আন্তর্জাতিক সংবাদ

0

লাদাখ সীমান্ত থেকে সৈন্য সরাতে ভারত-চীন সমঝোতা
লোকসমাজ ডেস্ক॥ লাদাখের প্যাংগং লেকের উত্তর ও দণি থেকে সেনা সরিয়ে আগের অবস্থানে ফিরে যেতে সম্মত হয়েছে ভারত ও চীন। বিবদমান দুই প থেকেই এ বিষয়ে ঘোষণা এসেছে। ডয়চে ভেলে জানায়, হ্রদের উত্তরের তীর থেকে চীনের সেনা পূর্ব দিকে নিজেদের স্থায়ী শিবিরে যাবে। ভারতের সেনাও ফিঙ্গার পয়েন্ট চার থেকে সরে গিয়ে স্থায়ী শিবিরে ফিরে যাবে। তবে সেনা সরবে পর্যায়ক্রমে। এর ফিঙ্গার পয়েন্ট চার থেকে আট পর্যন্ত কারো অধিকারে থাকবে না। পেট্রোলিং এখন বন্ধ থাকবে। ভারতের সংসদে সমঝোতার ঘোষণা দেন দেশটির প্রতিরামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তার দেশ এক ইঞ্চি জমিও হারায়নি উল্লেখ করে জানান, আলোচনা চলতে থাকবে। আরও কিছু বিষয়ের সমঝোতা হওয়ার বাকি। ভারত জানিয়ে দিয়েছে, দুই পকে এলএসি মানতে হবে, কেউ একতরফা কোনো পরিবর্তন করতে পারবে না এবং কোনো জমি দখল করতে পারবে না। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুই দেশের সেনা কর্মকর্তারা আবার আলোচনায় বসে বাকি বিষয়ে সমঝোতায় আসার চেষ্টা করবেন। এ দিকে চীনের প্রতিরা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুই দেশের কোর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে সেনা সরানো নিয়ে মতৈক্য হয়েছে। আরও বলা হয়, দুই সরকারের সম্মতিতে যে মাপদণ্ড তৈরি হয়েছিল তা মেনেই প্যাংগং থেকে সেনা সরানো নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। বুধবারও বৈঠক হয়েছে। তবে এখনো সেনা সরানোর কাজ শুরু হয়নি। সেনা ও কামান সরাতে কয়েক দিন সময় লাগে। তাই অন্তত তিন-চার দিন সময় লাগবেই। আর আলোচনায় এক সপ্তাহ থেকে দশদিনের মধ্যে সেনা সরানোর কাজ শুরু হবে বলে ঠিক হয়েছে। গত বছরের মাঝামাঝিতে লাদাখে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি হয়। নিহতও হয় কয়েক জন। উত্তেজনার জেরে সেখানে দুই পই হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করে।

‘ভুয়া এভারেস্ট জয়ে’ নেপালে নিষিদ্ধ ২ ভারতীয় পর্বতারোহী
লোকসমাজ ডেস্ক॥ এভারেস্ট জয়ের দাবি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় ভারতের দুই পর্বতারোহীকে নিষিদ্ধ করেছে নেপাল কর্তৃপ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর দিয়েছে। ২০১৬ সালে মাউন্ট এভারেস্টে চড়েন নরেন্দ্র সিং যাদব এবং সীমা রানি গোস্বামী নামে দুই পর্বতারোহী। এভারেস্ট বিজেতা হিসেবে নেপালের টুরিজম বিভাগ থেকে সার্টিফিকেটও পান তারা। এরপর যাদব একটি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন, এর জন্য তার কাছে এভারেস্ট জয়ের প্রয়োজনীয় প্রমাণ চাওয়া হয়। কিন্তু তা দেখাতে ব্যর্থ হন তিনি। তখন যাদব ও তার সঙ্গী সীমা রানির এভারেস্ট অভিযান নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়। এ নিয়ে তদন্তে নামে নেপাল কর্তৃপ। অনুসন্ধানে দেখা যায়, এ দুই ভারতীয় পর্বতারোহীর এভারেস্ট জয় ছিল ভুয়া। যার জেরে, বুধবার ৬ বছরের জন্য নেপালে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাদের। সেই অভিযানের টিম লিডারকেও একই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এ ঘোষণার পর দুই পর্বতারোহীর তাৎণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এভারেস্ট বিজেতাদের জন্য সম্মানজনক পুরস্কার তেনজিং নোরগে অ্যাডভেঞ্চার অ্যাওয়ার্ডের জন্য গত বছর মনোনীত হয়েছিলেন যাদব। পর্বতারোহী তেনজিং নোরগে একজন নেপালি শেরপা। তিনি এবং এডমন্ড হিলারি ১৯৫৩ সালে যৌথভাবে সর্বপ্রথম পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট জয় করেন।

