খুলনা বিভাগে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পৌনে তিনশ’

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ খুলনা বিভাগে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পৌনে তিনশ’তে। এখনও শীর্ষে অবস্থান করছে যশোর জেলা। সবচেয়ে কম আক্রান্ত হয়েছে সাতক্ষীরায়। তবে আক্রান্ত হতে বাদ নেই কোনো জেলা। সম্প্রতি নড়াইলকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা হলেও আবারও সেখানে শনাক্ত হয়েছে রোগী। খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের দেয়া তথ্যমতে এ পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় আক্রান্ত হয়েছে ২৭৭ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৬৮ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ছয়জন। খুলনার পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. রাশেদা সুলতানা বলেন, এ পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলার মধ্যে সবচেয়ে চেশি করোনা আক্রান্ত হয়েছে যশোরে অর্থাৎ ৭৮ জন। এর পরের অবস্থানে রয়েছে ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা। এ দু’টি জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪৩জন করে। আক্রান্তের দিক দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে কুষ্টিয়া। এ জেলায় এ পর্যন্ত করোনা সনাক্ত হয়েছে ২২জনের। চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে খুলনা ও মাগুরা জেলা। মহানগরীসহ খুলনা জেলায় পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা যেমন ১৯ জন তেমনি মাগুরা জেলায়ও একই সংখ্যক আক্রান্ত হয়। খুলনা জেলার বাসিন্দা না হলেও গত ৮ মে আক্রান্ত গোপালগঞ্জের মোকসেদপুরের পবিত্র রায়কে খুলনার ধরা হয়। যেহেতু তিনি খুলনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা সনাক্ত হন সে কারণে তাকে খুলনার হিসেবেই ধরা হয়। কিন্তু খুলনার বাসিন্দাদের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন মহানগরীতে ৮জন এবং জেলায় ১০জন অর্থাৎ ১৮ জন। করোনা আক্রান্তের দিক দিয়ে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে নড়াইল। ওই জেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১৫জন। এছাড়া বাগেরহাট জেলায় সাতজন, মেহেরপুর জেলায় ছয়জন এবং সাতক্ষীরা জেলায় দু’জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। অবশ্য আক্রান্তের দিক দিয়ে যেমন যশোর শীর্ষে তেমনি সেখানে সুস্থও হয়েছেন বেশি সংখ্যক রোগী। যশোরে ৭৮ জন আক্রান্ত হলেও এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩৩জন। তেমনিভাবে কুষ্টিয়ায় ১৫জন, খুলনায় ১০জন, বাগেরহাট ও চুয়াডাঙ্গায় দু’জন করে এবং ঝিনাইদহ ও নড়াইলে একজন করে আক্রান্ত হন। মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে খুলনায় দু’জন এবং বাগেরহাট, নড়াইল, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে একজন করে রয়েছেন। এর মধ্যে খুলনার একজন ছাড়া বাকী পাঁচজনেরই মৃত্যুর পর করোনা সনাক্ত হয়। খুলনার রূপসা উপজেলার দেয়াড়া এলাকার জরিনা বেগম নামের এক রোগী ৩০ এপ্রিল আক্রান্ত হয়ে খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৫ মে মৃত্যুবরণ করেন।
অপরদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজের গ্যাষ্ট্রোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রনজিৎ এবং শিশু বিভাগে সহকারী অধ্যাপক ডা. ওমর খালেদ ফয়সাল ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন বলে খুমেক হাসপাতালের করোনা প্রতিরোধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সার্বিক সমন্বয়কারী এবং খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মো. মেহেদী নেওয়াজ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ঢাকার মুগদা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ইতোমধ্যে ওই দু’ চিকিৎসক ছাড়পত্র নিয়েছেন। এছাড়া বৃহস্পতিবার খুমেক’র ইউরোলজী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাসুদ আহমেদের আরও একটি নমুনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ হয়েছে। ডা. মাসুদ আহমেদ খুলনা মহানগরীর দ্বিতীয় আক্রান্ত ব্যক্তি। গত ১৮ এপ্রিল তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। একদিন পর তাকে খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৩ এপ্রিল রাতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। অপর দু’চিকিৎসক ডা. রনজিৎ ও ডা. ওমর খালেদ ফয়সাল আক্রান্ত হন ১৯ এপ্রিল। ওইদিনই প্রথমে তাদেরকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাতে তাদের দু’জনকেও ঢাকায় পাঠানো হয়। এরপর দীর্ঘদিন তারা চিকিৎসা শেষে একাধিকবার নমুনা পরীক্ষা করা হলে ফলাফল নেগেটিভ হয়।