ঘরে-বাইরে সবখানে মহিলারা নির্যাতন নিপীড়নের স্বীকার : নার্গিস বেগম

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেছেন, আজকে ঘরে-বাইরে সবখানে মহিলারা নির্যাতন নিপীড়নের স্বীকার হচ্ছেন। যে ক্ষমতাসীনরা নারীর অধিকার মর্যাদার কথা বলছেন, তারাই মহিলাদের ইজ্জত, সম্ভ্রম নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। ধর্ষণ থেকে শুরু করে নারীর প্রতি যে অন্যায় অবিচার করা হচ্ছে তা অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে অত্যন্ত ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। আর দেশের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা মানবাধিকারের কথা বলে মুখে ফ্যানা তুলে দিচ্ছে।
গতকাল দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা মহিলা দল আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। জেলা বিএনপি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেন, ক্ষমতাসীনরা সবখানে এতটাই অনিরাপদ করে তুলেছে যে, কোন নারীর ন্যূনতম সম্মান ও অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার অবস্থা নেই। তাদের কথা বলা, চলাফেরা কর্মের কোনটির স্বাধীনতা নেই। নারী ঘরের বাইরে বের হলে যুবলীগ, ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের কারণে ইজ্জত, সম্ভ্রম নিয়ে ঘরে ফিরতে পারছে না। অন্যদিকে, কর্মক্ষেত্রে নারীরা ব্যাপক বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছেন। অথচ, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলন মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। মহিলাদের বাদ রেখে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা সম্ভব না সেটি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি বীর উত্তম জিয়াউর রহমান। যে কারণে তিনি মহান জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছিলেন। মহিলাদের অধিকার ও সম্মান রক্ষার্থে যা যা করণীয় সবকিছুই জিয়াউর রহমান করেছিলেন। আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সকল সুযোগ সুবিধাও তিনি নিশ্চিত করেছিলেন। পরবর্তীকালে বেগম খালেদা জিয়াও এ সকল কর্মকান্ডকে আরও বেগবান ও গতিশীল করেছিলেন। আজকে অনেকে নারীর সম্মান নিয়ে কথা বলেন। যখন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী আপোষহীন গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি করে রাখা হয় তখন তাদের সম্মানে লাগে না।
বেগম খালেদা জিয়া অসম্মান মানে দেশের সকল নারীর অসম্মান মানে দেশের সকল নারীর অসম্মান করা। দেশের প্রতি অসম্মান দেখানো। অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেন, কেউ অপকর্ম করতে গিয়ে ধরা পড়লে তার পক্ষে কথা বলার লোকের অভাব হয় না। অথচ, একজন সাংবাদিক সত্য কথা লেখার জন্য নির্মম নির্যাতনের স্বীকার হয়। তখন তার পক্ষে কতা বলার লোক থাকে না। যতদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে ততোদিন নারী ঘরে বাইরে সবখানে নির্যাতন নিপীড়নের স্বীকার হবে। কোনদিনই তার সম্মান ও মর্যাদা ফিরে পাবে না। তাই মৌলিক, মানবিক অধিকার, ভোটাধিকার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারসহ নারীর মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন নিশ্চিত করতে হবে।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাড. হাজী আনিছুর রহমান মুকুল, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ, জেলা মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদিকা রাশিদা রহমান, সহ-সভানেত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ফেরদৌসী বেগম, জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক মারুফুজ্জামান কাঞ্চন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্মল কুমার বিট, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনেওয়াজ ইমরান, জেলা নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য, নগর মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদিকা সাবিহা সুলতানা, অ্যাড. মৌলদা পারভিন রিনি, মহিলা দল নেত্রী অ্যাড. মাহমুদা খানম, রাবেয়া বেগম, তরজিনা বেগম, আনোয়ারা পারভিন আনু, লুৎফুন্নাহার, নাজমা সুলতানা, রিজিয়া পারভিন, আলেয়া সিদ্দিকা, হালিমা পারভিন প্রমুখ।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা মহিলা দলের ভারপ্রাপ্ত সভানেত্রী হাসিনা ইউসুফ এবং পরিচালনা করেন নগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা শামছুন্নাহার পান্না। পরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত এবং দলের চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পরিপূর্ণ মুক্তি ও সুস্থতা এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মহিলা দলের প্রয়াত সকল নেত্রীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়। দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন জেলা ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোশারফ হোসেন।