বেনাপোল বন্দরের ভারতীয় ট্রাক টার্মিনালে এসিড ও ভারী পণ্য রাখায় পরিবেশ দূষণ

0

আহম্মদ আলী শাহিন, নাভারণ (যশোর) ॥ যশোর বেনাপোল বন্দরের ভারতীয় ট্রাক টার্মিনালে এসিড ও ভারী পণ্য রাখায় পবিবেশ দূষণ হচ্ছে। এতে বন্দরের আশপাশে বসবাসরত মানুষজন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অথচ এ ব্যাপারে কোন নজর নেই বন্দর কর্তৃপক্ষের। বন্দরের ভারতীয় ট্রাক টার্মিনালের গা ঘেঁষে বসবাসকারী বদরুল আলম ও আব্দুল জব্বার জানান, বন্দরের ভারতীয় ট্রাক টার্মিনালে ভারতীয় পণ্যবোঝাই ট্রাক রাখার কথা থাকলেও সেখানে নিয়ম বহির্ভূতভাবে রাখা হচ্ছে আমদানিকতৃ এসিড ও ভারী লৌহ জাতীয় পণ্য। সেখানে ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভারদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে বাথরুম। এখানে বাথরুম থাকলেও ড্রেনের মধ্যে প্রকাশ্যে পায়খানা ও প্র¯্রাব করছেন ড্রাইভাররা। ফলে বৃষ্টির পানির সাথে মল-মূত্র ও এসিড পার্শ্ববর্তী বাড়িঘরে ঢুকে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। স্থানীয় বাসিন্দা মোছা. শেলী, মাবিয়া খাতুন, মমতাজ বেগম, আফজাল হোসেন, বদরুল আলমসহ অনেকে এসিডের বিষক্রিয়া ও শব্দদূষণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এই ট্রাক টার্মিনালে রাতদিন ভারী পণ্যসহ এসিড জাতীয় দ্রব্য লোড-আনলোড করা হচ্ছে। রাতে বিকট শব্দে বন্দরের পার্শ্ববর্তী বাসিন্দারা নির্ঘূুম রাত কাটাচ্ছেন। বিশেষ করে বড় বড় ৪০/৫০ টনের আমদানিকৃত সিআর কয়েল ও বোল্ডার পাথর আনলোডের সময় বিকট শব্দ ও ভূকম্পন হচ্ছে। ফলে বৃদ্ধ, রোগী ও শিশুরা আতঙ্কে রাত কাটাতে হচ্ছে। অনেক সময় ট্রার্মিনালের ভেতরেই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। তখন এলাকাবাসী বাড়িঘর ছেড়ে চলে যায় নিরাপদ আশ্রয়ে। এ অবস্থায় কয়েক’শ পরিবারের হাজার হাজার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে গত ২০১৪ সালের ২ ডিসেম্বর বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন ও বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী সংগঠন সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সহ ১৯৪টি পরিবার স্বাক্ষরিত একটি আবেদন করা হয় বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে। বিষয়টি বিবেচনায় এনে ২০১৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বন্দরের পরিচালক নিতাই চন্দ্র স্বাক্ষরিত বন্দরের পার্শ্ববর্তী ৯.৫৬ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে একটি সুপারিশপত্র পাঠানো হয়। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি এলাকাবাসী বেনাপোল বন্দরের ডেপুটি পরিচালক মামুন কবির তরফদারের সাথে মানবিক বিষয়টি তুলে ধরে সমাধান চাইলে তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে সব সমস্যা সমাধান করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত এর কোন সুরাহা হয়নি। ফলে এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। বেনাপোল বন্দরের ডেপুটি পরিচালক মামুন কবির তরফদার জানান, বিষয়টি মানবিক বিবেচনা করে বন্দরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি, অচিরেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।