বকাপের মাঝেই আছি। আমাদের এখনো দুটি ম্যাচ বাকি আছে। তাই ভবিষ্যতে কী করতে হবে তা নিয়ে এখন চিন্তা করার সময় হয়নি। চিন্তা তো করতেই হবে, সেটি করতে হবে বিশ্বকাপের পরে তখন পাকিস্তান সিরিজের আগে আমাদের হাতে কিছু সময় থাকবে তখন।’