ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধিতে ফেসবুকের নতুন উদ্যোগ

    0

    লোকসমাজ ডেস্ক॥দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে উত্তর আমেরিকার সংযোগ স্থাপনে সমুদ্রের তলদেশে দুটি কেবল স্থাপন করতে যাচ্ছে ফেসবুক ও গুগল। আঞ্চলিক টেলিকম সংস্থার সঙ্গে পরিচালিত এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনেশিয়ায় উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান। খবর বিবিসি।
    এর আগে গুপ্তচরবৃত্তি প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হংকংয়ের সংযোগ স্থাপনে এ রকম তিনটি কেবল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিল ফেসবুক। তবে সেই প্রকল্প থেকে ফেসবুক সরে আসায় নতুন এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তবে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে জড়িত দেশগুলোর নিয়ন্ত্রক কমিটির অনুমোদন প্রয়োজন।
    ফেসবুকের নেটওয়ার্ক ইনভেস্টমেন্ট বিভাগের সহসভাপতি কেভিন সালভাদরি রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন, ইকো ও বাইফ্রস্ট নামের এ দুটি সংযোগ জাভা সাগর অতিক্রমের মধ্যে নতুন একটি সংযোগ রাস্তার সৃষ্টি করবে। এর ফলে ট্রান্স প্যাসিফিক এরিয়ায় সাবসি ক্যাপাসিটি ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এ কেবল সংযোগের মাধ্যমে নর্থ আমেরিকা ও ইন্দোনেশিয়ায় প্রথমবারের মতো সরাসরি সংযুক্ত হবে বলেও জানায় ফেসবুক।
    ফেসবুক জানায়, ইন্দোনেশিয়ার টেলিকম কোম্পানি এক্সএল এক্সিয়াটার সহযোগিতায় ২০২৩ সালের মধ্যে ইকোর কাজ সম্পন্ন করা হবে। এর এক বছর পর বাইফ্রস্টের কাজ সম্পন্ন করা হবে বলেও জানানো হয়। কেবল সংযোগটি সরাসরি মালয়েশিয়া থেকে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানের পাশাপাশি লিংকের মাধ্যমে অন্যান্য দেশের সঙ্গেও যুক্ত হবে।
    এ ব্যাপারে ফেসবুকের একজন মুখপাত্র জানান, এ কেবল সম্প্রসারণ প্রকল্পে আমাদের অংশগ্রহণ দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের পরিধি বিস্তৃতিতে সহযোগিতা করবে। সেই সঙ্গে ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, হংকং ও সিঙ্গাপুরে আমাদের যে বিপুল পরিমাণ ব্যবহারকারী রয়েছে, তারা ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরো ভালো অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন।
    ইন্টারনেটের ব্যবহার
    ইন্দোনেশিয়ান ইন্টারনেট প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশনের এক তথ্যমতে, ইন্দোনেশিয়ার ৭৩ শতাংশ জনগণ মোবাইল ডাটার মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন। অন্যদিকে মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন। গত বছর ইন্দোনেশিয়ার ২০টি শহরের পাবলিক ওয়াইফাই হটস্পটের মান বৃদ্ধিতে ৩০০০ কিলোমিটার ফাইবার স্থাপনের কথা জানিয়েছিল ফেসবুক। এছাড়াও ফেসবুক প্যাসিফিক লাইট কেবল নেটওয়ার্ক নিয়ে ভবিষ্যতে কাজ করবে বলেও জানান কেভিন সালভাদরি।
    তিনি আরো বলেন, সাধারণ জনগণের উদ্বেগের বিষয়ে জানার জন্য আমরা আমাদের অংশীদার এবং নিয়ন্ত্রকদের সঙ্গে কথা বলছি। সেই সঙ্গে এ সংযোগের মাধ্যমে যেন ওই অঞ্চলের মানুষ ভালো ইন্টারনেট সংযোগ পায় সেটাও লক্ষ্য করছি।
    আগের উদ্যোগগুলো
    ফেসবুক ও অ্যালফাবেটের অর্থায়নে গুগলের অন্যতম মূল সংস্থা পিএলসিএনের মূল লক্ষ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, হংকং ও ফিলিপাইনের মধ্যে সংযোগ স্থাপন। তবে গত বছর নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার কারণে এ প্রকল্প বাতিল হয়ে যায়। তবে ফেসবুক এখনো এ বিষয়ে কাজ করছে বলে নিশ্চিত করে।
    এর আগে সানফ্রান্সিসকোর সঙ্গে হংকংয়ের সংযোগ স্থাপনে ফেসবুক ও অ্যামাজনের আরো একটি চুক্তি গত বছর বাতিল হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্র এবং হংকংয়ের মধ্যে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ-সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে সমস্যা থাকায় চলতি মাসেই আরো একটি প্রকল্প বাতিল করে দিয়েছে ফেসবুক। তবে সরকারি নির্দেশনা ও নিয়ম অনুসারে পুনরায় এ প্রকল্প সাজানো হবে বলেও জানিয়েছে ফেসবুক।
    এর আগে ২০১২ সালে ১০ হাজার কিলোমিটার (৬২১৪ মাইল) এশিয়ান আন্ডার সি কেবল প্রকল্পে বিনিয়োগ করে ফেসবুক। এশিয়া প্যাসিফিক গেটওয়ের (এপিজি) প্রধান লক্ষ্য ছিল ওই অঞ্চলের নাগরিক এবং ব্যবসায়ীদের জন্য ইন্টারনেটের গতি উন্নত করা।