বার্সেলোনায় আগুন জ্বেলে আবিদালই চাপে

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ বার্সেলোনায় কোচ ছাঁটাইয়ের ঘটনা ভুলতেই বসেছিল সবাই। চলতি শতাব্দীতে মাত্র একবারই ২০০৩ সালে কোচ তাড়িয়েছিল কাতালানরা। দীর্ঘ ১৭ বছর পর সেই দৃশ্যটা আবারও ফেরে এর্নেস্তো ভালভার্দেকে চাকুরিচ্যুত করলে। মৌসুমের মাঝপথে কোচ ছাঁটাই করেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারেনি। মাঠের সঙ্গে ঘরের ভেতরেও চলছে ‘যুদ্ধ’। যেটি প্রকাশ পেয়েছে স্পোর্টিং ডিরেক্টর এরিক আবিদালের সঙ্গে অধিনায়ক লিওনেল মেসির কথার লড়াইয়ে। এর জেরে এখন আবিদালের নিজের চাকরি নিয়েই টানাটানি!
বার্সেলোনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিটি যে মেসি, তা নিয়ে কারও প্রশ্ন থাকার নয়। কাতালান ক্লাবটি সব সময় বলে আসছে, মেসিকে তারা খুশি রাখতে চায়। সেই তিনিই যখন আবিদালের দিকে আঙুল তুলেছেন, তখন স্পোর্টিং ডিরেক্টরের পদে টিকে থাকা কঠিনই সাবেক ফরাসি উইং ব্যাকের। আর বার্সেলোনাভিত্তিক রেডিও ‘আরএসি-ওয়ান’ যে খবর দিয়েছে, তাতে আবিদালের জন্য খারাপ সংবাদই অপেক্ষা করছে। বার্সা সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ নাকি বুধবারই জরুরি বৈঠকে বসেছেন আবিদালের সঙ্গে। বার্সেলোনার ‘গৃহদাহ’র শুরুটা হয়েছে আবিদালকে দিয়েই। ভেতরে ভেতরে আগে থেকে সুপ্ত আগ্নেয়গিরির লাভা বইছিল, সেটির বিস্ফোরণ ঘটেছে স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক দিয়ারিও স্পোর্তকে দেওয়া তার সাক্ষাৎকারের পর। আবিদালের দাবি, ভালভার্দের কোচিং সিনিয়র কিছু খেলোয়াড়ের পছন্দ হতো না, তাই ঠিকমতো অনুশীলনও করতেন না তারা।
আবিদাল খেলোয়াড়দের দিকে আঙুল তুলে বলেছেন, ‘কিছু খেলোয়াড় সন্তুষ্ট ছিল না কিংবা খুব বেশি পরিশ্রম করতে চাইতো না (ভালভার্দের অধীনে)। তাছাড়া অভ্যন্তরীণ যোগাযোগও ঠিকঠাক ছিল না। ড্রেসিংরুমে কোচ ও খেলোয়াড়দের সম্পর্ক সব সময় ভালো থাকে, কিন্তু সাবেক খেলোয়াড় হিসেবে আমি এখানে খারাপ কিছুরই গন্ধ পেয়েছিলাম।’ একটু দম নিয়ে বললেন, ‘এরপর আমি আমার ভাবনার কথা ক্লাব কর্তৃপক্ষকে জানাই এবং তারাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে (ভালভার্দেকে ছাঁটাইয়ের)।’
আবিদালের মন্তব্য মোটেও পছন্দ হয়নি মেসির। ‘কিছু খেলোয়াড়’-এর নাম জানতে চান বার্সেলোনা অধিনায়ক। আবিদালের সাক্ষাৎকার প্রকাশের কিছুক্ষণ পরই মেসি প্রশ্ন তুলেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিখেছেন, ‘সত্যি বলতে, এসব জিনিস আমার ভালো লাগে না। প্রত্যেকেরই নিজের দায়-দায়িত্ব নেওয়া উচিত। মাঠে যা-ই ঘটুক, খেলোয়াড়েরা এর দায় নেয়। আমরাই প্রথম স্বীকার করি ভলো করতে পারিনি। আমি মনে করি খেলোয়াড়দের নিয়ে কথা বললে তাদের নাম বলা উচিত। কারণ নাম না বললে সবাইকে কলঙ্কিত করা হয় কিংবা আসলে কথাটির কোনও ভিত্তি নেই।’ দলের সেরা খেলোয়াড়ের প্রশ্নের মুখে পড়া সাবেক ফরাসি তারকা এমনিতেই ভীষণ চাপে। খেলোয়াড়ি জীবনে বার্সেলোনার সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও স্পোর্টিং ডিরেক্টরের দায়িত্বে ব্যর্থতার পাল্লাই ভারী। চোটে লুইস সুয়ারেজকে হারানোর পরও জানুয়ারির দলবদলে কোনও স্ট্রাইকার আনতে পারেননি তিনি। তার আগে প্রধান কোচ হিসেবে ‘ঘরের ছেলে’ জাভিকে আনতেও ব্যর্থ হয়েছেন আবিদাল। সব মিলিয়ে বার্সেলোনার গৃহদাহে আরেকটি পদ খালি হওয়ার জোগাড়! আজকের বৈঠকের পর আবিদালকে বরখাস্ত করা না হলেও মেসির একসময়কার সতীর্থ নিজেই নাকি ইস্তফা দিতে পারেন— বার্সেলোনাভিত্তিক ক্রীড়া দৈনিক স্পোর্তের খবর সেরকমই।