বাইরে থেকে এসে অনেকেই মানছেন না হোম কোয়ারেন্টিন

0

মাগুরা প্রতিনিধি॥ ঈদ উপলক্ষে গত কয়েকদিনে কয়েক হাজার মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মাগুরায় এসেছেন। এদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক লোকই হোম কোয়ারেন্টিন মেনে চলছেন। বেশির ভাগেরই দোকানসহ বিভিন্ন স্থানে আড্ডা দিতে দেখা গেছে। আবার কেউ কেউ নিজে থেকেই কোয়ারেন্টিন মেনে চলছেন। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ দাবি করেছে, বাইরে থেকে আসলেই তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে। ঈদ শুরুর কয়েকদিন আগে থেকেই জেলায় ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে দেশের বাড়ি মাগুরা আসতে শুরু করে মানুষজন। ঈদের আগের শেষ তিন দিন প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল এবং অন্যান্য যানে অসংখ্য মানুষকে বাড়ি আসতে দেখা যায়। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত ২২ মে হোম কোয়ারেন্টিনে ছিল ১৫১ জন এবং সর্বশেষ ২৪ মে ছিল ১৫৮জন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এখন পর্যন্ত কেউ নেই।
তবে অনেকেই কোয়ারেন্টিন মানছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। জেলা শহরের কলেজপাড়া, স্টেডিয়ামপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার অনেকেই এমন অভিযোগ করেছেন। বাইরে থেকে আসা অনেকেই ঈদের নামাজ পড়েছেন মসজিদে। পৌরসভার সীতারামপুরের কলেজছাত্র সাগর হোসেন বলেন, ‘সীতারামপুর মধ্যপাড়া এবং উত্তরপাড়ায় অনেকেই বাইরে থেকে এসেছেন ঈদ উপলক্ষে। তাদের অনেককে মসজিদে ঈদের নামাজ পড়তে দেখা গেছে। শহরের কলেজ পাড়ার অধিবাসী রুবায়েত ফিরোজ বলেন, ‘আমাদের পাড়ায় কমপক্ষে একশ’ জন বাইরে থেকে এসেছেন ঈদ করতে। কোয়ারেন্টিন তো দূরের কথা তাদের পাড়া-মহল্লায় আড্ডা দিতে দেখছি। স্টেডিয়াম পাড়ার গৃহিনী সুরাইয়া খাতুন বলেন, ‘এলাকায় অনেককেই দেখছি, ঈদ করতে বাড়িতে এসেছেন এবং ঘুরেও বেড়াচ্ছেন। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’ আবার অনেক স্থানে কোয়ারেন্টিন করতে বাধ্য করা হচ্ছে। কোথাও আবার বাইরে থেকে আসায় তাকে বাড়িতে উঠতে দেয়নি গ্রামবাসী।
গাজীপুরের একটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক শহরতলীর নিজনান্দুলী এলাকার বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমার কারখানা লকডাউন হয়ে যাওয়ায় আমি বাধ্য হয়ে মাগুরায় ফিরে এসেছি। এলাকাবাসী আমাকে করোনা রোগী সন্দেহে বাড়িতে উঠতে দেয়নি। আমি বাধ্য হয়ে অন্য একটি বাড়িতে ১০ দিন ধরে কোয়ারেন্টিনে আছি। তকে কেউ কেউ স্বেচ্ছায়ও কোয়ারেন্টিনে আছেন। শহরের নিজনান্দুয়ালী এলাকার সালাউদ্দীন, হাসপাতাল পাড়ার মিথুন জামান ঢাকা থেকে মাগুরায় ঈদ করতে এসে স্বেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন বলে জানান। ঈদের নামাজ পড়েননি বলেও জানান তারা। মাগুরার জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম বলেন, ‘বিভিন্নভাবে ঈদের দু’দিন আগে বা আগের দিন অনেক রাত পর্যন্ত অনেকেই মাগুরায় এসেছেন। সবাইকে শনাক্ত করা সম্ভব নয়। তবে আমি মনে করি নিজের নিরাপত্তার স্বার্থেই তারা সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। এজন্য আমরা ব্যাপক জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালাচ্ছি এবং বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। জনগণকে সচেতন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।