সচেতনতাই আত্মরক্ষার পথ

0

অক্টোবর মাসেও করোনার সংক্রমণ বন্ধ হয়নি। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। বহির্বিশ্বের কোন কোন দেশে ইতোমধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশেও করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা আসন্ন শীত মৌসুমে শুরু হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা ইতোমধ্যে সতর্ক করে দিয়েছেন। সরকারও এ বিষয়ে সম্পূর্ণ সজাগ রয়েছে। রবিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন। দেশের অর্থনীতিকে সচল রেখেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাব্য দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। এ জন্য সবাইকে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অভিযান পরিচালনা ও গণসচেতনতা বাড়ানো, চিকিৎসাব্যবস্থা ঠিক করা এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সুবিধা বাড়ানোসহ বিভিন্ন ধরনের পদপে নেয়া হচ্ছে। সবাই যাতে মাস্ক পরে, শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য নির্দেশিকা মেনে চলে, সে জন্য ব্যাপকভাবে প্রচারাভিযান চালানো জরুরি। এ বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার বিভাগ ব্যবস্থা নেবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। গণমাধ্যমও এ বিষয়ে বিগত অর্ধবছরের মতো বড় ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশাবাদী।
প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কা সামাল দিতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হবে উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সরকারী কাজে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস যদি আবার ব্যাপক হারে দেখা দেয়, তখন প্রণোদনাসহ প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হবে। মানুষকে আবার প্রণোদনাসহ সহযোগিতা করতে হবে, চিকিৎসা করতে হবে, ওষুধ কিনতে হবে। হয়তো আরও ডাক্তার, নার্স আমাদের লাগবে। সেদিকে ল্য রেখেই আমাদের মিতব্যয়ী হতে হবে। ঠিক যেটুকু আমাদের প্রয়োজন, তার বেশি কোন অর্থে খরচ করা চলবে না। ভবিষ্যতের দিকে ল্য রেখেই সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। একথা বলার অপো রাখে না যে, শুধু সরকারি কাজে মিতব্যয়িতা জরুরি নয়, দেশের প্রতিটি স্তরে প্রতিটি মানুষকেই মিতব্যয়ী হতে হবে। এখন বিলাসিতার সময় নয়। মহামারী মোকাবিল করে বেঁচে থাকার সংগ্রাম। আশার কথা হলো আগামী বছরের শুরু থেকেই কমপে তিনটি বড় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান করোনার টিকা বাজারে ছাড়তে পারে। বাংলাদেশ সরকার সেদিকে দৃষ্টি রাখছে এমন তথ্য গণমাধ্যমে এসেছে। শুরু থেকেই বাংলাদেশ টিকা প্রাপ্তির জন্য সর্বাত্মক প্রয়াস নিয়েছে। তবে এটাও মনে রাখা চাই, রাতারাতি সতেরো কোটি মানুষকে টিকা দেয়া অসম্ভব। পর্যায়ক্রমে এই কার্যক্রমে অগ্রসর হতে হবে। তাই যতদিন না একজন ব্যক্তি তার দেহে করোনার টিকা গ্রহণে সমর্থ হচ্ছেন, ততদিন শতভাগ সুরার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। আমরা আশা করবো, মানুষ তার নিজের ও পরিবারের সুরক্ষায় সচেতনতার পরিচয় দেবো। বর্তমানের থোড়াই কেয়ার চলাফেরা বন্ধ করে আত্মরক্ষায় সচেষ্ট হবে।