করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহ রূপধারণ যশোরে রোগীর সংখ্যা প্রায় এক শ

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে করোনার ভয়াবহতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ এ অঞ্চলের যশোর, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা জেলার করোনা পরিস্থিতি খুবই খারাপ অবস্থার দিকে যাচ্ছে। ক্রমেই বাড়ছে এ তিনটি জেলার করোনা রোগীর সংখ্যা।  গত দুইদিনে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টারে নমুনা পরীা করে যশোরের ১৭টি এবং চুয়াডাঙ্গার ৩৮টিকে পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নমুনা পরীা কার্যক্রমের নেতৃত্বে থাকা ড. শিরিন নিগার শনিবার সকালে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ নিয়ে যশোর জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক শর কাছাকাছি পৌঁছালো। এ জেলায় মোট ৯৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। আর চুয়াডাঙ্গায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ ছাড়িয়েছে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টার থেকে শনিবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পরীার যে ফল পাঠানো হয়েছে, তাতে দেখা যায়, ১৬৫টি নমুনার মধ্যে ৫৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।  গত দুই দিনে এই ল্যাবে যশোরের ৩৯টি নমুনার মধ্যে ১৭টি পজিটিভ রেজাল্ট দেয়। চুয়াডাঙ্গার ১২৩টি নমুনার মধ্যে ৩৮টিরই পজিটিভ ফল আসে। এছাড়া ঝিনাইদহের তিনটি নমুনা পরীা করে একটির ফলাফল পজিটিভ আসে। ফলে ঝিনাইদহ জেলায় এখন পর্যন্ত মোট ৪৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হলো।
স্বাস্থ্য বিভাগের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা জানাচ্ছেন, এই অঞ্চলের মধ্যে যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহে সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আগের দিন পর্যন্ত আইডিসিআর-এর হিসেব অনুযায়ী খুলনা বিভাগের অন্য জেলাগুলোর মধ্যে কুষ্টিয়ায় ২২ জন, খুলনা ও মাগুরা জেলায় ১৯, নড়াইলে ১৫, বাগেরহাটে সাত, মেহেরপুরে ছয় এবং সাতীরায় দুইজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। অর্থাৎ দণি-পশ্চিমের কোনো জেলা আর করোনামুক্ত নেই। যদিও নড়াইলের সিভিল সার্জন একবার তার জেলাকে করোনামুক্ত ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু তারপর ওই জেলায় নতুন করে অন্তত দুইজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এদিকে যশোরে নতুন করে শনাক্তের তালিকায় চিকিৎসক-নার্সসহ বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা রয়েছে।
আক্রান্তদের মধ্যে তিনজন চিকিৎসক, দুইজন নার্স ও একজন সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা রয়েছেন। এদের মধ্যে মা ও শিশু কেন্দ্রের একজন গাইনি ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ, মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন মেডিকেল অফিসার, যশোর মেডিকেল কলেজের একজন ইন্টার্ন ডাক্তার ও সিনিয়র স্টাফ নার্স রয়েছেন। অপরদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজের পরীক্ষায় নতুন শনাক্তে যশোরের মনিরামপুরের একজন সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা রয়েছেন। এছাড়া যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনায় আক্রান্ত নার্সের স্বামীও নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। যশোর জেলা সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানান, শুক্রবার রাতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে করোনা সন্দেহের রোগীর নমুনা পরীক্ষার ফলাফল এসে পেঁছে। ফলাফল পাওয়ার পরপরই সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রশাসনকে জানিয়ে দেওয়া হয় এবং আক্রান্তদের বাড়ি লকডাউন করাসহ যাবতীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়।