সার্ক নেতাদের উদ্যোগ সফল হোক

0

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটায় এই রোগ এখন আর কোন নির্দিষ্ট দেশের সমস্যা নয়। এটি হয়ে উঠেছে মানবজাতির সুস্থতার ওপরে বড় হুমকিস্বরূপ। করোনাভাইরাসের বিস্তারকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। প্রতিদিনই নতুন নতুন দেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ হচ্ছে। এটি শুধু স্বাস্থ্যগত সঙ্কট হিসেবে বিবেচনা করলে ভুল হবে। এর বৈশ্বিক নেতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে পড়তে শুরু করেছে। অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়েছে বিভিন্ন দেশে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রে প্রবেশের বৈধ সুযোগ স্থগিত রয়েছে। চিকিৎসার জন্য প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষকে সীমান্ত পেরুতে হয়। এখন সেটি আর সম্ভব নয়। সীমান্তে জনশূন্য অবস্থা বিরাজ করছে। দণি এশিয়ার সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জনবহুল দেশের সংখ্যা একাধিক। ফলে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার বড় আশঙ্কা রয়েছে অঞ্চল জুড়ে। সেেেত্র মহামারী সামাল দেয়া বিরাট চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে উঠবে। এমন একটি বাস্তবতায় করোনাভাইরাস মোকাবেলায় দণি এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) আওতাধীন দেশগুলোকে এক হয়ে শক্তিশালী যৌথ উদ্যোগ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আহ্বানে শনিবার ‘সার্কভুক্ত দেশগুলোর সরকার প্রধানদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনায় একজোট হয়ে তাঁরা বিশ্বের জন্য উদাহরণ তৈরি করেছেন। স্বাস্থ্যসম্মত বিশ্ব গড়ায় ভূমিকাও রাখতে পারি। ’
সার্কভুক্ত রাষ্ট্রের নেতাদের করোনা মোকাবেলায় সদিচ্ছা ও আন্তরিকতার যে প্রতিফলন ঘটেছে এতে কোন সন্দেহ নেই। আশা করা যায়, রাষ্ট্র নেতাদের এই জোটবদ্ধ ভূমিকায় জনগণ আশ্বাস হবে এবং পরিস্থিতি মোকাবেলা সহজ হবে। গতকালই বিদেশ থেকে বিশ্বনেতারা প্রয়োজন অনুযায়ী পদপে নিতে শুরু করেছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশে আসা প্রত্যেককে নিজ ঘরে কোয়ারেন্টাইনে থাকার আবশ্যকতার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন । আমরা জানি আলোচিত ভাইরাসটি দেশের সীমানার বাইরে থেকে আমাদের দেশে প্রবেশ করেছে। তাই বিদেশফেরতদের নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিজ ঘরে একা অর্থাৎ সঙ্গরোধ বা কোয়ারেন্টাইন অবস্থায় থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কেননা যদি বিদেশফেরত ব্যক্তি ভাইরাসটি বহন করে নিয়ে আসেন তবে নির্দিষ্ট সময়ের ভেতরেই রোগের লণ ফুটে উঠবে। তিনি চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে যাবেন। পান্তরে তিনি যদি ঢালাওভাবে মেলামেশা করেন তবে তার সংস্পর্শে থাকা অন্যরাও একই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় থাকবেন। এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগ আন্তরিক আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘যারা বিদেশ থেকে আসবেন তারা অন্তত বাইরের কারও সঙ্গে মিশবেন না এবং কিছুদিন অপো করে দেখবেন এ ধরনের রোগের কোনরকম লণ দেখা যায় কিনা। প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।’ দুঃখজনক হলো ইতালিফেরত প্রবাসী বাঙালীদের হজ ক্যাম্পে নিলে অব্যবস্থাপনার জন্য তারা বিােভ করেন। এটি প্রত্যাশিত ছিল না। এছাড়া অনেকেই বাড়িতে গিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ফলে নানা প্রশ্ন ও শঙ্কা বাড়ছে। এ অবস্থায় দাবি উঠেছে এদের ধরে এনে বন্দি করা হোক। আমরা আশা করবো, সুযোগ থাকলে প্রশাসনিক বিষয়টি ভেবে দেখবে। আমরা চাই দেশের মানুষ এই মরণব্যাধি থেকে নিরাপদ থাক। সুস্থ সুন্দর পরিবেশ থাক সার্ক অঞ্চল জুড়ে।