বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা

0

ভয়ঙ্কর মৃত্যুদূত করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো বিশ্বই যেন থমকে গেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। আমাদের দেশেও একই অবস্থা। মৃতের সংখ্যা কম থাকলেও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে। দেশের অর্থনীতির ওপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে করোনাভাইরাস। এই সংকট থেকে উত্তরণে নতুন চারটিসহ মোট পাঁচটি প্যাকেজে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের জন্য রয়েছে পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ। গত রবিবার কৃষি খাতের তি মোকাবেলায় কৃষকের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
করোনাভাইরাসের কারণে দেশজুড়েই চলছে অঘোষিত লকডাউন। জরুরি কোনো কাজ ছাড়া মানুষের ঘর থেকে বের হওয়া নিষেধ। দেশের বাইরে যাওয়া বা আসার পথও বন্ধ। গার্মেন্ট বন্ধ। সরকারি অফিস-আদালত সব বন্ধ। গণপরিবহন বা ব্যক্তিগত পরিবহনও বন্ধ। এক জেলা থেকে অন্য এলাকায় যাতায়াত বন্ধে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা আছে কোনো হাসপাতালই কোনো ধরনের রোগী ফিরিয়ে দিতে পারবে না। প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, এত সব সত্ত্বেও লোকজনকে ঘরে রাখা এবং সব হাসপাতালে লোকজনের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। সব কিছুতেই চোখে পড়ে অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলার চিত্র। একদিকে পথ চলার েেত্র কড়াকড়ি করা হয়, অন্যদিকে পথে পথে প্রতিদিনই সকাল থেকে বাজার বসছে, এক শ্রেণির মানুষ নানা অজুহাতে চলাফেরা করছে। প্রকাশিত আরেকটি খবরে বলা হচ্ছে, রাজধানীর কোনো কোনো এলাকায় গার্মেন্টকর্মীরা চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদ ও বেতন-ভাতার দাবিতে মিছিল, সমাবেশ ও বিােভ করছে। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রতিদিনই নৌ ও সড়কপথে চোরাগোপ্তাভাবে বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে মানুষ। এমনকি করোনা শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিও ঢাকার বাইরে গেছে। কঠোর নির্দেশনার পরও কেন এমন হচ্ছে? লকডাউন ভেঙে প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে কীভাবে এরা যাচ্ছে সেটাও একটা প্রশ্ন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্দেশনা বাস্তবায়নে আন্ত মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণেই চলছে অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলা। এর ফলে করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে সরকারের পদপেগুলো সঠিকমাত্রায় কার্যকর হতে পারছে না; জনস্বাস্থ্য আরো হুমকির মুখে পড়ছে। ঘরে বাইরে সচেতনত মাত্রই নিরাপত্তাহীনতা অনুভবন করছে। এ অবস্থায় আমরা মনে করি, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আমাদের সমন্বিত উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি। সংশ্লিষ্ট সবার সম্মিলিত উদ্যোগই করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এ জন্য সর্বস্তরে আমাদের শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে সুব্যবস্থাপনা। অন্যথায় নেমে আসবে মহাবিপর্যয়। সব প্রণোদনা ও উদ্যোগ ব্যর্থ হয়ে যাবে। এর জন্য অনেক বড় মূল্য দিতে হবে আমাদের। ইউরোপের মতো অথবা তার কাছাকাছি কোন পরিস্থিতি হলে কোন অবস্থাতেই সামাল দেয়া যাবে না। এ অবস্থা থেকে রক্ষার পথ জরুরি কাজ ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার আহ্বান মেনে চলা।