নতুন বার্সা সভাপতির সামনে ৬ চ্যালেঞ্জ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বার্সেলোনার নতুন সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা দ্বিতীয়বারের মত নির্বাচিত হওয়ার পরই ঘোষণা দিয়েছেন, তার সামনে বড় চ্যালেঞ্জ লিওনেল মেসিকে ধরে রাখা। এই চ্যালেঞ্জে লাপোর্তা কতটুকু বিজয়ী হতে পারেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়। মেসি কী বার্সায় থাকবেন নাকি চলে যাবেন, তার ওপরই নির্ভর করছে দ্বিতীয় মেয়াদে বার্সায় লাপোর্তার সাফল্য। তবে শুধুমাত্র মেসিকে ধরে রাখাই চ্যালেঞ্জ নয় লাপোর্তার সামনে। তার সামনে ৬টি বড় বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলো মোকাবেলা করতে হবে তাকে আগামী কিছুদিনের মধ্যেই।গত রোববার রাতেই নিশ্চিত হয়ে যায় লাপোর্তা আরও একবার বার্সার সভাপতি হদে যাচ্ছেন। ৫৪ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েছেন তিনি। পূনরায় তো সভাপতির আসনে বসে গেলেন লাপোর্তা। এখন তার কাজ কী হবে, সেটাই হলো আলোচ্য বিষয়। বার্সেলোনা বর্তমানে যে অবস্থায় দাঁড়িয়ে, তাতে কাতালান ক্লাবটিকে পুরোপুরি ঢেলে সাজাতে হবে লাপোর্তাকে।

আপাতত যে ছয়টি চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে বার্সার নতুন সভাপতি, সে ছয়টি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে-

লিওনেল মেসি
হুয়ান লাপোর্তার সামনে সবার আগে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে লিওনেল মেসিকে ধরে রাখা। নতুন চুক্তিতে আবদ্ধ করা। চলতি বছরের জুনেই বার্সার সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে মেসির। ক্লাবের সঙ্গে নতুন চুক্তিও করেননি তিনি। লাপোর্তা সভাপতি হওয়ার পর পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটে কি না সেটাই দেখার বিষয়।

jagonews24

কাঠামো ঠিক করা
মেসি ইস্যুর পর হুয়ান লাপোর্তার বড় একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে তার পরিচালনা পর্ষদের কাঠামো তৈরি করা। আগামী সময়টাতে তিনি কাদের নিয়ে ক্লাব পরিচালনা করবেন, কাদেরকে তিনি পথ চলার সঙ্গী বানাবেন, যাদের ওপর নির্ভর করবে ক্লাবের ভবিষ্যৎ, তাদের নির্বাচন করা। যথাসম্ভব বোঝাই যাচ্ছে, লাপোর্তা তার রানিং মেটদের তালিকা তৈরি করেই ফেলেছেন। মাতেও অ্যালেমানি হচ্ছেন তার ডান হাত। ধারণা করা হচ্ছে বার্সার পরবর্তী প্রধান নির্বাহী হতে যাচ্ছেন তিনি। এছাড়া জর্দি ক্রুয়েফ হতে পারেন বার্সেলোনার নতুন স্পোর্টিং ডিরেক্টর।

ট্রান্সফার মার্কেট
লাপোর্তার সামনে বড় একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আগামী মৌসুমের জন্য দলের পুরো অবয়ব ভেঙে নতুন কাঠামো তৈরি করা। যে কাঠামোর ওপর এখন বার্সেলোনা দল দাঁড়িয়ে, তা তাদের নামের সঙ্গে যায় না। এ কারণে আগামী দলবদলের মাধ্যমে যেন বার্সা হারানো গৌরব পূনরুদ্ধার করা যায়, সে চেষ্টা করা।jagonews24করোনা মহামারির পর ট্রান্সফার মার্কেট ম্যানেজ করা সবার জন্যই কঠিন। বার্সার জন্য আরও বেশি কঠিন। কারণ, তারা ভুগছে বিশাল আর্থিক সঙ্কটে। তারওপর তাদের ঘাড়ের ওপর রয়েছে খেলোয়াড়দের আকাশছোঁয়া পারিশ্রমিক। এ পরিস্থিতিতে আনসু ফাতি এবং ওসমান ডেম্বেলের সঙ্গে চুক্তি নবায়নের বিষয় আছে। একই সঙ্গে আগামী মৌসুমে কৌতিনহো এবং স্যামুয়েল উমতিতিকে বিক্রি করে দিতে পারে বার্সা। ফ্রি ট্রান্সফারে বার্সা পেতে পারে সার্জিও আগুয়েরোকে। কোচ রোনাল্ড কোম্যান আগামী মৌসুমের জন্য চাচ্ছেন, এরিক গার্সিয়া, জর্জিনিও উইজনালডাম এবং মেমপিস ডিফেকে ন্যু ক্যাম্পে নিয়ে আসার জন্য।

পরিচিত মুখ
অনেক বেশি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে বার্সেলোনার। অনেক বড় রথি-মহারথি খেলোয়াড় খেলে গেছেন এই ক্লাবের জার্সি গায়ে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বার্সার পরিচালনা পর্ষদের শীর্ষস্থানগুলোতে কোনো সাবেক তারকাকে দেখা যায় না। হোসে মারিয়া বার্তেম্যুর অধীনে কিছুদিন কাজ করেছেন ভিক্টর ভালদেজ। বার্তেম্যু তার সঙ্গে কাজ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন কার্লোস পুয়োলকেও। তবে পুয়োল তাকে ‘না’ বলে দিয়েছিলেন। এরপর আর কেউই ছিলেন বার্সার উচ্ছ পর্যায়ে।jagonews24ঋণ
বার্সেলোনা ক্লাবের ওপর ঋণের বিশাল বোঝা। প্রায় ১ বিলিয়ন ইউরোর (প্রায় ১০ হাজার ৯০ কোটি টাকা) ওপর ঋণী মেসিদের ক্লাব। এর মধ্যে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো রয়েছে, যেগুলো সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য। এই সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার জন্য খুব দ্রুত ফান্ড সংগ্রহ করতে হবে বার্সেলোনাকে। বিশেষ করে স্পন্সর, আরও বেশি সদস্য তৈরি করে এবং জার্সি বিক্রি করে। একই সঙ্গে ফুটবলার পারিশ্রমিকও নতুনভাবে সমন্বয় করতে হবে।

ডেভেলেপমেন্ট প্রজেক্ট
হোসে মারিয়া বার্তেম্যু এমন কিছু প্রজেক্ট শুরু করেছিলেন, যেগুলো মনে হচ্ছিল যেন কখনোই শেষ হবে না। যদিও, এগুলোকে আর খুব বেশিদিন লম্বা করা ঠিক হবে না। লাপোর্তা বলেই দিয়েছেন যে, ‘বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, কোনো কিছুই আমাদের বিচলিত করতে পারবে না। বরঙ, তারা আমাদের আরও উদ্দীপিত করে তুলেছে।’ লাপোর্তা একই সঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদসহ লা লিগার বেশ কয়েকটি ক্লাবের স্টেডিয়াম পূণঃনির্মাণ এবং সংস্কারে বিষয়গুলোও উল্লেখ করেন। এবং জানিয়ে দেন, তাদের ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট ২০২৪ সালের বেশি যাওয়া কোনোমতেই ঠিক হবে না। ওই বছর আবার বার্সার ১২৫তম প্রতিষ্ঠাবর্ষিকী।