করোনা বাংলাদেশে : মানুষ ভরসা চায়

0

করোনাভাইরাস নিয়ে দেশে দেশে শঙ্কা বাড়ছে। নতুন করে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়ার পর বাংলাদেশেও পাওয়া গেল ৩ জন। ইতালি ফেরত ৩ জনকে পেয়ে দেশে শঙ্কা বেড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দণি-পূর্ব এশিয়ার প থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই অঞ্চলের ১১টি দেশের মধ্যে ৬টি দেশে এরই মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সন্ধান মিলেছে। অন্য তিনটি দেশ হলো নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড। এই অঞ্চলের বাকি দেশগুলো এখনও করোনাভাইরাসমুক্ত থাকলেও উচ্চ ঝুঁকিতে যে আছে এতে কোন সংশয় নেই। দু’দিন আগে ঘোষিত উচ্চ ঝুঁকির ২৫টি দেশের মধ্যে ইতোমধ্যেই নাম চলে এসেছে বাংলাদেশের। সঙ্গত কারণেই মানুষ শঙ্কিত হয়ে পড়ছে। মানুষের ভেতর থেকে তখনই এই আতঙ্ক দূর হবে যখন সে আশ্বস্ত হবে যে, রোগ প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এমন বাস্তবতায় দেশের উচ্চ আদালত বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত নির্দেশনাও দেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বিদেশ থেকে যারা বাংলাদেশের স্থল, নৌ ও বিমানবন্দর দিয়ে প্রবেশ করছেন তাঁদের কী ধরনের পরীা করা হচ্ছে সে ব্যাপারে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত মৌখিকভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে তিনটি নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রথম নির্দেশনাÑ বিদেশ থেকে যাঁরা বাংলাদেশের বিমান, স্থল ও নৌবন্দর দিয়ে প্রবেশ করছেন তাঁদের কী ধরনের পরীা করা হচ্ছে। যাঁরা পরীা করছেন তাঁরা প্রশিতি কি না। দ্বিতীয় নির্দেশনাÑ করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে দেশের সরকারী হাসপাতালগুলোয় আলাদা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, কিন্তু বেসরকারী হাসপাতালগুলোয় এখন পর্যন্ত কোন ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়নি। বেসরকারী হাসপাতালগুলোতেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকির কথা মাথায় রেখেই আলাদা চিকিৎসা ব্যবস্থা রাখার নির্দেশনা দিয়েছে। তিন নম্বর নির্দেশনাÑ দেশের সরকারী-বেসরকারী হাসপাতালসহ বিমান, নৌ ও স্থলবন্দরে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল সরঞ্জামাদি আছে কি না। যদি পর্যাপ্ত না থাকে তাহলে জরুরী ভিত্তিতে এসব সরঞ্জাম আমদানি করা। সময়োচিত নির্দেশনাদানের জন্য বিজ্ঞ আদালত দেশবাসীর শ্রদ্ধা পাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে এরই মধ্যে দেশে ৩ জন আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছে। যারা ইতালি থেকে ফিরেছেন এবং করোনা ভাইরাস মুক্ত বলে বিমানবন্দর থেকে ছাড় পেয়েছিলেন। ফলে শঙ্কা জাগছে আর যারা ছাড় পেয়েছেন তারা সবাই সুস্থ কী-না। কর্তৃপক্ষের উচিত হবে বিষয়টি ছাড় পাওয়া ওই সব ব্যক্তিদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেয়া
আমরা জেনেছি সরকারি উদ্যোগে এরই মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিট করা হয়েছে, এমন সংবাদ অবশ্যই স্বস্তিকর। তবে তা শুধু প্রাথমিক পর্যায়ের নয় এমনটাই প্রত্যাশিত। পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা গ্রহণের েেত্র বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে অবকাঠামো, কারিগরি ও পরিবেশগত পরিস্থিতি। এসব মোকাবেলা করেই এগুনো হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে সরকারী ও বেসরকারী প্রতিটি হাসপাতালেই প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত মানের আইসোলেশন ব্যবস্থা কার্যকর করার সমতা গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই। এেেত্র সরকারি মহলের সদিচ্ছা ও সক্রিয়তা অত্যাবশ্যক। আশা করি রোগী সনাক্ত হবার পর সরকার আর কোনো শৈথিল্য দেখাবে না। আমরা আতঙ্ক নয়, ভরসা চাই। আমরা বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু নয় সুস্থ জীবন চাই।