অভিশংসন: ট্রাম্পকে ‘প্রধান উসকানিদাতা’ বলছে ডেমোক্র্যাটরা
লোকসমাজ ডেস্ক॥ যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসন বিতর্ক শুরু হয়েছে। ডেমোক্র্যাটরা তাকে ‘প্রধান উসকানিদাতা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের অভিযোগ হলো, ট্রাম্প প্রথমে ভোট জালিয়াতি নিয়ে সুর চড়িয়েছিলেন। তার ওই অভিযোগ ছিল পুরোপুরি মিথ্যা। তারপর তিনি ক্যাপিটলে যাওয়ার জন্য সমর্থকদের উসকেছেন। ভোট জালিয়াতির কথা শুনে সমর্থকেরা উত্তেজিত ছিলেনই। তার সঙ্গে যোগ হয়েছিল উসকানি। তার ফলে ক্যাপিটল-কাণ্ড হয়েছিল। ডয়চে ভেলে এক প্রতিবেদনে জানায়, সাবেক প্রেসিডেন্টের অ্যাটর্নি ও ইমপিচমেন্ট ম্যানেজাররা কথা বলার জন্য ১৬ ঘণ্টা সময় পাবেন। দুই দিন ধরে তারা ট্রাম্পের সমর্থনে যাবতীয় যুক্তি দেবেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একটাই অভিযোগ, তিনি সমর্থকদের উসকানি দিয়েছিলেন, তার ফলে ক্যাপিটলের ঘটনা ঘটেছে। বিতর্কের সূচনা করে ডেমোক্র্যাট সদস্য জেমি রাসকিন বলেন, ট্রাম্পের এই বিচার হলো আমেরিকার জন্য ‘সত্য প্রতিষ্ঠার মুহূর্ত’। ট্রাম্পের অ্যাটর্নিদের দাবি ছিল, সাবেক প্রেসিডেন্ট কোনোভাবে সমর্থকদের উসকানি দেননি। কিন্তু রাসকিন বলেন, তথ্যপ্রমাণ দেখিয়ে দেবে, এই ঘটনায় ট্রাম্পের ভূমিকা কী ছিল। তিনি ‘কমান্ডার ইন চিফ’-এর বদলে ‘ইনসাইটার ইন চিফ’ বা প্রধান উসকানিদাতায় পরিণত হন। ট্রাম্পের একের পর এক টুইট উদ্ধৃত করে রাসকিন দেখানোর চেষ্টা করেন, তার অ্যাটর্নিরা যা বলছেন ঠিক নয়। ট্রাম্পের একটি টুইটে বলা হয়েছিল, ‘বি দেয়ার, উইল বি ওয়াইল্ড’। রাসকিনের দাবি, এসবই দেখিয়ে দিচ্ছে, ক্যাপিটলের ঘটনায় ট্রাম্পের ভূমিকা কতটুকু। ডেমোক্র্যাট সদস্য জো নেগুসে জানিয়েছেন, তার দলের যে সদস্যরা ইমপিচমেন্ট-ভাষণ দেবেন, তারা এটা দেখাতে পারবেন যে, ট্রাম্পের উসকানির ফলেই তার সমর্থকেরা ক্যাপিটলে তাণ্ডব করেছিল। বারবার জালিয়াতির কথা বলে, ট্রাম্প আগে থেকেই তাদের উত্তেজিত করে রেখেছিলেন। ভার্জিনিয়ার ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি স্ট্র্যাসি প্ল্যাসকেট জানান, ট্রাম্প আগে থেকেই সব বুঝতে পেরেছিলেন। তারপরেও ইচ্ছা করে উসকানি দেন। তিনি সহিংসতার আবহ তৈরি করেন, তারপর সমর্থকেরা সহিংস হয়েছে। ক্যাপিটল-তাণ্ডবের দিন সিকিউরিটি ক্যামেরায় ধরা পড়া ফুটেজও প্রকাশ করেছেন প্ল্যাসকেট। সেখানে দেখা যাচ্ছে, প্রাউড বয়জের বেশ কিছু সদস্য ক্যাপিটলে ঢুকে জানলার কাচ ভাঙছে। তারপর তারা করিডরে ঢুকছে। তারা রীদের হটিয়ে দিচ্ছে। ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এবং অন্যদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আর দাঙ্গাকারীরা চিৎকার করছে, ‘মাইক পেন্সকে মার’, ‘ন্যান্সি পেলোসিসহ যাকে হাতের কাছে পাব, তাকেই মারব’। প্ল্যাসকেটের বক্তব্য, ট্রাম্প এই সব করার জন্যই সমর্থকদের পাঠিয়েছিলেন। দাঙ্গাকারীরা পেলোসিকে বিশেষ করে খুঁজছিল। তার অফিসে ঢুকে তারা ভাঙচুর করে। একজনের হাতে ছড়ির মতো অস্ত্র ছিল। হাউসের সদস্যরা যখন নিরাপদ জায়গায় যাচ্ছিলেন, তখনই দাঙ্গাকারীরা হাউসে ঢুকে পড়ে । মিনিটখানেক আগে তারা ঢুকতে পারলেই ভয়ংকর অবস্থা হতো। ক্যাপিটলের ওই দাঙ্গায় তিনজন অফিসার মারা যান, আহত হন ১৪০ জন।