স্বাস্থ্যবিধি মানতে নজরদারি নেই

0

রাজধানীসহ সারাদেশে রাস্তায় মানুষের চলাচল বেড়েছে। আগের মতোই যানজট শুরু হয়েছে। শপিং মল ও হাট-বাজারে মানুষের গাদাগাদি ভিড়। পর্যটন উন্মুক্ত করার পর সমুদ্রসৈকত থেকে শুরু করে ছোটখাটো বিনোদনকেন্দ্র সব জায়গায়ই মানুষের উপচে পড়া ভিড়। অবস্থাদৃষ্টে মনেই হয় না যে দেশে এখনো করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিপজ্জনক পর্যায়ে রয়েছে। অথচ শনিবার সকাল ৮টার আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গেছে ৮০ জন এবং আক্রান্ত হয়েছে তিন হাজার ৪৩৬ জন। আক্রান্তের হার ছিল ১৩.৬৭ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই হার আবার যেকোনো সময় ঊর্ধ্বমুখী হয়ে যেতে পারে। যেমন—এর আগে পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে নেমেও আবার তা ৩৬ শতাংশে উঠে গিয়েছিল। কোনো কোনো এলাকায় তা শতভাগের কাছাকাছি চলে গিয়েছিল। এর মধ্যে তেমন ধারা দেখাও যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। দৈনিক সংক্রমণ ২৫ হাজারে নামার পর কয়েক দিন ধরে তা ৪৫ হাজারের ওপরেই থাকছে। একই অবস্থা বাংলাদেশেও হতে পারে। কিন্তু সেসব নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মানা তো দূরের কথা, অনেকের মুখে সাধারণ একটি মাস্ক পর্যন্ত দেখা যায় না।
সরকার নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে, প্রত্যাহার করেনি। কারখানা, অফিস, গণপরিবহন, বিনোদনকেন্দ্র, রেস্তোরাঁ খুলে দিলেও স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ কিছু শর্ত রয়েছে। তার মধ্যে আছে রেস্তোরাঁ, বিনোদনকেন্দ্রে অর্ধেক সমাগম করা; মার্কেট, শপিং মল ও অফিস-কারখানায় হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ দূরত্ব বজায় রাখা ইত্যাদি। কিন্তু প্রায় কেউই তা মানছে না। এই না মানার বিষয়টি কেউ তদারকিও করছে না। মানুষের মধ্যেও সচেতনতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। অপ্রয়োজনে ঘোরাফেরা, আড্ডাবাজি পুরোদমেই চলছে। কমিউনিটি সেন্টার, বড় রেস্তোরাঁয় বিয়েশাদির ধুম লেগেছে। অতিথির সংখ্যাও অনেক বেশি। এ অবস্থায় করোনা সংক্রমণের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা দুনিয়ার অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, নতুন ঢেউ আগেরটির চেয়ে অনেক ভয়ংকররূপে ফিরে আসে। বাংলাদেশেও তাই হয়েছে। এখানে যদি তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়, তা হবে এত বেশি ভয়ংকর যে সংক্রমিতদের চিকিৎসা দেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।
যদিও টিকা সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দেয় না, তার পরও সরকার চেষ্টা করছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বেশির ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে। কিন্তু বিশ্বে টিকার যে রকম সংকট চলছে, তাতে সে লক্ষ্য অর্জনে আগামী বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। তার আগে পর্যন্ত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দিতেই হবে। এ কাজে প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে হবে।