ভারতের সঙ্গে তো চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছোটখাটো নয়

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের পত্রপত্রিকায় যেসব লেখালেখি হয়েছে, আমাদের অনেকেই তা আপত্তিকর মনে করেন। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হয়তো ভাবছেন, এগুলোকে সামাল দেয়া দরকার। তিনি চেষ্টা করবেন ভবিষ্যতে এগুলো হবে না- এটা বাংলাদেশকে বোঝাতে। এখন বৈশ্বিক মহামারির সময় ভারত যদি ভ্যাকসিন তৈরি করে আমরা সেখানে সংযুক্ত হবো কিনা সেটাও একটি বিষয়। এ ছাড়াও আমাদের তো ভারতের সঙ্গে অনেক সমস্যা রয়ে গেছে। তিস্তার সমস্যা রয়ে গেছে, সেগুলো হয়তো চেষ্টা করবেন সমাধান করতে। তিনি মানবজমিনকে আরো বলেন, অনেকেই বলছে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বড় সম্পর্ক হচ্ছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গেও তো চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছোটখাটো নয়।
তাদের সঙ্গেও তো বড় সম্পর্ক। অন্য দেশের সঙ্গে আমরা কি সম্পর্ক রাখবো সেটা আমাদের ব্যাপার? ভারত এখন যেটা চেষ্টা করবে আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরো ভালো থাকে, যদি কোনো ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকে সেগুলো যেন আর না থাকে। আমরা তো আমাদের স্বার্থ দেখবো। ভারত যেভাবে ভারতের স্বার্থ দেখে, চীন যেভাবে চীনের স্বার্থ দেখে। চীনের যারা শত্রু তারা তো আমাদের শত্রু না। ভারতের যারা শত্রু তারা তো আমাদের শত্রু না। এখন তারা যদি মনে করে তাদের শত্রু আমাদের শত্রু হতে হবে- এটা তো ঠিক না। কখনই আমরা এরকম সম্পর্কে যাইনি। আমেরিকার যারা শত্রু তাদেরকে আমরা শত্রু মনে করি না। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়- এটা তো আমাদের মূলনীতি। এই মূলনীতি থেকে তো আমাদের সরে যাওয়ার প্রশ্নই উঠছে না। আমরা সবার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখার চেষ্টা করবো। তবে এমন যদি কোনো বিষয় আসে যেখানে আমাদের স্বার্থবিরোধী হবে সেখানে তো আমরা সার্বিক ভাবে যাবো না। আমি মনে করি যে, স্বার্থরক্ষা করার যে বিষয়টা সেটা করা হবে। তিস্তার সমস্যা আমাদের বহুদিন ধরে। তিস্তায় বৃষ্টি মৌসুমে পানিতে ভরে যায় আর শীত মৌসুমে তিস্তা শুকিয়ে যায়। শীতের মৌসুমে যেন তিস্তা শুকিয়ে না যায় এজন্য তো বর্ষা মৌসুমে পানিটা ধরে রাখতে হবে। এ কারণে তিস্তার অবকাঠামো নির্মাণে অর্থায়নের দরকার। এই অর্থায়ন যদি চীন দিয়ে থাকে এটা তো ভারতের মাথাব্যথা নয়। এটা ভারতের বিরুদ্ধে যাচ্ছে না কোনোভাবেই। বরং এটা ভারতের লাভই হতে পারে- যাক সমাধান হয়ে গেল তিস্তার। আমি মনে করি না যে, তিস্তা নিয়ে ভারতের এত চিন্তা করা উচিত। আমরাই যদি এর সমাধান করে ফেলতে পারি, বৃষ্টি মৌসুমের পানিটা যদি আমরা সমাধান করে ফেলতে পারি তাহলে তো আমরাও ভারতের সঙ্গে কোনো সমস্যা করবো না। আর ওরাও তো বেঁচে যাবে, পশ্চিমবঙ্গের লোকরাও বেঁচে যাবে। আমি তো মনে করি না যে, এটা তাদের মাথাব্যথা হওয়া উচিত। বরং এটা আমাদের মাথাব্যথা আমাদের বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে পানিটা সংরক্ষণের জন্য।