নিখোঁজ সাংবাদিক কাজলকে খুঁজে বের করার তাগিদ : সিপিজের বিবৃতি

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ নিখোঁজ সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে খুঁজে বের করতে কোনো রকম চেষ্টার ত্রুটি থাকা উচিত নয় বাংলাদেশের। একই সঙ্গে তিনিসহ অন্যদের বিরুদ্ধে কোনো মানহানির মামলার প্রক্রিয়া চলতে দেয়া উচিত নয় বলে দাবি করেছে সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, সাংবাদিক কাজলের পরিবার ঢাকার চকবাজার পুলিশ স্টেশনে রিপোর্ট করেছেন। তাতে তারা বলেছেন, কাজল একজন ফটোসাংবাদিক ও পাক্ষিক ‘পক্ষকাল’ ম্যাগাজিনের সম্পাদক। তাকে ১০ই মার্চ থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। জাতীয় সংসদের মাগুরা-১ আসনের ক্ষমতাসীন দলের এমপি সাইফুজ্জামান শিখর ভুয়া খবর প্রকাশের অভিযোগে সাংবাদিক কাজল ও অন্য ৩১ জনের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছেন। এর একদিন পর থেকেই নিখোঁজ কাজল। এমপি শিখর মামলাটি করেছেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে। এটা এমন একটি আইন, যার বিষয়ে এর আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সিপিজে। সিপিজে তার উদ্বেগে বলেছে, এই আইনটি সাংবাদিকদের পেশাগত কাজ করার ক্ষেত্রে আইনগত এক বিশাল ‘ডেঞ্জার’ বা বিপদ সৃষ্টি করবে।
বিবৃতিতে সিপিজের এশিয়া বিষয়ক সমন্বয়ক স্টিফেন বাটলার বলেছেন, বহুল বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে জাতীয় সংসদের একজন এমপি’র করা সন্দেহজনক মানহানির মামলায় নাম রয়েছে শফিকুল ইসলাম কাজলের। এই মামলার পর তিনি নিখোঁজ হওয়াটা বিশেষ উদ্বেগের। দ্রুততার সঙ্গে তাকে খুঁজে বের করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া উচিত পুলিশের। একই সঙ্গে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, তিনি অথবা অন্য কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মানহানি মামলার প্রক্রিয়া চলতে দেয়া উচিত হবে না।
এর আগে ১১ই মার্চ বাংলাদেশের সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস কাউন্সিল ওই মানহানির মামলা প্রত্যাহার দাবি করে। তারা বলেন, যে রিপোর্টের কারণে এমপি শিখর মামলা করেছেন কোথাও তার নাম উল্লেখ করা হয়নি। এর প্রেক্ষিতে পুলিশের মন্তব্য চেয়ে চকবাজার পুলিশ স্টেশনের ওসিকে একটি টেক্সট মেসেজ পাঠিয়েছে সিপিজে। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে তারা এর জবাব দেয়নি। একই সঙ্গে এমপি শিখর ও শেরেবাংলা নগর পুলিশ স্টেশনের ওসিকে ই-মেইল করেছে সিপিজে। শেরেবাংলা নগর পুলিশ স্টেশনেই মানহানির মামলাটি করা হয়েছে। কিন্তু এমপি শিখর বা এই থানার ওসির পক্ষ থেকে কোনো উত্তর পায়নি সিপিজে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশে সাংবাদিক নিখোঁজ হওয়া নিয়ে এর আগেও রিপোর্ট করেছে সিপিজে। এসব নিখোঁজ সংবাদ মাধ্যমের সদস্যদের জন্য একটি আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। প্রসঙ্গত, গত ৯ই মার্চ দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, রিপোর্টার আল আমিন সহ মোট ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে এমপি শিখর একটি মানহানির মামলা করেন। তবে তিনি যে রিপোর্টের ভিত্তিতে মামলাটি করেছেন কোথাও তার নাম উল্লেখ করা হয়নি।