যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইমন হত্যার রহস্য উদঘাটনের দাবি সিআইডি’র

0

মীর মঈন হোসেন মুসা ॥ যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন ইমন হত্যার রহস্য উদঘাটনের দাবি করেছে ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) পুলিশ। তদন্ত শেষ হওয়ায় শিগগির এ মামলার চার্জশিট দিতে যাচ্ছে এই সংস্থাটি। এমনটা জানালেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের ইনসপেক্টর হারুন অর রশিদ।
২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর গভীর রাতে যশোর শহরের বেজপাড়া গুলগুল্লার মোড়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মনোয়ার হোসেন ইমন। তিনি বেজপাড়া বিহারী কলোনির বাসিন্দা আনোয়ার হোসেনের ছেলে। ঘটনার সময় তিনি বেজপাড়া গুলগুল্লার মোড়ের জনৈক সালামের ফার্নিচারের দোকানের সামনে বসে লুডু খেলা দেখছিলেন। এ সময় আচমকা সন্ত্রাসীরা এসে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন ইজিবাইকে করে দ্রুত তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা হত্যার ঘটনায় ৩১ মে তার পিতা আনোয়ার হোসেন কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মনোয়ার হোসেন ইমন হত্যা মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন কোতয়ালি থানা পুলিশের তৎকালীন ওসি এ কে এম আজমল হুদা। তিনি হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে সেই সময় দুজনকে আটক করেছিলেন। এদের একজন বেজপাড়া বিহারী কলোনির ভাংড়ি লিটন এবং অপরজন বেজপাড়া বুনোপাড়ার আলোচিত আসাদুজ্জামান আসাদ ওরফে বুনো আসাদ। তবে কোতয়ালি পুলিশ মনোয়ার হোসেন ইমন হত্যার রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয়। ফলে এ মামলা এক পর্যায়ে সিআইডিতে চলে যায়। সেখানে মামলা তদন্তের দায়িত্ব পান ইনসপেক্টর হারুন অর রশিদ। এদিকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মনোয়ার হোসেন ইমন হত্যাকা-ের প্রায় ৩ বছর পার হতে চললো। কিন্তু তার হত্যাকা-ের সাথে কারা জড়িত এবং কীজন্যে তাকে খুন করা হয়েছে এ বিষয়টি এখনো অজানাই রয়ে গেছে। তবে সিআইডি পুলিশ দাবি করছে, তারা মনোয়ার হোসেন ইমন খুনের রহস্য উদঘাটন করতে পেরেছে। তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের ইনসপেক্টর হারুন অর রশিদ এ বিষয়ে দৈনিক লোকসমাজকে জানান, মনোয়ার হোসেন ইমন ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি এলাকায় মাদকবিরোধী ভূমিকা রাখতেন। এ কারণে এলাকার মাদক ব্যবসায়ী সন্ত্রাসীরা তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলো। এছাড়া স্থানীয় একটি রাজনৈতিক (কোন রাজনৈতিক দল বা কারা তা তিনি বলেননি) পক্ষ নানা কারণে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। এসব কারণে সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হয়েছেন মনোয়ার হোসেন ইমন। দীর্ঘ তদন্তে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। অবশ্য তদন্তে পাওয়া তথ্যের বিষয়ে পরিষ্কার আর কোনকিছু বলেননি সিআইডি পুলিশের ওই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, তদন্ত কাজ শেষ পর্যায়ে। শিগগির এ মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করবেন। এক প্রশ্নের জবাবে ইনসপেক্টর হারুন অর রশিদ বলেন, এ মামলায় ৭/৮ জনকে বিভিন্ন সময় আটক করা হয়েছে। তবে তাদের নাম বলেননি তিনি।
উল্লেখ্য, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মনোয়ার হোসেন ইমন খুন হওয়ার পর ক্ষমতাসীন দলের দুটি পক্ষের কাদা ছোড়াছুড়ি হয়েছিল। হত্যার পর সেই সময় জেলা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলন করে ইমন খুনের জন্য আওয়ামী লীগের এক দায়িত্বশীল নেতাকে দায়ী করেছিলেন। অভিযোগ করা হয়েছিল, ওই নেতার পরিকল্পনায় সন্ত্রাসীরা ইমনকে খুন করেছে। অবশ্য নেতার অনুসারীরাও এর পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন। তারাও অভিযোগ করে বলেছিলেন, যারা লাশের খাটিয়া নিয়ে আজ মায়া কান্না করছেন তারা এই হত্যার জন্য দায়ী।