ফার্মেসির দেয়া ভুল ওষুধে সংকটাপন্ন নবজাতক

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দোকান কর্মচারীর বিক্রি করা ভুল ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে এক নবজাতক। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আবিদ নামে এক মাস ৩দিন বয়সী এক শিশুকে গতকাল সকালে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভুল ওষুধ সেবন করার পর তার অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। আবিদ যশোর সদর উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের আক্তারুজ্জামানের ছেলে।
শিশুটির দাদি জোসনা বেগম জানিয়েছেন, গত ৭ জুন আবিদ অসুস্থ হলে তাকে দ্রুত হাসপাতালের বর্হিঃবিভাগে শিশু চিকিৎসকের কাছে নেয়া হয়। ডা. মো.জসীমউদ্দীন এ মাইসিন নামে একটি ড্রপ লিখে দেন। ব্যবস্থাপত্র নিয়ে জোসনা বেগম হাসপাতালের সামনে ঘোপ নওয়াপাড়া রোডস্থ জামান মেডিসিন এন্ড সার্জিক্যাল ফার্মেসিতে ওষুধ কিনতে যান। এ সময় দোকানের কর্মচারী রাব্বী ৬০ টাকা মূল্যের এ মাইসিন ড্রপ না দিয়ে তার পরিবর্তে এ মাইসিন লোশান নামে ৮৫ টাকা মূল্যের ওষুধ বিক্রি করেন। এ মাইসিন ড্রপ এন্টিবায়োটিক। পেটের ব্যথা হলে ১০ ফোটা করে খাওয়াতে হয়। আর এ মাইসিন লোশান মুখে মাখাতে হয়। এ মাইসিন ড্রপের পরিবর্তে এ মাইসিন লোশান দেয়ার পর নিরক্ষর জোসনা বেগম বাড়িতে গিয়ে শিশু আবিদকে ১০ ফোটা ওই লোশান খাওয়ান। এ লোশান খাওয়ার পর শিশুটি আরো অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তার শরীরে কম্পন্ন ওঠে এবং বার বার বমি করতে থাকে। এরপর ওষুধ ভুল কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আবিদের দাদা আকরাম হোসেন নিজে ওই লোশান মুখে দিয়ে পরীক্ষা করেন। তিনি মুখে দেয়ার পর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলে ওষুধটা যে ভুল ছিল সে সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হন। পরবর্তীতে মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় ভুল ওষুধ প্রয়োগের শিকার আবিদকে গতকাল সকালে তার স্বজনরা চিকিৎসার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেন।
জোসন বেগম জানিয়েছেন, শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর তিনি ওই ভুল ওষুধ জামান মেডিসিন এন্ড সার্জিক্যালে নিয়ে যান। তখন দোকানদার ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর সেখানে অনেক লোক জড়ো বলে স্থানীয় ওষুধ ব্যবসায়ীরা চলে আসেন। এসময় সেখানে সিদ্ধান্ত হয় ফার্মেসির মালিক তরিকুল ইসলাম শিশু আবিদের সমস্ত চিকিৎসা খরচ দেবেন। দোকানের কর্মচারী রাব্বী ফার্মাসিস্ট না হওয়ায় তিনি ভুল ওষুধ বিক্রি করেন বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে ফার্মেসির মালিক তরিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, এখানে কিছুই হয়নি। পরে পাশের ব্যবসায়ীরা আসলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।