মানহীন পিপিই-মাস্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ১০ চিকিৎসককে শোকজ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ মানহীন ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী (পিপিই) ও মাস্ক নিয়ে প্রশ্ন করায় ১০ চিকিৎসককে শোকজ করা হয়েছে। একজন চিকিৎসক এসব মানহীন মাস্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলায় তাকে এই সময়ের মধ্যে দুবার বদলি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এসব মানহীন সুরক্ষাসামগ্রীর কারণে আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সূত্রে জানা যায়, পিপিই ও মাস্কের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে বদলি করে দেওয়া হয়েছে খুলনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. এ টি এম মঞ্জুর মোর্শেদকে। প্রথমে তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এবং পরে পাবনা মানসিক হাসপাতালে বদলি করা হয়। নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের এক চিকিৎসককে মানহীন মাস্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলায় শোকজ করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে মানহীন পিপিই-মাস্ক নিয়ে অভিযোগ করায় ১০ জন চিকিৎসককে শোকজ করেছে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ ডক্টরস ফাউন্ডেশনের তথ্যসূত্রে জানা যায়, গতকাল পর্যন্ত ৩২৪ জন চিকিৎসক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। নার্সসহ অন্য স্বাস্থ্যসেবা কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ২৫০ জন। মারা গেছেন এক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান অনুযায়ী পিপিই ও মাস্ক সরবারহ না করাকে এতসংখ্যক স্বাস্থ্যসেবা কর্মী আক্রান্তের কারণ হিসেবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। হাসপাতালে পিপিই ও মাস্কের মান অনুসন্ধানে নেমেছে ১৭ সদস্যের জাতীয় টেকিনক্যাল কমিটি। সরবরাহ করা মাস্ক ও পিপিইর মান যাচাই করতে রাজধানীর মহানগর হাসপাতালে অনুসন্ধান চালিয়েছেন কমিটির সদস্যরা। কমিটির এক সদস্য জানান, অনেক হাসপাতালে বিভিন্ন সংস্থা থেকে অনুদান পাওয়া পিপিই-মাস্ক সরবরাহ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসক-নার্সেরা সেগুলো পরে করোনা আক্রান্ত রোগীর কাছে যাওয়ায় তারা আক্রান্ত হচ্ছেন।
ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেইফটি, রাইটস অ্যান্ড রেসপনসিবিলিটিজের (এফডিএসআরআর) চেয়ারম্যান ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টন বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছে থেকে আমরা নিম্নমানের পিপিই সরবরাহের খবর নিয়মিতই পাচ্ছি। বাস্তবেও আমরা দেখছি, এসব নিম্নমানের পিপিই ব্যবহারের ফলে ৩ শতাধিক ডাক্তার বর্তমানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এভাবে যারা ডাক্তারসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনা ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছেন, তদন্তসাপেক্ষে তাদের বিচার হওয়া উচিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিচার দূরের কথা, উল্টো প্রতিবাদকারী অনেক চিকিৎসককেই শোকজসহ নানা রকমের হয়রানির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। ব্যাপারটা যেন, “ভাত দেবার মুরোদ নাই, কিল মারার গোঁসাই”। আমরা অনেকবার এই অন্যায়ের প্রতিবাদ জানিয়েছি, কিন্তু পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। আমরা আবারও সুরক্ষা প্রদানকারী উন্নতমানের পিপিই সরবরাহের জোর দাবি জানাচ্ছি।’