শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ : কাজে ভোগাচ্ছে পরিত্যক্ত বোমা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজের গতিতে বাগড়া দিচ্ছে ‘পরিত্যক্ত বোমা’। প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন হওয়ার পর শুরু থেকেই খুব দ্রুত গতিতে চলছিল প্রকল্পের কাজ। কিন্তু দুই দফায় ২৫০ কেজি ওজনের বোমা উদ্ধারের পর গোটা প্রকল্পের কাজে ছন্দপতন ঘটেছে। প্রকল্প এলাকায় পাইলিং করার জন্য মাটি খুঁড়তে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৫টি বোমা পাওয়া গেছে। বোমাগুলো বিস্ফোরণ না ঘটলেও শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এজন্য পুরো প্রকল্পে কাজের গতি কমে এসেছে। তবে বোমা উদ্ধারের পর শ্রমিকরা অনেকটা সতর্ক হয়ে কাজ করছেন। মাটি খোঁড়ার আগে ওই স্থানটি প্রথমে স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। এরপর সেখান থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে মাটি। কর্তৃপক্ষ বলছে, বোমাগুলো পুরনো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অথবা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কার হতে পারে। সেগুলো বিস্ফোরণ হওয়ার আশঙ্কা কম। তার পরও কর্তৃপক্ষ সতর্ক রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক একেএম মাকসুদুল ইসলাম জানান, ‘মাটি খোঁড়ার আগে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে স্থানটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা করার পরও সতর্কভাবে মাটি খোঁড়া হচ্ছে। কাজের গতি আগের চেয়ে বেড়েছে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শ্রমিক জানান, ‘বোমা উদ্ধারের পর শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারা নিজেরা বোমাগুলো পুরনো বলে দেখেছেন।’
তৃতীয় টার্মিনালের প্রকল্পের একাধিক কর্মকর্তা এবং নির্মাণ শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৯ই ডিসেম্বর সকালে মাটি খোঁড়ার সময় ২৫০ কেজি ওজনের একটি বোমা দেখতে পায় কর্মরত শ্রমিকরা। এরপর গত ১৪ই ডিসেম্বর আরেকটি বোমা পান তারা। পরে বোমাটি বিমানবাহিনীর একটি দল নিষ্ক্রিয় করে সেখান থেকে নিয়ে যায়। বোমাগুলো অনেক পুরনো। বোমাগুলো প্র্যতেকটিই একই ধরনের এবং একই স্থানে তৈরি করা হয়েছে। দু’টি বোমার প্রত্যেকটিই মাটির নিচে থাকার কারণে জং ধরে গেয়েছিল। সূত্র জানায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যেখানে তৃতীয় টার্মিনালে নির্মাণকাজ চলছিল সেখানকার দক্ষিণ ও পূর্ব প্রান্ত জুড়ে এক সময় ছিল বিশাল খাল। স্বাধীনতার পর সেখানে গড়ে উঠে বিশেষ ধরনের বাগান। যা সরকারের বনবিভাগ তদারকি করতো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালে ক্যান্টনমেন্টে বিমানবাহিনীর একটি বেজ এয়ারপোর্ট ছিল। ছোট একটি ক্যাম্পও ছিল। কর্তৃপক্ষের ধারণা, বেজ এয়ারপোর্ট, সেনাক্যাম্প এবং বাগান দেখে প্রতিপক্ষরা বিমান থেকে বোমাগুলো ফেলেছিল। কিন্তু সেখানকার মাটি নরম হওয়ার কারণে দ্রুত বোমাগুলো মাটির ভেতরে চলে যায়। এদিকে, প্রকল্প এলাকায় আরো বোমা থাকতে পারে এমন শঙ্কায় পুরো এলাকা স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিমানবাহিনীর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে।