পাইকারিতে চিনির দাম বেড়েছে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে চাহিদা বৃদ্ধি ও আসন্ন রমজান মাস সামনে রেখে বাড়ছে চিনির দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মণে পণ্যটির দাম বেড়েছে ১২০ টাকা। রোজার মধ্যে চাহিদা বেড়ে গেলে দাম আরো বাড়তে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম কাস্টমসের দেয়া তথ্যমতে, গত এক বছরে দেশে চিনির দাম প্রতি মণে ৫০০ টাকা বেড়েছে।
দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুদিন আগেও মণপ্রতি চিনি বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২৭০ টাকায়। গতকাল একই মানের চিনি বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৩৯০ টাকায়। ডিলারদের নিষ্ক্রিয়তা, টিসিবির মাধ্যমে চিনি বিক্রির পরিমাণ কমে যাওয়া এবং ডিলার-বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানের কাছে সরকারি চিনি বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বেসরকারি মিলগুলো চিনির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তাছাড়া আসন্ন রমজান সামনে রেখে বেসরকারি মিলগুলোতে পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় প্রতিদিনই বাড়ছে চিনির দাম। রমজান উপলক্ষে অসাধু ব্যবসায়ীরা চিনি মজুদ করে রাখছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্যে দেখা গেছে, সর্বশেষ জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে (জুলাই থেকে জানুয়ারি) দেশে বেসরকারি খাতে চিনি আমদানি হয়েছে ৬০ হাজার ৩৩১ টন, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ হাজার ৬৩৫ টন বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে ৫৭ হাজার ৬৯৫ টন চিনি আমদানি হয়েছিল ২২০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায়। অথচ চলতি অর্থ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে ৬০ হাজার ৩৩১ টন চিনি আমদানিতে ২২৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। সে হিসেবে গত এক বছরে দেশে চিনির দাম মণপ্রতি বেড়ে গেছে প্রায় ৫০০ টাকা। সরকারি চিনির দাম কেজিপ্রতি ৬০ টাকা হলেও বর্তমানে বেসরকারি চিনির কেজিপ্রতি পাইকারি দাম ৬৪ টাকা। মূলত সরকারি চিনির দাম কম থাকলেও বেসরকারি চিনির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিএসএফআইসির বিক্রয় বিভাগ ডিলার-বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে অন্যায্যভাবে চিনি বিক্রি করে সুবিধা নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে ডিলার ব্যবসায়ীদের।
বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনি শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি) সূত্রে জানা গেছে, সরকার চলতি মৌসুমে ছয়টি চিনিকলের উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। ১ মার্চ পর্যন্ত বাকি নয়টি চিনিকলে মোট উৎপাদন হয়েছে ৪১ হাজার ৬৪৮ দশমিক ৬০ টন চিনি। এছাড়া আগের মজুদ ছিল ৫৬ হাজার ৩০ দশমিক ৯১ টন। ১ মার্চ পর্যন্ত ফ্রি সেল, ডিলার ও সরকারি সংস্থার কাছে চিনি বিক্রি করা হয়েছে মোট ৪৮ হাজার ৮৮৩ টন। সব মিলিয়ে সংস্থাটির কাছে বর্তমানে চিনির মজুদ আছে মাত্র ৪৮ হাজার ৭৯৬ দশমিক ৪৯ টন। এর মধ্যে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও মিলস রেশনের জন্য সংরক্ষিত আছে ১০ হাজার ৭৯৮ টন চিনি। সব মিলিয়ে চিনি শিল্প করপোরেশনের বিক্রয়যোগ্য চিনির মজুদ নেমে দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৯৯৮ টনে, যা সার্বিকভাবে দেশে চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে খুবই অপ্রতুল বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
বিএসএফআইসির প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দেশে চিনির চাহিদা গড়ে ১৫-১৭ লাখ টন। এর মধ্যে সরকারি মিল ও সরকারি ব্যবস্থাপনায় আমদানীকৃত চিনিসহ দেড়-আড়াই লাখ টন চিনি সরবরাহ করে বিএসএফআইসি। কিন্তু ছয়টি সরকারি মিল বন্ধ থাকার পাশাপাশি আমদানি না হওয়ায় দেশে চিনির চাহিদার প্রায় ৯০ শতাংশের বেশি বেসরকারি মিল মালিকদের নিয়ন্ত্রণে। তাছাড়া বিএসএফআইসির নিজস্ব প্রায় চার হাজার ডিলারের কাছে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দেশের পাইকারি ও খোলাবাজারে দাম বাড়ছে।
বাংলাদেশ চিনি ডিলার ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশে কয়েক হাজার ডিলার থাকলেও তারা চাহিদামতো চিনি পাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে ডিলাররা লোকসানে থাকলেও বর্তমানে দেশে চিনি সরবরাহ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকারি চিনি মিলগুলোর উৎপাদন কমে যাওয়া, চিনিকল বন্ধ হয়ে যাওয়ার গুজব ছাড়াও ডিলার-বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানের কাছে চিনি বিক্রির কারণে দেশে চিনির দাম নিয়ে নতুন অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
