স্বাস্থ্যবিধি না মানায় যশোরে আগামীকাল থেকে ফের বন্ধ হচ্ছে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান

0

আকরামুজ্জামান ॥ সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলায় যশোরের সব দোকান ও শপিং মল ফের বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ফের বন্ধ থাকবে জেলার সব শপিং মল ও দোকানপাট। কেবলমাত্র ওষুধের দোকান, কাঁচাবাজার, কৃষিপণ্য ও নিত্যপণ্যের দোকান খোলার পূর্ব আদেশ বহাল থাকবে। রবিবার দুপুরে যশোর সার্কিট হাউজে করোনা প্রতিরোধে গঠিত জেলা কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে প্রেস কাব যশোরে ব্যবসায়ীদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে ওই সভায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা ও বন্ধ নিয়ে ব্যবসায়ীরা পরস্পর বিরোধী বক্তব্য রাখেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ মে থেকে সরকার সারাদেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার নির্দেশ দেন । অর্থনীতির কথা ভেবে ঈদ উপলক্ষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সরকারি সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও দেশের প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি জেলা ও বিভাগীয় শহরে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির কথা ভেবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সেখানকার ব্যবসায়ী ও প্রশাসন।
কিন্তু যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলা শহরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১০ মে থেকে যশোরের সব ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান খুলে দেয় জেলা প্রশাসন। তবে লকডাউনের মধ্যেও মানবিক বিবেচনায় সরকার ঘোষিত বিধি অনুযায়ী শপিং মল, বিপণিবিতানসহ দোকানপাট খুলে দেওয়া হলেও যশোরের বাজারগুলোতে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসূরণ না করে বেপরোয়া ভাবে মাঠে নেমে পড়ে সাধারণ মানুষ। যেকারণে এ নিয়ে সর্বত্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। একই অবস্থা বিরাজ করে যশোরসহ আশপাশের জেলার বাজারগুলোতে। এতে করোনা ঝুঁকিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।
এদিকে বাজারে মানুষের এই অস্বাভাবিক উপস্থিতির কারণে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরই মধ্যে যশোরের পার্শ্ববর্তী জেলা খুলনা, নড়াইলসহ আরও কিছু এলাকায় মার্কেট বন্ধ করে দেয় সেখানকার প্রশাসন। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে যশোরের বাজার নিয়েও টনক পড়ে জেলা প্রশাসনের। এ অবস্থায় রবিবার দুপুরে সার্কিট হাউজে করোনা ভাইরাস (কোভিট-১৯) প্রতিরোধে গঠিত জেলা কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ শফিউল আরিফের সভাপতিত্বে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন, যশোর পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু, সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন, করোনা পরিস্থিতিতে যশোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল নিয়ামুল হালিম ও ব্যবসায়ীদের পক্ষে প্রেস কাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন।
সভায় সরকারি নির্দেশনার পর দোকান খুলে দেওয়ার পর বিগত কয়েকদিনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় জেলায় লকডাউনের মধ্যেও মানবিক বিবেচনায় সরকারি বিধি অনুযায়ী শপিং মল ও দোকানপাট খুলে ওেয়ার পরও ক্রেতা-বিক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। এ সময় ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি হিসেবে বৈঠকে উপস্থিত প্রেস কাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন বলেন, ব্যবসায়ীরা এক সভায় আজ রবিবার প্রেস কাবে মিলিত হয়েছিলেন। সেখানে তারা আহবান জানিয়েছেন ঈদ পর্যন্ত দোকানপাট খুলে রাখার জন্য। বিষয়টি বিবেচনায় নিতে জেলা প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তারা। এ সময় সভায় ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে একদিন সময় দিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে জেলার সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধাš করোনা প্রতিরোধে গঠিত জেলা কমিটি।