বিজয়ের ৫০ বছর

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ ১০ ডিসেম্বর ১৯৭১। চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। রাজধানী ঢাকা ছাড়া দেশের অধিকাংশ জেলা শত্রুমুক্ত হয়। ঢাকায় পরিকল্পিতভাবে চূড়ান্ত হামলা চালিয়ে শত্রুদের আত্মসমপর্ণে বাধ্য করার লক্ষ্যে এগিয়ে যায় যৌথবাহিনী। এদিন মিত্রবাহিনীর জঙ্গি বিমানগুলো ঢাকা বেতার কেন্দ্র স্তব্ধ করে দেয়, বোমা রকেট ছুড়ে বিধ্বস্ত করে দেয় ঢাকার কুর্মিটোলা বিমানবন্দর। ১৯৭১ সালের এই দিন মুক্তিযুদ্ধকে নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে বঙ্গোপসাগরে রওনা হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ৭ম নৌবহর মালাক্কা প্রণালীতে অবস্থান নেয়। ভারতীয় বিমানবাহিনীর বোমা হামলা ঠেকানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে পাকিস্তান। এদিকে, এগিয়ে চলছিল মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীরা বিজয়রথ। অন্যদিকে, নিশ্চিত পরাজয় জেনে পাকবাহিনী ও তাদের নৃশংসতার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকাগুলোতে বাড়তে থাকে লাশের মিছিল। এদিন মিত্রবাহিনীর বিমান আক্রমণে চট্টগ্রাম বন্দর অচল হয়ে পড়ে। কয়েকটা জাহাজে পাকিস্তানি বাহিনী বঙ্গোপসাগর দিয়ে পালানোর সময় ধরা পড়ে। সম্মিলিত বাহিনী উত্তরাঞ্চলের যুদ্ধে সর্বাত্মক সাফল্য অর্জন করে। মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে দিনাজপুর, রংপুর, জেলা শত্রুমুক্ত করে। রাতে পাকিস্তানি বাহিনী জামালপুর ছেড়ে ঢাকার দিকে পালানোর সময় যৌথবাহিনীর মুখোমুখি হয়। এ যুদ্ধে প্রায় এক হাজার ৫শ পাকিস্তানি সেনা হতাহত হয়। অনেকে আত্মসমর্পণ করে। এদিন ৫৭ নম্বর ডিভিশন গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দেয় মিত্রবাহিনী কীভাবে রাজধানী ঢাকার মুক্তিযুদ্ধে নদীর বাধা অতিক্রম করে। ভোর থেকে ভৈরব বাজারের ৩ থেকে ৪ মাইল দক্ষিণে হেলিকপ্টার করে নামানো হয় ৫৭ নম্বর ডিভিশনের সৈন্য। সারাদিন ধরে মেঘনা অতিক্রম সেই অভিযান চলে। পরাজয় নিশ্চিত তবুও আত্মসমর্পণের আগে বাঙালির নিশ্চিত স্বাধীনতা কেড়ে নিতে তখনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে মরণপণ চেষ্টা চালিয়ে যায় বিশ্বস্ত পাকশাসক।