করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত ফের বাড়ছে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নতুন রোগী শনাক্ত ও মৃত রোগীর সংখ্যা ফের বাড়ছে। গত ২৪ ঘন্টায় সরকারি ও বেসরকারি ৪৮৬টি ল্যাবরেটরিতে ১৬ হাজার ৬৪৩টি নমুনা সংগ্রহ ও ১৬ হাজার ৬২৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নতুন করে এক হাজার ৬৭৫ জন রোগী শনাক্ত হয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত বেশ কিছুদিন যাবত নমুনা পরীক্ষার হিসাবে রোগী শনাক্তের হার ছয় থেকে আট শতাংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টার হিসাবে শনাক্তের হার ১০ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আরও ৪০ জনের মৃত্যু হয়। সম্প্রতি করোনায় মৃতের সংখ্যা কমে ২০ এর ঘরে নেমে আসলেও গত দুদিন যাবত মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ঈদের আগে কয়েকদিন পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের জন্য হাজার হাজার মানুষ যেভাবে গাদাগাদি করে গ্রামে ফেরেন। তখনই রোগতত্ত্ব ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ঈদের এক-দুই সপ্তাহ পর থেকে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেন। তারা বলেছিলেন বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে করোনার সংক্রমণ বাড়বেই এতে কোনো সন্দেহ নেই। তারা ঈদের পর গ্রাম থেকে রয়েসয়ে ভিড় এড়িয়ে ফেরার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, উপসর্গ দেখা দিলে যেন চিকিৎসকের পরামর্শ ও নমুনা পরীক্ষা করান।
ঈদের পর গত শনিবার থেকে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহর সরব হয়ে উঠেছে। গ্রাম থেকে লোকজন জীবন ও জীবিকার তাগিদে আবারও শহরে ফিরে আসছেন। ফলে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি ও মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ও রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম মঙ্গলবার (২৫ মে) জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঈদের আগে যারা শহর ছেড়ে গিয়েছিলেন তারা ফিরতে শুরু করেছেন। তাদের অনেকেরই করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কম হচ্ছে। নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়লে শনাক্তের হার আরও বাড়বে। তা ছাড়া করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মৃতের সংখ্যাও ধীরে ধীরে বাড়ছে।’ তিনি বলেন, ‘করোনা শনাক্ত ও হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদানের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের সর্বাত্মক প্রস্তুতি রয়েছে। বর্তমানে সারাদেশে ৪৮৬টি ল্যাবরেটরি চালু রয়েছে। সারাদেশে প্রায় ১২ হাজার সাধারণ বেড ও এক হাজার ১৪৩টি আইসিইউ বেড রয়েছে। রাজধানীসহ সারাদেশে ২৩ হাজার ২১৭টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, দেড় হাজারের বেশি হাইফ্লোনাজেল ক্যানুলা এবং এক হাজার ৪৫১টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর রয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালের অধিকাংশ বেডই খালি।’ এই কর্মকর্তা বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এখনও অব্যাহত রয়েছে। করোনার সংক্রমণ রোধে চলমান টিকা কার্যক্রম প্রায় বন্ধ। এ অবস্থায় করোনার সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি (ঘরের বাইরে বের হলে সার্বক্ষণিক মাস্ক পরিধান, জনসমাগম ও ভিড় এড়িয়ে চলা, স্যানিটাইজার বা সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, জনসমাগম যতটা পারা যায় এড়িয়ে চলা) মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই।’