বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ জেলা প্রশাসনের

0

বাগেরহাট অফিস ॥ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আমপান মোকাবিলায় উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে প্রশাসন প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। মোংলা বন্দরের ১১টি দেশি-বিদেশি জাহাজ অবস্থান করছে। জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ স্বাভাবিকভাবে চলছে। দুর্যোগ মোকাবিলা করতে দুর্যোগ প্রস্তুতি কমিটি জেলা ও ঝুঁকিপূর্ণ চার উপকূলীয় উপজেলায় জরুরি সভা করেছে। জেলার ৩৪৫টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়াও সংশ্লিষ্ট উপজেলার স্কুল ও কলেজগুলো খুলে রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি রাখতে বলা হয়েছে।
মাঠে পেকে যাওয়া বোরো ধান যেন নষ্ট না হয় তাই দুর্যোগ শুরুর আগেই তা কেটে কৃষকের ঘরে তুলতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। ইতোমধ্যে কৃষি বিভাগ জেলার ৮৫ ভাগ ধান কেটে ঘরে তুলেছে। বাকি ১৫ ভাগ ধান আজ সকালের মধ্যে কাটা শেষ করতে পারবে বলে আশা তাদের।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে আবহাওয়া বিভাগ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় আমপানের পূর্বাভাস জারি করেছে। এই দুর্যোগ মোকাবিলায় স্থানীয় মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা মাথায় রেখে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় ইতোমধ্যে জরুরি সভা হয়েছে। জেলা ও উপজেলাগুলোতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। এই দুর্যোগে আমরা মাঠে থাকা বোরো ধান দ্রুত কেটে ঘরে তুলতে কৃষি বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি। জেলার ৩৪৫টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়াও সংশ্লিষ্ট উপজেলার স্কুল ও কলেজগুলো খুলে রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি রাখতে বলা হয়েছে।’
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার শেখ ফকর উদ্দিন এই বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী মোংলা বন্দরে স্থানীয় ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত জারি রয়েছে। বন্দরে বর্তমানে সার, ফাইঅ্যাশ, কয়লাবাহীসহ মোট ১১টি দেশি-বিদেশি জাহাজ অবস্থান করছে। বিকেল নাগাদ আরও নতুন চারটি জাহাজ বন্দরে ভেড়ার কথা রয়েছে। বন্দরে অবস্থান নেওয়া জাহাজগুলোতে পণ্য ওঠানামার কাজ অব্যাহত রয়েছে। বন্দরে একটি ঝড় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। ঝড় মোকাবিলায় বন্দরের সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
বাগেরহাটের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক রঘুনাথ কর বলেন, চলতি মৌসুমে বাগেরহাট জেলায় ৫২ হাজার ৯৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। চারটি কম্বাইন্ড হারভেস্টার, ৯৭টি রিপার ও হ্যান্ড রিপার এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় ইতোমধ্যে মাঠের ৮৫ ভাগ ধান কেটে ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছি। প্রাকৃতিক ঘূর্ণিঝড় আমপান আঘাত হানার আগে মাঠে থাকা বাকি ১৫ ভাগ ধান কেটে ঘরে তুলতে এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। স্ব স্ব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা তাদের সহযোগিতা করছেন। দুর্যোগ আঘাত হানার আগেই সব ধান কৃষকের ঘরে উঠে যাবে বলে মনে করছেন এই কৃষি কর্মকর্তা।