লোকসমাজ ডেস্ক॥ গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে চাহিদা বৃদ্ধি ও আসন্ন রমজান মাস সামনে রেখে বাড়ছে চিনির দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মণে পণ্যটির দাম বেড়েছে ১২০ টাকা। রোজার মধ্যে চাহিদা বেড়ে গেলে দাম আরো বাড়তে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম কাস্টমসের দেয়া তথ্যমতে, গত এক বছরে দেশে চিনির দাম প্রতি মণে ৫০০ টাকা বেড়েছে।
দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুদিন আগেও মণপ্রতি চিনি বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২৭০ টাকায়। গতকাল একই মানের চিনি বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৩৯০ টাকায়। ডিলারদের নিষ্ক্রিয়তা, টিসিবির মাধ্যমে চিনি বিক্রির পরিমাণ কমে যাওয়া এবং ডিলার-বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানের কাছে সরকারি চিনি বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বেসরকারি মিলগুলো চিনির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তাছাড়া আসন্ন রমজান সামনে রেখে বেসরকারি মিলগুলোতে পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় প্রতিদিনই বাড়ছে চিনির দাম। রমজান উপলক্ষে অসাধু ব্যবসায়ীরা চিনি মজুদ করে রাখছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্যে দেখা গেছে, সর্বশেষ জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে (জুলাই থেকে জানুয়ারি) দেশে বেসরকারি খাতে চিনি আমদানি হয়েছে ৬০ হাজার ৩৩১ টন, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ হাজার ৬৩৫ টন বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে ৫৭ হাজার ৬৯৫ টন চিনি আমদানি হয়েছিল ২২০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায়। অথচ চলতি অর্থ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে ৬০ হাজার ৩৩১ টন চিনি আমদানিতে ২২৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। সে হিসেবে গত এক বছরে দেশে চিনির দাম মণপ্রতি বেড়ে গেছে প্রায় ৫০০ টাকা। সরকারি চিনির দাম কেজিপ্রতি ৬০ টাকা হলেও বর্তমানে বেসরকারি চিনির কেজিপ্রতি পাইকারি দাম ৬৪ টাকা। মূলত সরকারি চিনির দাম কম থাকলেও বেসরকারি চিনির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিএসএফআইসির বিক্রয় বিভাগ ডিলার-বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে অন্যায্যভাবে চিনি বিক্রি করে সুবিধা নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে ডিলার ব্যবসায়ীদের।
বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনি শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি) সূত্রে জানা গেছে, সরকার চলতি মৌসুমে ছয়টি চিনিকলের উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। ১ মার্চ পর্যন্ত বাকি নয়টি চিনিকলে মোট উৎপাদন হয়েছে ৪১ হাজার ৬৪৮ দশমিক ৬০ টন চিনি। এছাড়া আগের মজুদ ছিল ৫৬ হাজার ৩০ দশমিক ৯১ টন। ১ মার্চ পর্যন্ত ফ্রি সেল, ডিলার ও সরকারি সংস্থার কাছে চিনি বিক্রি করা হয়েছে মোট ৪৮ হাজার ৮৮৩ টন। সব মিলিয়ে সংস্থাটির কাছে বর্তমানে চিনির মজুদ আছে মাত্র ৪৮ হাজার ৭৯৬ দশমিক ৪৯ টন। এর মধ্যে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও মিলস রেশনের জন্য সংরক্ষিত আছে ১০ হাজার ৭৯৮ টন চিনি। সব মিলিয়ে চিনি শিল্প করপোরেশনের বিক্রয়যোগ্য চিনির মজুদ নেমে দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৯৯৮ টনে, যা সার্বিকভাবে দেশে চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে খুবই অপ্রতুল বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
বিএসএফআইসির প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দেশে চিনির চাহিদা গড়ে ১৫-১৭ লাখ টন। এর মধ্যে সরকারি মিল ও সরকারি ব্যবস্থাপনায় আমদানীকৃত চিনিসহ দেড়-আড়াই লাখ টন চিনি সরবরাহ করে বিএসএফআইসি। কিন্তু ছয়টি সরকারি মিল বন্ধ থাকার পাশাপাশি আমদানি না হওয়ায় দেশে চিনির চাহিদার প্রায় ৯০ শতাংশের বেশি বেসরকারি মিল মালিকদের নিয়ন্ত্রণে। তাছাড়া বিএসএফআইসির নিজস্ব প্রায় চার হাজার ডিলারের কাছে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দেশের পাইকারি ও খোলাবাজারে দাম বাড়ছে।
বাংলাদেশ চিনি ডিলার ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশে কয়েক হাজার ডিলার থাকলেও তারা চাহিদামতো চিনি পাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে ডিলাররা লোকসানে থাকলেও বর্তমানে দেশে চিনি সরবরাহ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকারি চিনি মিলগুলোর উৎপাদন কমে যাওয়া, চিনিকল বন্ধ হয়ে যাওয়ার গুজব ছাড়াও ডিলার-বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানের কাছে চিনি বিক্রির কারণে দেশে চিনির দাম নিয়ে নতুন অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।