যশোর জেনারেল হাসপাতালে করোনা চিকিৎসায় আরও ৪০ শয্যা # সংক্রমণের হারে অক্সিজেন নিয়ে শংকা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যশোরে। ১৭ জনের মৃত্যুর একদিন পর আরও ১৬ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ সময়ে ৮২০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৮৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ফলে স্পষ্ট যে-সবাই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি না মানলে পরিস্থিতি আরও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। চলমান পরিস্থিতে রোগী বাড়তে থাকলে অক্সিজেন সংকটের আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা। এতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত এক সপ্তাহ জেলায় মৃত্যুর হার একই অবস্থায় চলছে। শনাক্তের হারও ঊর্ধ্বগতি। সোমবার (৫ জুলাই) যশোরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে আরও ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই মৃতদের মধ্যে আক্রান্ত হয়ে ৬ জন এবং উপসর্গ নিয়ে ১০ জন মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে, রোববার (০৪ জুলাই) আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে মারা গিয়েছিল ১৭ জন।
যশোর সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য কর্মকর্তা ডা. মো. রেহেনেওয়াজ বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার ৮২০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৮৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে যবিপ্রবির জিনোম সেন্টারে ৪৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৮৬ জন করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। খুলনা মেডিক্যাল কলেজে ৩ জনের নমুনা পরিক্ষা করে দুইজন, জিন অ্যাক্সপার্টের মাধ্যমে ১০ জনের নমুনা পরিক্ষা করে চার জনের এবং র‌্যাপিড এন্টিজেন টেস্টে ৩৬২ জনের নমুনা পরিক্ষা করে ৯৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের হার প্রায় ৩৫ ভাগ। এ নিয়ে জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা ১৭৫। জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৫১৮ জন, সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৪৬৯ জন বলে তিনি জানান।
এদিকে, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীর চাপ অব্যাহত রয়েছে। সোমবার এখানে ১৪০টি শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি রয়েছেন ২১২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় এখানে করোনায় ৬ জন ও করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১০ জন।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. আরিফ আহমেদ জানিয়েছেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৬ জন। এছাড়া উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। যশোর হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত রেডজোনে এখন ভর্তি আছেন ১২৬ জন। এখানে শয্যা সংখ্যা ১১৮। তবে করোনা রোগের উপসর্গ নিয়ে ইয়েলো জোনে ভর্তি রয়েছেন ৮৬ জন। এখানে শয্যা সংখ্যা মাত্র ২২। অর্থাৎ রেড ও ইয়েলো জোনে মোট ১৪০টি শয্যা থাকলেও রোগী ভর্তি রয়েছে ২১২ জন। হাসপাতালের চতুর্থ তলায় রেডজোনে ৪০টি শয্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। যে কোনো সময়ে এখানে নতুন রোগী তোলা হবে। আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফ বলেন, এখনও পর্যন্ত আমরা রোগীদের সাধ্যমত অক্সিজেন দিয়ে চলেছি। তবে সামনে রোগী বাড়লে কী পরিস্থিতি হবে তা বলা মুশকিল। তিনি বলেন, প্রতিদিন এমন এমন রোগী আসছে যাদেরকে হাইফ্লো অক্সিজেন দেয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকছে না।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান বলেন, সংক্রমণ চলমান কঠোর লকডাউন জেলাব্যাপী চলছে। শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলের মানুষ যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সে জন্য প্রশাসনের লোকজন কঠোর তদারকি করছেন। তিনি বলেন, সংক্রমণ রোধে এই মুহুর্তে সবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই।