মধ্যরাতে কাদের মির্জা ও বাদলের পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ বসুরহাটের পৌর মেয়র, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল মধ্যরাতে পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। আবদুল কাদের মির্জা বিরোধী বলয়ের কয়েকজন নেতাকে কিলার উল্লেখ করে লিখেছেন, তার ছেলের উপর হামলাকারীদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি গ্রেফতার করা না হয় তাহলে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য তিনি দায়ী থাকবেন না। অপর দিকে মিজানুর রহমান বাদল লিখেছেন, আবদুল কাদের মির্জা এক্সিট চাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যাওয়ার জন্য। তিনি কাদের মির্জার সমর্থিত নেতা-কর্মীদের দ্রুত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানান। বুধবার দিবাগত রাত ১টায় কাদের মির্জা এবং ২টা ১৫ মিনিটে মিজানুর রহমান বাদল তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে স্ট্যাটাস দিয়ে এসব উল্লেখ করেন।
কাদের মির্জার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, আমার ছেলে তাশিক মির্জাকে তৎকালীন ওসি (তদন্ত) রবিউলের উপস্থিতিতে থানার সামনে সন্ত্রাসীরা পাইপগান দিয়ে পিটিয়ে মাথা পাটিয়ে চৌছির করে রক্তে রঞ্জিত করেছে। ওই সন্ত্রাসী হলো কিলার বাদল, কিলার রাহাত, কিলার আকরাম উদ্দিন সবুজ, কিলার রুমেল, কিলার রিমন, কিলার কচি ও কিলার মঞ্জু। তাদের নেতৃত্বে শতাধিক সন্ত্রাসী উপস্থিত ছিল। ওই দিন একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারকে সস্ত্রাসীরা হুমকি দিয়ে বলেছে, মির্জার ছেলেসহ তার কোনো লোককে চিকিৎসা দেয়া যাবে না। সন্ত্রাসীরা ডাক্তারদের অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে আমরা অন্য স্থান থেকে ডাক্তার এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। অন্য দিকে ওসি রনি ওই মুহূর্তে আমার অফিসে এসে আমার নেতা-কর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখে যেন কেউ বাইরে না যেতে পারে। আমার ছেলেকে আহত করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেফতার করা হয়নি। আমার ছেলেকে যারা রক্তাক্ত করেছে ওই সব সন্ত্রাসী আজ রাত (বুধবার) ১০টার সময় থানার সামনে এবং পুরা বাজারে অস্ত্র নিয়ে সু-সজ্জিত হয়ে অস্ত্র মহড়া দিচ্ছে। সন্ত্রাসীরা আমার নেতা-কর্মীদের মারার জন্য বাজারে অবস্থান নেয়। অথচ পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যারা আমার ছেলেকে রক্তাক্ত করেছে তাদের যদি গ্রেফতার করা না হয়। তাহলে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য আমি দায়ী থাকবো না। অপর দিকে মিজানুর রহমান বাদল কাদের মির্জার স্ট্যাটাসের বিপরীতে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, আকা (আব্দুল কাদের মির্জা) মির্জার এ পোস্ট থেকে আমি নিশ্চিত হলাম যে এখন এক্সিট চাচ্ছে পালিয়ে যাওয়ার জন্য। এ ছাড়া আবশ্য আর কোনো উপায়ও নেই। একটা অঘটন সে ঘটাবে, আর জেলে যাবে এবং সেখান থেকে মুক্তি নিয়ে সে যুক্তরাষ্ট্রে তার দ্বিতীয় আবাসস্থল সেখানে চলে যাবে। নতুবা তার সাথে থাকা যাদেরকে দিয়ে সে অপকর্ম করেছে তারা তো তাকে যেতে দিবে না, তাই আমি বলবো তোমরা দ্রুত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে আত্মসমার্পন কর। নতুবা গণরোষের শিকার হতে পার।
উল্লেখ্য, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ বর্তমানে দুটি ভাগে বিভক্ত। এক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পৌরমেয়র আবদুল কাদের মির্জা। অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধূরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল ও কাদের মিজার ভাগ্নে ফখরুল ইসলাম রাহাত, মাহবুবুর রশিদ মঞ্জুসহ কয়েকজন নেতা। গত পাঁচ মাসে কয়েকদফা সংঘর্ষে দু’জন নিহত এবং গুলিবিদ্ধসহ অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। উভয় গ্রুপের সভা সভাবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নেতারা একে অন্যকে আক্রমণ করে লাইভ ও স্ট্যাটাসে বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কোন্দল চরম আকার ধারণ করেছে।