চৌগাছায় বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণে ১০ বছরে কমেছে ৫৮৫ হেক্টর ফসলি জমি

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছায় মিল কলকারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ইটভাটা নির্মাণ করায় আশঙ্কাজনকভাবে ফসলি জমি কমতে শুরু করেছে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ১০ বছরে ৫৮৫ হেক্টর ফসলি জমি কমেছে। সূত্র জানায়, উপজেলা সদরকে নিয়ে ২০০৪ সালে গঠিত হয় পৌরসভা। পৌরসভা গঠনের পর মানুষ এর সুফল ভোগ করতে থাকে। প্রাচীণকাল থেকে চৌগাছার ব্যবসাবান্ধব জনপদ হিসেবে সুখ্যাতি। যে কারণে অল্প সময়ের মধ্যে এখানে সব ধরনের ব্যবসায়ের প্রসার ঘটেছে বলে অভিমত বিশ্লেষকদের। ব্যবসা, বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যাতায়াত সব কিছুতেই অভাবনীয় উন্নতি যখন হচ্ছে ঠিক সে সময়ে উপজেলাতে আশঙ্কাজনকভাবে কমতে শুরু করেছে ফসলি জমি।
উপজেলা কৃষি ও পরিসংখ্যান অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলাতে মোট জমির পরিমাণ হচ্ছে ২৬ হাজার ৯শ ১৯ হেক্টর। ২০১০ সালে উপজেলাতে ফসলির জমির পরিমাণ ছিল ২৩ হাজার ১৫০ হেক্টর। বর্তমানে কমে এসে দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৫৬৫ হেক্টরে। গত ১০ বছরে জমি কমেছে ৫৮৫ হেক্টর। ২০১১ সালের সর্বশেষ আদম শুমারি হিসেবে উপজেলায় মোট জনসংখ্যা ২ লাখ ৩১ হাজার ৩৭০ জন। গত ১০ বছরে জনসংখ্যা বেড়ে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ হতে পারে বলে অনেকের ধারণা। প্রতি বছর মানুষ বাড়ছে কিন্তু বাড়ছে না ১ ইঞ্চি জমি। অথচ নানা কারণে বিগত ১০ বছরে ফসলি জমি কমেছে ৫৮৫ হেক্টর। জমি কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে যত্রতত্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,বাড়িঘর, শিল্প কলকারখানা নির্মাণ ও ইটভাটা তৈরি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার প্রধান ৫টি সড়ক, চৌগাছা-যশোর,ঝিকরগাছা,কোটচাঁদপুর, মহেশপুর ও পুড়াপাড়া সড়কের দুই পাশে প্রতিদিনই বাড়ছে বাড়ি, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান কিংবা কল-কারখানা। একই অবস্থা শহর ও শহরতলীর প্রতিটি পাকা কিংবা কাঁচা সড়কের পাশে এমনকি ফাঁকা মাঠের মধ্যেও হচ্ছে বাড়িঘর। সরকার থেকে যখন ঘোষণা আসছে কোনক্রমেই ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না। জমি রক্ষা করে বসত বাড়ি ও কল-কারখানা স্থাপন করতে হবে। ঠিক সেই সময়ে চৌগাছাতে এর বিপরীত চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শ শ ফসলি জমি দখলে রেখে নির্মাণ করা হয়েছে অন্তত ২০টি ইটভাটা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন কিছুই খোঁজ না নিয়ে ভাটা নির্মাণের অনুমতি দিচ্ছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দিন বলেন, ব্যবসাবান্ধব, পাশাপাশি বসবাসের জন্যও অত্যন্ত ভাল পরিবেশ হওয়ায় চৌগাছাতে দিন দিন নানা ধরনের স্থাপনা তৈরি হচ্ছে, সেই সাথে বসত বাড়িও তৈরি হচ্ছে। তবে কোন ক্রমেই ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না।