সুন্দরবনে বেড়েছে অবৈধ শিকারী ও চামড়া পাচারকারীদের তৎপরতা

0

আলী আকবর টুটুল,বাগেরহাট ॥ সুন্দরবনে আবারও তৎপর হয়ে উঠেছে শিকারী ও পাচারকারী চক্র। গত বছরের এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত বন বিভাগের হাতে আটক হয়েছে ৩৭ জন শিকারী। উদ্ধার করা হয়েছে শতাধিক হরিণ ও ১৯টি বাঘের চামড়া। জীব বৈচিত্রে সমৃদ্ধ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ইকোসিস্টেম সুন্দরবন। বাঘ-হরিণের বাস এই সুন্দরবনে কিছু অসাধু মানুষ সুদীর্ঘকাল ধরে হরিণ শিকার করে আসছে। বনবিভাগ, কোস্টগার্ড, র‌্যাব , পুলিশের নিয়মিত অভিযান চলমান থাকলেও দৌরাত্ম্য কমছে না চোরাশিকারীদের।


বনবিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে করোনা ভাইরাসের সময়েও সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগ ২১৫ কেজি ৮শ গ্রাম হরিণের মাংস, দুটি হরিণের চামড়া, একটি হরিণের শিং, ৬টি হরিণের মাথা, ২৪টি হরিণের পা উদ্ধার করে। এসব অপরাধের জন্য ৩২ জনকে আটকও করে বনবিভাগ। সঙ্গে ৬টি ট্রলার, ১৬টি নৌকা ও ১১ হাজার ৩৩৩ ফুট হরিণ শিকারের ফাঁদ জব্দ করে বনবিভাগ। এর বাইরে পুলিশ ও কোস্টগার্ডের অভিযানেও উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ হরিণের মাংস, মাথা ও চামড়া। চলতি বছর মাত্র ৩৫ দিনে বনবিভাগ ৪০ কেজি হরিণের মাংস, একটি বাঘের চামড়া ও ৪ হাজার ৯৫০ ফুট হরিণের ফাঁদ জব্দ করে। পুলিশ ১৯টি হরিণের চামড়া, ৩টি মাথা ও ৪২ কেজি হরিণের মাংস উদ্ধার করে। এসবের সঙ্গে চোরাশিকারীরা আটক হলেও বের হয়ে যায় আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে।
সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সুন্দরবনে বাঘ-হরিণ হত্যার বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। হরিণের মাংস, হরিণের চামড়া ও বাঘের চামড়া উদ্ধার হচ্ছে। একটি অসাধু চক্র এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে। এর পেছনে গডফাদারের পাশাপাশি বনবিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে। এদের অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে। বনরীদের টহল বাড়াতে হবে। লোকালয় সংলগ্ন বনে কাঁটাতারে বেড়া দিতে হবে। এখনই যদি বাঘ ও হরিণ শিকার বন্ধ না করা যায় তাহলে সুন্দরবন থেকে বাঘের অস্তিত বিলীন হয়ে যাবে। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মাদ বেলায়েত হোসেন বলেন, সুন্দরবন রায় বন বিভাগের পাশাপাশি পুলিশ, র‌্যাব, কোস্টগার্ড কাজ করে যাচ্ছে। সুন্দরবনের অপরাধের সঙ্গে বন কর্মকর্তা ও বনরীরা জড়িত রয়েছে এসব অভিযোগের বিষয়ে ডিএফও বলেন, আমরা দুই চার জনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ পেয়েছি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় বলেন, জেলা পুলিশ বাগেরহাট সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী রায় অভিযান চালু করেছে। আমরা অপরাধ দমনের পাশাপাশি সুন্দরবন এলাকায় জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমও চালু রেখেছি।