বেনাপোলে করোনা শনাক্ত ১১ ভারত ফেরত পালিয়েছে যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে

0

বিএম আসাদ ॥ যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের কোভিড-১৯ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ভারত ফেরত ১১ রোগী পালিয়ে যাওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে আতংক। করোনা রোগী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা যশোরের সিভিল সার্জন ও হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জানেন না। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মো. ইউসুফ আলী জানিয়েছেন, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১ এপ্রিলথেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশের আসা যাত্রীদের ভেতর ২৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। আক্রান্তদের বেনাপোল থেকে চিকিৎসার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে তাদের এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোগীর দেখভাল করা এবং চিকিৎসা সেবার দায়িত্ব বর্তায় জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি ও যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উপর। কিন্তু কর্তৃপক্ষ জানেন না হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত ভারত ফেরত কতজন রোগী আছেন, তাদের অবস্থা কী এবং কতজন পালিয়ে গেছেন। পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা আদৌও পুলিশকে জানানো হয়নি।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ কুমার রায় গতকাল বলেন, ভারত থেকে দেশে ফিরে সীমান্তে করোনা শনাক্ত হওয়া কত জন হাসপাতালে ভর্তি বা চিকিৎসকের ছাড়পত্র ছাড়া পালিয়ে যাওয়ার খবর তার জানা নেই। রোগীরা কতটুকু চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছেন তাও তার জানা নেই। রোগীরা সরকারি ওষুধ পাচ্ছেন এ খবরটাই কেবল জানা আছে তার। আলাপের এক পর্যায়ে তিনি তিনজন রোগী চিকিৎসাধীন আছে বলে জানান।
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, করোনায় আক্রান্ত ভারত ফেরত যাত্রী যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেনÑএমন সংবাদ তিনি শুনেছেন। তবে তারা ভারতের ভয়ঙ্কর করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা তা তিনি জানেন না। ভারত থেকে করোনায় আক্রান্ত রোগীর শরীরে ‘ট্রিপল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্ট নেই’ এ কথা বলা যাবে না। কারণ তাদের পরীক্ষা করা হয়নি। সে ধরনের উন্নতমানের যন্ত্রও নেই। এসব রোগী পালিয়ে গেলে তাদের সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে সমাজে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে, এমন ধারণা অমূলক নয়।
ভারতে থেকে দেশে আসার পর বেনাপোলে করোনা শনাক্ত যাদের ২৩ এপ্রিল যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো তাদের ভেতর ৭ জন ওইদিন হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যান। ২৪ এপ্রিল তাদের ছাড়পত্র খাতায় পলাতক দেখানো হয়েছে। এসব পলাতক করোনা রোগীরা হলেন যশোর সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা (১৯), একরামের স্ত্রী রুমা (৩০), জালালউদ্দিনের পুত্র মমিন (৩২), ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের মনোতোষের স্ত্রী শেফালী রানী (৪২), যশোর শহরের পশ্চিম বারান্দীপাড়ার সালামত গাজী (৪৯), সদরের রামকান্তপুরের গোলাম রব্বানীর স্ত্রী নাসিমা (৫০), খুলনার পাইকগাছা উপজেলার জামরাইল গ্রামের আমিরুল (৫২)। রূপসা শের আলীর পুত্র সোহেল (১৭)।
২২ এপ্রিল ভর্তি হয়ে ২৩ এপ্রিল পালিয়ে যান যশোর শহরের বিমান অফিস মোড় এলাকার আবুল কাসেমের স্ত্রী ফাতেমা (৫৭), বাঘারপাড়ার উপজেলার রায়পুরের ফজের আলীর পুত্র সহিদুল ইসলাম (৪৫), ২০ এপ্রিল ভর্তি হয়ে ২১ এপ্রিল পালিয়ে যান। যশোর শহরের ভদ্র বিশ্বাসের পুত্র প্রদীপ বিশ্বাস (৩৭), খুলনা সদরের মৃত কলিম কৃষ্ণের পুত্র বিবেকানন্দ (৫২)। বিবেকানন্দ ১৮ এপ্রিল ভর্তি হয়ে ১৯ এপ্রিল পালিয়ে যান। সব মিলে ১১ জন পালিয়ে গেছেন যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল থেকে।