“যশোরে অনুমোদন ছাড়াই ১০তলা ভবন নির্মাণ বিপাকে ফ্লাট গ্রহণকারীরা”

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে জেলা প্রশাসন ও পৌর প্রশাসনের অনুমোদন না নিয়ে ১০ তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। একসেনচিউর ডেভেলপার লিমিটেড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুজ্জমান নান্নুর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন এমন অভিযোগ করেছেন। জমির মালিক ফজলে রাব্বি মোপাসা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফজলে রাব্বি মোপাসা বলেন, ডেভেলপার কোম্পানিটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে ১০তলা ভবন নির্মাণ করে ২২টি পরিবারের কাছে ফ্লাট বিক্রি করেছেন। ফলে অনুমোনের অভাবে জমির মালিক ফজলে রাব্বি মোপাসাসহ ফ্লাটের বসবাসকারী পরিবারগুলো এখন বিপাকে পড়েছেন। তার দাবি প্রশাসন হয় ভবন ভেঙে ফেলুক, নয়তো সেখানে বসবাস করার জন্যে অনুমোদন দিক। তিনি সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, যশোর শহরে বিকে রোডস্থ তার ১৪ শতক জমিতে ১২তলা ভবন নির্মাণ করার জন্যে ‘একসেনচিউর ডেভলপার লিমিটেড কোম্পানি ২০১৬ সালে লিখিত দলিল মূলে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। চুক্তি করার পর সেখানেই ডেভলপার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুজ্জামান নান্নু ১০তলা ভবন নির্মাণ করেন এবং ২২টি পরিবারেরর কাছে ফ্লাট বিক্রি করেন। ওই ভবনে ৩০টি পরিবার থাকতে পারবেন। কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় ২২টি পরিবার বসবাস করছেন। এ অবস্থায় ডেভলপার জমির মালিক ও ভবনে বসবাসকারী পরিবারগুলোর কাছে চূড়ান্ত ছাড়পত্র না দিয়ে সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করছেন। মোপাসা তার লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, ভবনের চূড়ান্ত ছাড়পত্র কোম্পানি না দিলে আইনগতভাবে সেখানে বসবাস করা যায় না। কেন কোম্পানি তাদের চূড়ান্ত ক্লিয়ারেন্স (অনুমোদন) দিচ্ছে না এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে ফজলে রাব্বি মোপাসা জানতে পারেন পৌর প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভবনের অনুমোদন দেয়া হয়নি।
রাস্তার পাশ থেকে ৭ ফুট জায়গা ছাড়ার নিয়ম থাকলেও ৩ ফুট ছাড়া হয়েছে। আবার পৌরসভা থেকে ৭ম তলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন দিতে পারে। তার উপরতলা নির্মাণ করতে হলে জেলা প্রশাসনের বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন (বিসি) কমিটির অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু প্রশাসনিক এসব অনুমোদন না নিয়ে ইতোমধ্যে ভবনের ৫০ শতাংশ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে অনুমোদনবিহীন এ ১০ তলা ভবন প্রশাসনের নাকের ডগায় কীভাবে ৪ বছর ধরে নির্মাণ করা হলো এ প্রশ্ন করে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি গত ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর যশোর জেলা প্রশাসক ও যশোর পৌরসভার মেয়রের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। ওই আবেদনে তাদের সমস্যার কথা জানিয়েছেন। ৪ বছরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করতে না পারলে জমির বর্গফুট হিসেব করে ক্ষতি পূরণের টাকা জমির মালিককে দেওয়া কথা রয়েছে। কিন্তু কোনটাই না দিয়ে কোম্পানি ওই ভবন থেকে তাদের অফিস গুটিয়ে পালানোর চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় তারা যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সে জন্য পাহারায় রাখা হয়েছে। এদিক সংশ্লিষ্ট দফতরে জমা দেওয়া আবেদনের কোনো কাগজপত্র পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে কোনো প্রতিকার হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, হয় ভবনটি ভেঙে ফেলা হোক নয়তো ভবনের অনুমোদন দেওয়া হোক। তাহলে ওই ভবনে বসবাসকারী পরিবারগুলো অনিশ্চয়তার হাত থেকে রক্ষা পাবেন। সংবাদ সম্মেলনে ফজলে রাব্বি মোপাসার শরীক হাসান আলী গাজীও উপস্থিত ছিলেন।