৫ মাসে ৬৭২ কোটি টাকার পণ্য রফতানি

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে গত পাঁচ মাসে ৬৭২ কোটি টাকা মূল্যের ৮৬ হাজার টন বাংলাদেশী পণ্য ভারতে রফতানি হয়েছে। তবে গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ২৫ শতাংশের মতো রফতানি কমেছে।
ভোমরা শুল্কস্টেশনের রাজস্ব শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) এ বন্দর দিয়ে ৮৬ হাজার ১৫৭ দশমিক ৪২০ টন বিভিন্ন প্রকার পণ্য রফতানি হয়েছে। যা থেকে রফতানি আয় এসেছে ৬৭২ কোটি ৯০ লাখ ২১ হাজার ৩৫১ টাকা।
এ সময়ে ভারতের বাজারে রফতানি হওয়া পণ্যের মধ্যে রাইস ব্র্যান অয়েল, ক্লিনিক ক্লথ, পাটের সুতা, পাটের চট, গার্মেন্টস বর্জ্য, নারকেল শলা, মধু, প্রাণের জুস, লিচু ড্রিংকস, প্রাণের চানাচুর ও চিপচ অন্যতম।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে এ বন্দর দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রফতানি হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৩৬ দশমিক ৯৭২ টন, যা থেকে রফতানি আয় আসে ৬৭৭ কোটি ৬৫ লাখ ৪২ হাজার ৯০৮ টাকা। এ হিসাব অনুযায়ী, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রফতানির পরিমাণ কমেছে ৩৩ হাজার ৬৭৯ দশমিক ৫৫ টন। আর রফতানি আয় কমেছে ৪ কোটি ৭৫ লাখ ২১ হাজার ৫৫৭ টাকা।
রফতানিকারকরা বলছেন, করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রফতানি কমেছে। তবে মহামারীটির প্রভাব যতটা তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল, রফতানি ততটা নেতিবাচক হয়নি।
ভোমরা বন্দরের অন্যতম রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুন্দরবন এজেন্সির স্বত্বাধিকারী দ্বীপংকর ঘোষ জানান, তার প্রতিষ্ঠান নিয়মিত বাংলাদেশী বিভিন্ন ধরনের পণ্য ভারতের বাজারে রফতানি করে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে পাটের সুতলি, রাইস ব্র্যান ও প্রাণ গ্রুপের কয়েক ধরনের পণ্য। তবে করোনা সংকটের কারণে তার প্রতিষ্ঠানের রফতানি কিছুটা কমে গেছে।
তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম দিকে রফতানি কম হলেও বাকি মাসগুলোয় রফতানির পরিমাণ বাড়বে বলে মনে করছেন সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু। তিনি বলেন, সম্প্রতি করোনা মহামারীর কারণে পণ্য রফতানি কিছুটা কমেছে। কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরের তুলনায় ভোমরা বন্দর খুবই সম্ভাবনাময়। এখান থেকে কলকাতার দূরত্ব খুবই কম। ফলে এ বন্দর ব্যবহার করে ব্যবসায়ীরা খুব সহজে পণ্য আমদানি-রফতানি করতে পারেন। তাছাড়া সময় এবং পরিবহন খরচেও সাশ্রয় হয়। সে কারণে আগামীতে বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানির পরিমাণ আরো বাড়বে।
একই কথা জানালেন ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম। তিনি বলেন, গত অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসের তুলনায় চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে অন্তত ২৫ শতাংশ পণ্য রফতানি কমেছে। তবে করোনা সংকট কেটে গেলে আমদানি-রফতানি আরো বাড়বে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, দেশের অন্যান্য বন্দরের যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা ব্যবসায়ীরা পেয়ে থাকেন, তা যদি এখানকার ব্যবসায়ীদের দেয়া হতো, তাহলে আমদানি-রফতানি যেমন বাড়ত, তেমনি সরকারের রাজস্ব আয়ও অনেকাংশে বেড়ে যেত।
সার্বিক বিষয়ে ভোমরা স্থলবন্দরের দায়িত্বরত কাস্টমসের বিভাগীয় সহকারী কমিশনার আমীর মামুন রফতানির পরিমাণ কমে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পণ্যের চাহিদার কারণে মূলত রফতানি বা আমদানি বেড়ে থাকে। যেসব পণ্য ভারতে রফতানি হচ্ছে, সে দেশে অবশ্যই তার চাহিদা রয়েছে। তবে মহামারী করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দাভাব চলছে। এ সংকট চলে গেলে বন্দরের ব্যবসা-বাণিজ্য আরো বেড়ে যাবে।