আরেকটি আত্মসমর্পণে সিরিজ হার

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ টানা দুই দিনে দুটি ম্যাচে হার। বাজে ব্যাটিং-বোলিংয়ে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে বাংলাদেশ। আজ শনিবার লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ৯ উইকেটে হেরেছে তারা। তাতে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জিতে নতুন বছর শুরু করেছে পাকিস্তান। হোয়াইটওয়াশ এড়াতে আগামী সোমবার একই মাঠে স্বাগতিকদের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টির এক নম্বর দল পাকিস্তান। অথচ কী হতশ্রী কেটেছিল গত বছর! ৯ ম্যাচে ৮টিতে হার। দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টানা চার সিরিজ খেলে জিততে পারেনি একটিও। ২০১৯ সালের ব্যর্থতা তারা কাটালো বাংলাদেশকে দিয়ে। শুক্রবার প্রথম ম্যাচে স্বাগতিকরা জিতেছিল ৫ উইকেটে। প্রায় এক বছর পর টি-টোয়েন্টি দলে ফেরা শোয়েব মালিক ওই ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখে দুর্দান্ত ফিফটিতে। দ্বিতীয় ম্যাচে জ্বলে উঠলেন মোহাম্মদ হাফিজ। এক বছরেরও বেশি সময় পর টি-টোয়েন্টিতে ডাক পাওয়া ব্যাটসম্যানকে উপযুক্ত সঙ্গ দেন বাবর আজম।
মাত্র ১৩৭ রানের লক্ষ্যে নামে পাকিস্তান। দ্বিতীয় ওভারে ৬ রানে প্রথম উইকেট হারালেও সেটা তাদের সহজ জয়ে বাধা হতে পারেনি। হাফিজ ও বাবরের ফিফটিতে ১৬.৪ ওভারে ১ উইকেটে ১৩৭ রান করে পাকিস্তান। প্রথমটির মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন শফিউল ইসলাম। তার শিকার হন আহসান আলী। ৭ বল খেলেও রানের খাতা না খুলে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ হন পাকিস্তানি ওপেনার। আগের ম্যাচে ‘ডাক’ মারা বাবর ও হাফিজের ব্যাটে শুরুর ওই ধাক্কা কাটায় পাকিস্তান। ১৫ ওভারে ১৩১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় স্বাগতিকরা। মাহমুদউল্লাহর প্রথম ওভারে হাফিজ জয়সূচক একটি রান নেন। ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান ৪৯ বলে ৯ চার ও ১ ছয়ে ৬৭ রানে অপরাজিত থাকেন। লিটনক দাস ১৪তম ওভারের পঞ্চম বলে ক্যাচটি ধরলে হাফিজ মাঠে থেকে জয় উদযাপন করতে পারতেন না। ৫১ রানে জীবন পান তিনি। আগের ওভারে ৩৯ বলে ৮ চারে টি-টোয়েন্টিতে ১১তম ফিফটি করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। হাফসেঞ্চুরি আসে বাবরের ব্যাটেও, ৩৫ বলে ৫ চার ও এক ছয়ে। ১৩তম ফিফটি করার পর ৬৬ রানে অপরাজিত ছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক। তার ৪৪ বলের ইনিংসে ছিল ৭ চার ও এক ছয়।
এই লাহোরের মাঠেই আগের ম্যাচে বাংলাদেশ করেছিল ১৪১। দ্বিতীয় ম্যাচে তারা করে ৬ উইকেটে ১৩৬ রান। বাংলাদেশের টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান- মোহাম্মদ নাঈম (০), মেহেদী হাসান (৯) ও লিটন দাসের (৮) কেউই যেতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘরে। তবে তাদের ব্যর্থতার ভিড়ে আলো ছড়িয়েছেন তামিম। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন এই ওপেনার। রানআউট হওয়ার আগে তামিম ৫৩ বলে করেছেন ৬৫ রান। তার পাশে আফিফ হোসেনের ২১ রান উল্লেখযোগ্য। এছাড়া বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের গল্পটা সেই আগের মতোই। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও পারেননি। শেষে অপরাজিত ছিলেন সৌম্য ৫ রানে, আর আমিনুল ইসলাম ৮ রানে। পাকিস্তানের সবচেয়ে সফল বোলার মোহাম্মদ হাসনাইন। এই পেসার ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান দিয়ে পেয়েছেন ২ উইকেট। আর একটি করে উইকেট নিয়েছেন শাহীন আফ্রিদি, হারিস রউফ ও শাদাব খান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৬/৬ (তামিম ৬৫, নাঈম ০, মেহেদী ৯, লিটন ৮, আফিফ ২১, মাহমুদউল্লাহ ১২, সৌম্য ৫*, আমিনুল ৮*; হাসনাইন ২/২০, রউফ ১/২৭, শাদাব ১/২৮)
পাকিস্তান: ১৬.৪ ওভারে ১৩৭/১ (বাবর ৬৬*, আহসান ০, হাফিজ ৬৭*, শফিউল ১/২৭)
ফল: পাকিস্তান ৯ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: বাবর আজম
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ তে এগিয়ে পাকিস্তান।