যশোরে অখ্যাত অনলাইন পত্রিকা ও টিভির সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি!

0

তালাশ মাহমুদ ॥ যশোরে অখ্যাত অনলাইন পত্রিকা ও টিভির সাংবাদিক পরিচয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শতাধিক যুবক। এদের বেশিরভাগই বেপরোয়া। চাঁদাবাজিই যেন এদের মূল পেশা। অনেকের ধারণা, এরা মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। সাধারণ মানুষ এদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত দু বছর ধরে একশ্রেণির যুবকের আবির্ভাব ঘটেছে সাংবাদিক পরিচয়ে। দিন যাচ্ছে, এদের সংখ্যা বাড়ছে। এরা কারা? এদের পরিচয় কী? কেন তারা এই পেশায়? এমন নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ মানুষের মাঝে। ২০/২৫ বছর বয়সী এই যুবকরা বুক ফুলিয়ে ঘুরছে শহরময়। শহরতলীতেও রয়েছে এদের অবাধ বিচরণ। নামীদামি মোটরসাইকেল হাঁকিয়ে এরা ছুটছে ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানের কাছে। মনগড়া নানা অভিযোগ এবং প্রশাসনের সাথে তাদের দহরম-মহরম সম্পর্কের কথা তুলে ভড়কে দিচ্ছে ওই ব্যক্তিদের। এরপর টাকা দাবি। টাকা না দিলেই হুমকি-ধামকি। এদের বাড়ি শহর ও শহরতলীতে। উগ্র ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির এই যুবকরা নিজেদেরকে অনলাইন টিভি ও পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে। বিশেষ করে তাদের টিভিগুলোর নামের সাথে দেশের বেসরকারি জনপ্রিয় টিভি চ্যানেলগুলোর নামের প্রায় হুবহু মিল রয়েছে। যে কারণে সাধারণ মানুষ বুঝে উঠতে পারছেন ন্।া তারা ভাবছেন ওই যুবকরা হয়তো জনপ্রিয় টিভি চ্যানেলগুলোরই সাংবাদিক। ফলে তারা ঝুটঝামেলার ভয়ে যুবকদের হাতে নগদ কিছু ধরিয়ে দিয়ে নিজেকে রক্ষা করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দু’জন ব্যবসায়ী জানান, কতিপয় যুবক মোটরসাইকেল যোগে ভিডিও ক্যামেরা নিয়ে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যায়। তারা অনলাইন টিভির সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে উদ্ভট ও বানোয়াট কথাবার্তা বলতে থাকে। এতে ব্যবসায়ীরা হতবাক হন। এক পর্যায়ে যুবকরা টাকা দাবি করে। প্রথমে টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তারা হুমকি দেয়। পরে ঝুটঝামেলা এড়াতে তাদেরকে কিছু টাকা দিয়ে সন্তষ্ট করেন। যদিও শহরতলীর হাইকোর্ট মোড়ে এক ব্যবসায়ী তার প্রতিষ্ঠানে আটকে রেখে সাংবাদিক নামধারী কতিপয় যুবককে শিক্ষা দিয়েছেন। যুবকরা অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তার কাছে টাকা দাবি করেন। কী কারণে টাকা দিতে হবে? এমন প্রশ্ন করেই তিনি আটকে রাখেন যুবকদের। পরে হাতেপায়ে ধরে রক্ষা পায় ধান্ধাবাজ ওই যুবকরা। একাধিক সূত্র মতে, সাংবাদিক পরিচয় দেয়া যুবকদের অনেকেই মাদকাসক্ত। মাদক ব্যবসার সাথেও কেউ কেউ জড়িত। তারা ‘সাংবাদিকতা’ পেশাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহারের মাধ্যমে অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। অখ্যাত অনলাইন পত্রিকা ও টিভি সাংবাদিকের কার্ড ব্যবহার করে এরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সর্বত্র। এরা গ্রুপে গ্রুপে ভাগ হয়ে বিভিন্ন স্থানে হানা দেয় এবং অর্থবাণিজ্য করে। সাধারণ মানুষ এদের কাছে জিম্মি। ভুক্তভোগীরা এই চাঁদাবাজ, ধান্ধাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।