বেঙ্গালুরুতে অধিনায়ক কোহলিকে চান না তারা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক হিসেবে আটটি বছর কাটিয়ে দিলেন বিরাট কোহলি। শিরোপা তো দূরে থাক, ফাইনাল খেলেছেন মোটে একবার। শুধু ভারত নয়, বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে বিবেচিত এই ক্রিকেটার অধিনায়ক হিসেবে আবারও ব্যর্থ আইপিএলে। এবার বিদায় নিতে হয়েছে প্লে অফ থেকে। বারবার হতাশায় ডোবা বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক বদলের সময় এসেছে বলে মনে করছেন অনেকে। তাদের মধ্যে অন্যতম গৌতম গম্ভীর ও সঞ্জয় মাঞ্জেরেকার। সাবেক দুই ক্রিকেটারের সামনের মৌসুমে বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক কোহলিকে চান না। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইপিএলে শুরুটা দারুণ হয়েছিল বেঙ্গালুরুর। তবে শেষ পাঁচ ম্যাচে মোমেন্টাম ধরে রাখতে পারেনি। নেট রানরেটে সামান্য এগিয়ে থাকার সুবিধা নিয়ে প্লে অফে জায়গা পেলেও টিকে থাকার লড়াইয়ে আর পারেনি। শুক্রবার রাতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কাছে ৬ উইকেটে হেরে বিদায় নিয়েছে টুর্নামেন্ট থেকে।
এতে আইপিএল শিরোপার অপেক্ষা আরও বাড়লো বেঙ্গালুরুর। এখন পর্যন্ত ভারতীয় ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা জিততে না পারা তিন দলে একটি এই ফ্র্যাঞ্চাইজি। ২০২০ সাল তাদের দায় শোধের মৌসুম হলেও আরেকবার ব্যর্থতার গল্প সঙ্গী হয়েছে। আর এই ব্যর্থতায় অধিনায়ক কোহলির নেতৃত্বের দিকে আঙুল তুলেছেন গম্ভীর। ৮ বছর অধিনায়ক থেকেও শিরোপা জিততে না পারা অধিনায়কের পদে কোহলির থাকা উচিত নয় বলে মনে করছেন সাবেক এই ওপেনার। তাই বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক বদলের ডাক গম্ভীরের, ‘অবশ্যই (অধিনায়ক বদল হওয়া উচিত)। ৮ বছর একটা টুর্নামেন্টে (ট্রফিহীন), ৮ বছর অনেক সময়। আমাকে বলুন, অন্য কোনও অধিনায়ক… আচ্ছা অধিনায়কের কথা বাদ দিন, আমাকে অন্য যে কোনও খেলোয়াড়ের কথা বলুন, কোনও খেলোয়াড় ৮ বছর শিরোপা না জিতলে তাকে কি আর দলে রাখা হতো? সুতরাং এটা হলো দায়িত্ববোধের ব্যাপার। একজন অধিনায়কের দায়িত্ববোধ থাকতে হবে।’
ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কোহলির মধ্যে সেই দায়িত্ববোধ জাগ্রত হওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন গম্ভীর। আইপিএলে অধিনায়ক হিসেবে দুটি শিরোপা জেতা সাবেক ব্যাটসম্যানের বক্তব্য, “এটা একবছরের কোনও ব্যাপার নয়, বিষয়টা শুধু একটা সীমার মধ্যে আটকে নেই। বিরাট কোহলির সঙ্গে আমার কোনও ঝামেলা নেই, তবে বাস্তবতা মেনে হাত ওপরে তুলে ওর বলা উচিত, ‘হ্যাঁ, দায় আমারই।”
কোহলির জায়গায় অন্য কেউ থাকলে তাকে এত লম্বা সময় অধিনায়ক হিসেবে রাখা হতো কিনা, সেই প্রশ্নও তুলেছেন গম্ভীর, ‘৮ বছর, অনেক লম্বা সময়। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ক্ষেত্রে কী ঘটেছিল। (কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবে) দুই বছর নেতৃত্বে সে পারেনি, তাই ছেঁটে ফেলা হয়েছে। ধোনি তিনটি শিরোপা জিতেছে, রোহিত শর্মা চারটি শিরোপা জিতেছে, আর সেই কারণেই তারা লম্বা সময় ধরে নেতৃত্বে। যদি রোহিত শর্মা আট বছরে কিছু দিতে না পারতো, তাহলে তাকেও ছেঁটে ফেলা হতো। ভিন্ন মানুষের জন্য ভিন্ন মানদণ্ড রাখা উচিত নয়।’ কোহলির নেতৃত্বের সমালোচনা করেছেন মাঞ্জেরেকারও। ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করা সাবেক এই ব্যাটসম্যান অবশ্য কোহলিকে নেতৃত্বে রাখার ‘দোষ’ বেঙ্গালুরুর মালিকপক্ষের ওপর চাপাচ্ছেন। মাঞ্জেরেকারের বক্তব্য, “দায়িত্ব শুধু অধিনায়কের নিজের নয়, মালিকপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ তারাই অধিনায়ক নিয়োগ দেন, দলের জন্য কোন ধরনের নেতৃত্ব দরকার সে ব্যাপারে তারই সিদ্ধান্ত নেন। দৃশ্যপট ও ফলাফল বদলাতে হলে অধিনায়ক বদল করতে হবে (বেঙ্গালুরুর)। আমার প্রত্যাশা কোহলি নিজে থেকেই বলবে ‘আমি পারিনি।’ তবে দায়িত্বটি মালিকদের।”