‘দিনে ১০ হাজার টাকা দিলে ঘরে থাকবো’

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ স্বপন কুমার নবাবপুরে লাইটের ব্যবসা করেন। লকডাউন জানার পরও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য শনিবার (৪ জুলাই) বের হয়েছিলেন। কিন্তু কোনভাবেই বের হতে পারেননি ওয়ারী থেকে। উপরন্তু স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে যান। বলেন, ‘২১ দিন ব্যবসা করতে না পারলে যে ক্ষতি হবে, সে টাকা কে দেবে? সরকার আমাদের চলাচলের জন্য পাসের ব্যবস্থা করুক। না হলে তো সম্ভব না। আমার প্রতিদিনের হাতখরচ ১০ হাজার টাকা। সরকার আমাকে প্রতিদিন ১০ হাজার করে টাকা দিক, আমি ঘর থেকে বের হবো না।’
শুধু স্বপ্নন নয়, তার মতো ওয়ারীর অনেক বাসিন্দা এলাকা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। করোনার সংক্রমণ রোধে শনিবার ভোর ৬টা থেকে ২১ দিনের জন্য এই লকডাউন শুরু হয়েছে। লকডাউন শুরুর প্রথম দুই ঘণ্টায় সেভাবে লোকজন বের হতে দেখা না গেলেও সকাল ৯টার পর দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। কেউ বলছেন চাকরিতে যাবেন, কেউ বলছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাবেন। এসব নিয়ে সার্ভিস গেটগুলোয় ভিড় করছেন তারা। কিন্তু সেচ্ছাসেবক ও পুলিশের কঠোর অবস্থানের কারণে এলাকায় কেউ প্রবেশ ও বের হতে পারছেন না। ওয়ারীর হট কেক সার্ভিস গেটের বাইরে যাওয়ার জন্য অনেক হইচই করেন বাংলাবাজারে বইয়ের ব্যবসায়ী আমিনুল এহসান। পরে বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘আমাকে কোনোভাবেই বাইরে যেতে দিতে দিচ্ছে না। বাংলাবাজারে আমার বইয়ের ব্যবসা, অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। এলাকার মধ্যে কোনও দোকান খোলা নেই। খালি সুপারশপগুলো খোলা। এলাকায় এখন লকডাউনের দরকার নেই। ওরা টাকা দিয়ে লকডাউন এনেছে।’ লকডাউন পরিস্থিতি নিয়ে ওই এলাকার স্বেচ্ছাসেবক হান্নান বলেন, ‘এলাকাবাসী সুবিধার্থেই লকডাউন করা হয়েছে। এজন্য আমরা কাউকেই বাইরে যেতে এবং প্রবেশ করতে দিচ্ছে। যদি কেউ এলাকা থেকে একবারে বের হতে চায় তবে তার নাম এবং ছবি তুলে রেখে দিচ্ছি। ২১ দিন পরে লকডাউন শেষ হলেই তিনি এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন।’ ওয়ারী এলাকার পেট্রোল ইন্সপেক্টর আকতার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আপনারা ও আমরা কেউই চেষ্টা কম করছি না। যদি লোকজন নিজ থেকে সচেতন না হয় তাহলে তো কিছু করার থাকবে না। এলাকায় প্রায় ৪৬ জন রোগী রয়েছে। সরকার চিন্তাভাবনা করেই এটাকে রেড জোন ঘোষণা করেছে। সরকারের যে চিন্তাভাবনা, রোগী কমিয়ে এনে সুস্থ অবস্থায় ফেরানো, এটাকে সবারই সহযোগিতা করা উচিত। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি লোকজনকে বুঝিয়ে ঘরে রাখার।’