ভারতে ‘হিরো’ হওয়ার সুযোগ আছে জামালের!

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ১৯৯০-এর দশকে ভারতের ফুটবলে বাংলাদেশি ফুটবলারদের রমরমা গেছে। মোনেম মুন্না, শেখ মোহাম্মদ আসলাম, রিজভী করিম রুমি, গোলাম গাউস, সৈয়দ রুম্মন বিন ওয়ালি সাব্বির, কায়সার হামিদদের জন্য সেই সময় কলকাতার লিগে খেলার দুয়ার খুলে যায়। তাদের উত্তরসূরি হিসেবে আলফাজ ও মামুনুলও (ইন্ডিয়ান সুপার লিগের অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতায় সুযোগ পেয়েও খেলতে পারেননি) সেখানে গেছেন। সেই দেশের তিন ঐতিহ্যবাহী দল ইস্টবেঙ্গল,মোহনবাগান ও কলকাতা মোহামেডানে দাপিয়ে খেলেছেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা। অনেকদিন পর তাদের পথ অনুসরণ করে বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও কলকাতা মোহামেডানের জার্সি গায়ে তোলার অপেক্ষায়।
ভারতেরই পেশাদার লিগ আই-লিগে দেখা যাবে এই মিডফিল্ডারকে। ১৯৯০ সালে কলকাতা মোহামেডানের জার্সি পরে মাঠ মাতানো রুম্মন বিন ওয়ালি সাব্বির মনে করছেন জামালের সেখানে সমর্থকদের মন জয় করার সুযোগ আছে। বাংলা ট্রিবিউনকে সাবেক এই তারকা ফরোয়ার্ড বলেছেন, ‘ অনেক বছর পর জামাল ভূঁইয়ার ভারতের লিগে খেলার সুযোগ হয়েছে। (যদিও আই-লিগ আইসএসএলের নিচে। তবে এটার মানও ভালো) এটা আমাদের ফুটবলের জন্য ভালো। জামালেরও ওখানে “হিরো” হওয়ার সুযোগ আছে। যদি সে ভালো খেলতে পারে, দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে সহায়তা করতে পারে। যেমনটি মোনেম মুন্না হয়েছিল। এখনও ওর কথা অনেকে মনে রেখেছে। আমরাও মন জিতেছিলাম সমর্থকদের।’
তবে আই-লিগে স্থানীয় ও বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে লড়াই হবে। সাব্বির মনে করেন সেখানেই জামালকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে টিকে থাকতে হবে,‘এখন কলকাতা মোহামেডান আই-লিগে খেলবে। অনেকদিন পর বাংলাদেশ থেকে জামালের খেলার সুযোগ হয়েছে। ওখানে অন্য বিদেশি খেলোয়াড় থাকবে। সেখানে লড়াই করে জামালকে জায়গা করে নিতে হবে। আমাদের সময় আমরা সেটি করেছিলাম।’ তবে জামালের ওপর আস্থাই আছে সাবেক ফুটবল তারকার, ‘জামালের খেলা আমি দেখেছি। ও ভালো মানের খেলোয়াড়। ওর মধ্যে অধ্যবসায় আছে ভালো কিছু করার। ও যদি কলকাতায় ভালো করতে পারে তাহলে ভবিষ্যতের জন্য আবারও সেখানে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের দুয়ার খুলে যেতে পারে। তখন আমাদের অন্য খেলোয়াড়দের দিকে দৃষ্টি দেবে অনেকে।’ ১৯৯০ সালে কলকাতা লিগে খেলার স্মতি রোমন্থন করেছেন সাব্বির, ‘আমরা ’৯০ তে খেলেছিলাম কলকাতা মোহামেডানে। ওখানে ওদের অনেক সমর্থক। ক্লাবটি প্রাচীন। আমি ও কায়সারসহ অন্যরা খেলেছে। আমরা যদিও বেশি সময় খেলতে পারিনি, তারপরও সুনাম কুড়িয়েছি। আমাদের কথা মানুষ এখনও মনে রেখেছে।’
বাংলাদেশ থেকে গিয়ে মোনেম মুন্না ইস্ট বেঙ্গলকে কলকাতা লিগে চ্যাম্পিয়ন করেছেন। প্রয়াত মুন্নার কথা আলাদা করে বলেছেন সাব্বির, ‘বিশেষ করে মোনেম মুন্না তো ওখানে দারুণ জনপ্রিয় ছিল। ইষ্টবেঙ্গলে ও অনেক ম্যাচ খেলেছে। আমাদের চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছে। বেশিদিন খেলেছে। আসলাম ভাই,রুমি ও গাউসও খেলেছে। আমাদের তখন সুনাম ছিল অন্যরকম।’ সেই সময় ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের মান এগিয়ে ছিল বলে মনে করেন ঢাকা মোহামেডানের সাবেক অধিনায়ক। তার ভাষায়, ‘ওদের ঘরোয়া ফুটবল আমাদের চেয়ে কিছুটা ধীর গতির ছিল ওই সময়। তবে জাতীয় দলই ছিল স্ট্যান্ডার্ড। আমরা ফাঁকে ফাঁকে খেলতে যেতাম। আমাদের সময় অনেক লড়াই হতো। লড়াই করেই আমাদের সবাইকে খেলতে হয়েছে। আমি তো বলবো আমাদের সময় আমাদের লিগ এশিয়ায় অন্যতম সেরা ছিল। এখানে বিশ্বকাপে খেলা খেলোয়াড় কিংবা উঁচু লেভেলের ছাড়া কোনও বিদেশি খেলতে পারতো না। মাঝারি মানের খেলোয়াড়েরা বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেতো না।’ বিশ্বকাপ বাছাই ফুটবলে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে নিজেকে নতুন করে চিনিয়েছেন জামাল ভূঁইয়া। এখন কলকাতা মোহামেডানে সেই ধারাবাহিকতা দেখাতে পারলে সেখানেও স্মরণীয় কিছু করার সুযোগ আছে তার। জামাল কি পারবেন মুন্না-সাব্বিদের দেখানো পথে হাঁটতে?