চট্টগ্রামে চাল-তেল-পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে কমলেও প্রভাব পড়েনি খুচরা বাজারে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ চট্টগ্রামে পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ ব্যবসায়ীরা বলেছেন, গত কয়েকদিন দেশে হঠাৎ করেই পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গিয়েছিল। যার কারণে পাইকারী বাজারে দাম বেড়ে যায়। ৩৮ টাকা থেকে লাফিয়ে দাম বেড়ে কেজি ৬০ টাকা বিক্রি হয়েছিল। তবে সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে এখন পাইকারীতে ৩০ থেকে ৩৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরা বাজারে দাম এখনও ভালো মানের পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
রিয়াজউদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী মো. সেলিম বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা বন্ধ থাকায় সরবরাহ কমে যায়। সেই সঙ্গে ফরিদপুরের বাজারেও দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কম ছিল। যে কারণে হুট করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। তবে এখন সরবরাহ অনেকটাই ঠিক হয়ে গেছে। যে কারণে দাম কমেছে।
অন্যদিকে চালের দামেও কোন পরিবর্তন হয়নি খুচরা বাজারে। পাইকারী বাজারে প্রতি চালের ৫০ কেজির বস্তায় ২শ থেকে ২৫০ টাকা কলে আসলেও খুচরা বাজারে আড়ে দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। পাইকারী বাজারে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪শ টাকায়। এই চাল খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬শ টাকা করে।
খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পারি সিদ্ধ ৫২ টাকা, জিরাশাইল ও নাজিরশাইল ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আতপ চালের মধ্যে বেতি ৫০ টাকা, মিনিকেট ৬০ টাকা, পাইজাম ৬৫ থেকে ৭০ টাকা এবং কাটারিভোগ চাল ৭২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক নেতা শান্ত দাশ বলেন, পাইকারি বাজারে চালের গত সপ্তাহ থেকে কমছে। আমদানি বেশি থাকায় চালের দাম কমছে। এছাড়া দেশে বিভিন্ন স্থানে মিলে নতুন ধান ভাঙবে যার কারণে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে চালের দাম আরও কমতে পারে বলে তিনি জানান।
বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমতে থাকায় দেশের পাইকারি বাজারে তেলের দাম প্রতিমণে ২০০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে বৃহসম্পতিবার খোলা সয়াবিন বিক্রি হয়েছিল প্রতিমণ ৪ হাজার ৮৬০ টাকায়, শনিবার সেই খোলা সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৬২০ টাকায়। বৃহসম্পতিবার পাম অয়েল বিক্রি হয়েছিল ৪ হাজার ৪৬০ টাকা শনিবার সেই পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ২২০ টাকায়। বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতিলিটার ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের দাবি, দাম কমতে থাকায় এ বাজারের ভোজ্যতেল বেচাকেনায় যুক্ত ব্যবসায়ীরা কমবেশি লোকসান দিচ্ছেন।
এক সপ্তাহ ধরে বাজারের এই চিত্র দেখে হতাশ সোনামিয়া মার্কেটের এম হোসেন অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী মো. ইব্রাহিম। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের আগাম বেচাকেনায় দর কমতির দিকে। ফলে আগামী মাসে যেসব তেল আমদানিকারক কিনবে, তার দর বর্তমানের চেয়ে আরও কম। ইন্টারনেটে এটি দেখে ভয়ে যার কাছে যা আছে, তাই বিক্রি করে দিতে চাইছে। ফলে বেচাকেনা কমেছে। দামও পড়ছে দ্রুত।
তিনি জানান, ভোজ্যতেল বিপণনের প্রচলিত পদ্ধতি অনুযায়ী ভোজ্যতেল পরিশোধন কারখানার মালিকেরা ‘সরবরাহ আদেশ’ ছেড়ে বাজারে পামতেল ও সয়াবিন বিক্রি করেন। এই ‘সরবরাহ আদেশ’ কয়েক দফা হাতবদল হয় খাতুনগঞ্জের বাজারে। শেষ ধাপে এই সরবরাহ আদেশ নিয়ে কারখানা থেকে তেল সংগ্রহ করে নেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। পরে খুচরা ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে ভোক্তার কাছে পৌঁছায় খোলা সয়াবিন ও পামতেল।
এদিকে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা, আদা ১২০ টাকা, মোটা মশুর ডাল ৮০ টাকা, চিকন মশুর ডাল ১১০ টাকা, মটর ডাল ৭০ টাকা, ছোলা ৬০ টাকা, চিনি ৭০ থেকে ৭২ টাকায়।