বাড়ছে করোনা, কমছে প্রতিরোধ কার্যক্রম

0

বিএম আসাদ ॥ যশোরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও কমছে প্রতিরোধ কার্যক্রম। এর বিস্তৃতি রোধে প্রথম দিকে যে সব পদক্ষেপ হয়েছিল তা সবই শিথিল হয়ে গেছে। সিভিল সার্জন অফিসের এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, যশোরে গতকাল পর্যন্ত কোভিড-১৯ সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজচার ১শ’ ৩৩ জন। দেশে গত ১০ মার্চ করোনা রোগ শনাক্ত হলেও যশোরে শনাক্ত হয় এপ্রিলের মাঝামাঝি। এরপর আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে। মাঝে মাঝে এ সংখ্যা ওঠানামা করলেও গড় আক্রান্তের হার বেড়েই চলেছে। আক্রান্তের পাশাপাশি বেড়ে যায় মৃত্যু তালিকা। মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের। করোনা উপসর্গে মারা গেছেন ৫০ জনের কাছাকাছি। এ অবস্থায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত হয় কমিটি। যশোরে জেলা প্রশাসককে সভাপতি ও সিভিল সার্জনকে সদস্য সচিব করে এ কমিটি গঠন করা হয়। শুরুতেই জেলা কমিটির প্রতিরোধ কার্যক্রম ছিল জোরদার। করোনায় আক্রান্তদের বাড়ি ও আশপাশ এলাকা লকডাউন করা হতো কঠোরভাবে। প্রশাসন স্বাস্থ্য বিভাগ, সেনাবাহিনী, পুলিশ, জিবিবিসহ সাধারণ মানুষও প্রতিরোধ কার্যক্রমে নেমে পড়েন। একজন থেকে অন্যজনে যাতে করোনার বিস্তৃতি না ঘটে সে জন্যে সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে সবাইকে মাস্ক ব্যবহারে বাধ্য করা, আবাসিক এলাকা থেকে বাজার স্থানান্তর করে খোলা মাঠের ভেতর নিয়ে যাওয়া, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিসের প্রবেশের সময় সাবান, পানি দিয়ে ভালো করে হাত ধোঁয়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার, যানবাহনে চলাচলে অর্ধেক যাত্রী বহন প্রভৃতি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রশাসনের ভূমিকা ছিল কঠোর। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রায়ই জরিমানা করা হতো। সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। পবিত্র ঈদের জামাত ঈদগাহে পড়ার ক্ষেত্রেও বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যে চলে আরও নানামুখী পদক্ষেপ। এসব কাজে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সকল কার্যক্রম শিথিল হয়ে গেছে। কমেছে প্রতিরোধ ব্যবস্থা। মানা হচ্ছে না শারীরিক দূরত্ব, ব্যবহার করা হচ্ছে না মাস্ক। যানবাহনে পূর্বের ন্যায় অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হচ্ছে। স্থানান্তর করা ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান পূর্বের স্থানে ফিরে গেছে। প্রশাসন কেবল রেড জোন, ইয়োলো জোন, গ্রিন জোন করে সীমিত লকডাউনের ভেতর রয়েছে। লকডাউনে থাকা লোকজনও বিধি নিষেধের ভেতর থাকতে চাইছেন না। পরিবেশ স্বাভাবিক হয়ে এসেছে এমন ধারণা নিয়ে সকলে চলাফেরা করছেন। যা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
এ ব্যাপারে করোনা প্রতিরোধে গঠিত যশোর জেলা কমিটির সদস্যসচিব ডা. শেখ আবু শাহীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে প্রশাসনের প্রতিরোধ কার্যক্রম কমে গেছে। একথা সঠিক না। তবে প্রতিরোধ কার্যক্রম কিছুটা শিথিল অবস্থায় আছে। চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও এনডিসিকে এম মামুনুর রশীদ বলেন, মাঝেমধ্যে তাদের কার্যক্রম চলছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করছে।