যশোর-খুলনা অঞ্চলে অনুমোদনহীন ১০৬টি রেলক্রসিং এখন ‘মরণফাঁদ’

0

আকরামুজ্জামান ॥ কমছে না অবৈধ রেলক্রসিংয়ের সংখ্যা। বরং দিন দিন বাড়ছে এর সংখ্যা। অনুমোদনহীন এসব রেলক্রসিং দিয়ে প্রতিনিয়ত পার হচ্ছে পথচারী ও বিভিন্ন যানবাহন। আর এর ভয়াবহতা রেলওয়ের যশোর-খুলনা অঞ্চলের প্রকট আকার ধারণ করেছে। বারবার দুর্ঘটনা ঘটলেও নেই কোনো প্রতিকার। অনুমোদনহীন রেলক্রসিং ছাড়াও বৈধ রেলক্রসিংয়েও ঘটছে অহরহ ঘটনা। সর্বশেষ গত ২১ নভেম্বর যশোর শহরতলীর মুড়লী রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটে। যদিও এ ঘটনার জন্য রেল কর্তৃপক্ষের কোনো দায় নেই বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
রেলওয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, পাকশী বিভাগের আওতায় যশোর-খুলনা অঞ্চলে মোট রেলক্রসিংয়ের সংখ্যা ১৬৮টি। এর মধ্যে ৬২টি রেলক্রসিংয়ে জনবল-গেট থাকলেও বাকিগুলো একেবারেই অরক্ষিত। অনুমোদনহীন মোট ১০৬টি ক্রসিং দিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। যে কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। ‘মরণফাঁদ’ হিসেবে পরিচিত অধিকাংশ গেটে গেটম্যান না থাকায় মানুষের মধ্যে উদ্বেগ উৎকন্ঠা বেড়েই চলেছে। সূত্রটি জানায়, পাকশী বিভাগের আওতায় আট জেলায় রেললাইন রয়েছে মোট ৬৩৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে মেইন লাইন ৪৬৪ কিলোমিটার এবং লুপ ও সাইড লাইন ১৭৫ কিলোমিটার। অথচ এসব ক্রসিং দিয়ে প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন পারাপার হচ্ছে মানুষ ও গাড়ি। এমনকি এসব রেল ক্রসিংয়ে অসংখ্যবার দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হলেও টনক পড়ছে না রেল কর্তৃপক্ষের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, যশোরসহ খুলনা অঞ্চলের রেললাইনে অনেক স্থানে পর্যাপ্ত পাথর নেই। কাঠের অনেক স্লিপার পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এসব স্থানে অপরিকল্পিতভাবে স্থানীয় অথরিটি ইচ্ছামতো ক্রসিং তৈরি করে যাতায়াতের ব্যবস্থা করছে। যে কারণে ঝুঁকি নিয়েই ট্রেন চলাচল করতে হচ্ছে। অনুমোদনহীন এসব ক্রসিং একবার চালু হলে আর বন্ধ হচ্ছে না। যে কারণে দিন দিন এর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। রেলওয়ে যশোর অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী ওয়ালিউল হক বলেন, ‘অবৈধ রেলক্রসিংয়ের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। স্থানীয় পর্যায়ে এসব ক্রসিং বাড়ানো হলেও আমরা বন্ধ করতে পারছি না। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ না করেই এসব ক্রসিং চালু করে মানুষের জানমাল ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের অনুমোদিত যেসব ক্রসিং আছে সেখানে জনবল নিয়োজিত আছে। তারা যথাযথ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তবে সর্বশেষ গত শনিবার রাতে যশোর মুড়লী মোড় রেলক্রসিংয়ে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেখানে আমাদের কোনো পক্ষের দায়িত্বহীনতা ছিলো না। ট্রেনের আগমনের মূহূর্তে ট্রাকটি ক্রসিংয়ে উঠে বিকল হয়ে পড়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ইচ্ছা করলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কোথাও গেটম্যান দিতে পারেন না। এর জন্য আরও অনেকের অনুমতি নিতে হয়।’