দালাল ছাড়া দ্রুত সেবা মেলে না যশোর বিআরটিএ অফিসে

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) যশোর অফিসে দালাল ছাড়া দ্রুত সেবা মেলে না। সরাসরি কাজ করতে গেলে মানুষকে নানামুখি হয়রানির শিকার হতে হয়।
দীর্ঘদিন যশোর কালেক্টরেট চত্বরে থাকা অফিসটি বর্তমন শহরের বকচর এলাকায় স্থানান্তরিত হয়েছে। এখানে দালাল চক্র শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলেছে। বিআরটিএ অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মদদ রয়েছে এই দালাল চক্রের পেছনে।
বিআরটিএর নতুন অফিসে কয়েকদিন সরেজমিনে ঘরে দালালদের অপতৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। অফিসটি কালেক্টরেট চত্বরে থাকাকালে যে দালাল চক্র আধিপত্য বিস্তার করেছিল, নতুন অফিসেও সেই চক্র শক্তিশালী অবস্থান করে নিয়েছে। অফিসের ভেতর থেকে শুরু করে আশেপাশে তাদের সক্রিয় অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে।
জানা গেছে, ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্যে সরকার নির্ধারিত ফি ২ হাজার ৮৮৭ টাকা। প্রথমে লারনার নেয়ার জন্যে দিতে হয় ৩৪৫ টাকা। সাত মাস লিখিত মৌখিক প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা নেয়া হয়। পরীক্ষার আগে বাকি ২ হাজার ৫৪২ টাকা দিতে হয়। ওই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের একমাসের মধ্যে আঙ্গুলের ছাপ নেওয়ার কথা এবং ৪ মাসের মধ্যে স্মার্ট কার্ড দেয়ার কথা। ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার এই কাজ সরাসরি করতে গেলে নানামুখি হয়রানির শিকার হতে হয়। সে কারণে সহজ-সরল মানুষ দালালদের শরণাপন্ন হয়। তাদের ছাড়া কাজ করতে গেলে পরীক্ষার মাধ্যম বাদ দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, দালাল চক্রের মাধ্যমে কাজটি করলে খরচ হয় সাগে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। প্রথমে লার্নারের জন্যে ২ হাজার টাকা। বাকি টাকা পরীক্ষার আগে দিতে হয়। এটা করলে দালাল চক্র নিশ্চয়তা দেয়। লারনার দেয়ার পর দ্রুত পরীক্ষার তারিখ দেয়া হবে। পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার কোন সুযোগ নেই। দ্রুত আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে লাইসেন্স বের করে দেয়া হবে।
অভিযোগে জানা গেছে, এই দালাল চক্রের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা বিআরটিএ যশোর অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। তাদের ব্যবহার করে তারা অবৈধ অর্থ উপার্জন করেন। সম্প্রতি এই প্রতিবেদক যশোর বিআরটিএ অফিসে গিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার কথা বলার সাথে সাথে অনেক দালাল এসে ঘিরে ধরে। তারা বলেন, ভাই নাম্বার নিয়ে যান। যোগাযোগে করেন। কোন ভোগান্তি ছাড়াই কাজ করে দেব। নিজে কাজ করতে গেলে ধরবেন। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই কাজে আছি। কেউ আমাদের কাছে এসে প্রতারিত হয় না। কাজ নিয়ে বাড়ি ফেরে। বিআরটিএ যশোর অফিসের এ হাল নতুন নয়, দীর্ঘ দিনের। অফিসটি কালেক্টরেট চত্বরে থাকা অবস্থায়ও দালাল ছাড়া সাধারণ মানুষ সেবা পেতেন না। এখনো পাচ্ছেন না। এ বিষয়ে বিআরটিএ যশোর অফিসের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) কাজী মো. মোরছালীন দালালের অপতৎপরতা করেন। তিনি বলেন, আমার অফিসের কেউ এর সাথে জড়িত না। আমি দালালের বিরুদ্ধে জনগণকে সতর্ক করি। এখানে দালালের মাধ্যমে কেউ প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেব। পরীক্ষায় পাস ফেলের বিষয়টি কমিটির হাতে। এখানে দালালের প্রভাব খাটানোর কোন সুযোগ নেই।