করোনা ভাইরাসের প্রভাব: সবজির দাম পাচ্ছে না যশোরের কৃষক

0

শিকদার খালিদ॥ সবজির ভা-ার খ্যাত যশোরের সাতমাইল বাজারে দাম সঙ্কটে ভুগছেন বিক্রেতা কৃষক ও ক্রেতা ব্যাপারীরা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ছুটি ও গণপরিবহণ বন্ধের কারণে খুচরা বাজারগুলোতে জনসমাগম কম থাকার প্রভাব পড়েছে হাটে। সাতমাইল বাজারের সবজির হাট থেকে কাচা তরকারি যায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের একাধিক স্থানে।
বৃহস্পতিবার ছিল সবজির বড় মোকাম সাতমাইল বাজারের সাপ্তাহিক হাট। হাটে ছিল প্রচুর তরকারি। পটলের মৌসুম হওয়ায় এ তরকারির পরিমাণ ছিল বেশি। সাথে অন্য সবজিও ছিল। গত হাটের চেয়ে এ হাটে তরকারির আমদানি বেশি ছিল, তবে দাম নিয়ে অসন্তোষ ছিল বিক্রেতা কৃষকের। তারা বলছেন যে দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাতে করে লোকসানের শিকার হবেন তারা। গতকাল হাটে বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি পটল ২৮ থেকে ২৫ টাকা, মূলা ১৮ টাকা, উচ্ছে ৩০ টাকা, বেগুন ৮ টাকা, ঢেড়স বা ভে-ি ১০ টাকা, সিম ১৫ টাকা, লাউ প্রতিটি ১০ থেকে ১২ টাকা ও বাধা কপি প্রতিটি ৬টাকা।  যশোর সদর উপজেলার নাটুয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আলী হোসেন বলেন, এসময়ে সাধারণ পটল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়ে থাকে। এর কম হলে চাষের খরচ ওঠে না।  বড় হৈবতপুর গ্রামের শুকুর আলী বলেন, বাধা কপি বেচতে হল প্রতিটা ৬ টাকায়। এতে সার ও তেলের (কিটনাশক) খরচই উঠবে না।
অপরদিকে ব্যাপারিরা বলছেন, তারা এ হাট থেকে তরকারি কিনে ঢাকাসহ বাইরের জেলাগুলোতে নিয়ে দাম পাচ্ছেন না। খুচরা বাজারে ক্রেতা সঙ্কট দেখিয়ে কমিয়ে দেয়া হচ্ছে তরকারি দাম। ব্যাপারী ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আনোয়ার হোসেন জানান, গত রোববার হাটে পরিবহন খরচসহ পটল ৩২ টাকা কেজিতে কিনে ঢাকার কেরানিগঞ্জে ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হয়েছিল। বড় পাইকাররা দাম দিচ্ছেনা। স্থানীয় ব্যাপারী আবদুর রহমান বলেন, আগে ঢাকায় যেতে ট্রাকভাড়া লাগত ১৩-১৪ হাজার টাকা কিন্তু এখন ভাড়া নিচ্ছে ১৮ হাজার টাকা। এতে মালের দাম বেশি পড়লেও আমরা ঢাকায় সবজি নিয়ে দাম পাচ্ছিনা।
যশোরের চুড়ামনকাটি এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, সবজির উৎপাদন প্রচুর। কিন্তু ক্রেতা সঙ্কটে দাম পাচ্ছেন না কৃষক। করোনার প্রাদুর্ভাব রোধে বাজারে ক্রেতা সঙ্কট। যশোর আঞ্চলিক কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড.আক্তারুজ্জামান বলেন, যশোরে সারাবছর সবজির আবাদ হয়ে থাকে। বছরে গড়ে ৮ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি সবজি উৎপাদন হয়। প্রতি হেক্টরে গড়ে ২৩-২৫ মেট্রিক টন করে সবজি উৎপাদন হয়। সম্প্রতি কৃষি বিভাগ সবজি উৎপাদনে যশোরকে প্রথম ঘোষণা করেছে। কিন্তু এখন করোনা ভাইরাসের কারণে সবজির দাম কম পাচ্ছেন চাষিরা।