সৌদি থেকে শূন্য হাতে ফিরেছেন ১০৬ শ্রমিক

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ যৌন হয়রানির শিকার নারী কর্মী আর পুলিশের ধরপাকড়ের শিকার হয়ে শূন্য হাতে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন পুরুষ শ্রমিকরা। শনিবার রাত ১১টা ২০ মিনিট ও রাত দেড়টায় সৌদি এয়ারলাইন্সের দুটি ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন ১০৬ কর্মী। তাদের মধ্যে নারী রয়েছেন ১৫ জন। এ নিয়ে চার দিনে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরলেন ২৪৭ কর্মী। ফেরত আসা শ্রমিকদের চোখে-মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। বিষণ্ন চেহারা। নারীরা অভিযোগ করেছেন, গৃহকর্তা কর্তৃক যৌন হয়রানি, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তারা। সৌদিতে কাজে যোগ দেয়ার পর কয়েক দিনের মধ্যেই শুরু হয় নির্যাতন।
নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গৃহকর্তার বাসা থেকে পালিয়ে যান ব্রাক্ষণবাড়িয়ার দুই নারী। বাংলাদেশী শ্রমিকদের সহযোগিতায় তারা আশ্রয় নেন জেদ্দায় বাংলাদেশ দূতাবাসের সেফহোমে। নারীদের প্রায় প্রত্যেকের একই সমস্যা। দেশে ফেরা পুরুষদের অনেকের চোখে জল জমাট বেঁধেছিলো। তারা অভিযোগ করেন, আকামা তৈরির জন্য কফিলকে টাকা দিলেও কফিল আকামা তৈরি করে দেয়নি। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর কফিলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা কোনো দায়-দায়িত্ব নেয় না। উল্টো কফিল বলে দেয় ভিসা বাতিল করে দেশে পাঠিয়ে দিতে। এসব কারণে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে সৌদি আরব গিয়ে কয়েক মাসও থাকতে পারেননি অনেকে। শুন্য হাতেই ফিরতে হয়েছে তাদের। তাদের মধ্যে একজন কুমল্লিার চান্দিনার আবু হানিফ। মাত্র চার মাস আগে সৌদি আরব যান। তিন মাসের এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ শেষ হলে মালিক আর আকামা দেননি হানিফকে। কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে পুলিশ আটক করে তাকে। তারপরই দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কাজের পোশাকেই দেশে ফিরেছেন শহীদ মিয়া (৪০)। আড়াই বছর আগে সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ করে টাইলস ফিটিংয়ের কাজে সৌদি যান তিনি। কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে আটক করে পুলিশ। পোশাক পরিবর্তনেও সুযোগ পাননি তিনি। কাজের পোশাকেই দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে শহীদ মিয়াকে। একইভাবে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে সিলেটের শুভ দেবনাথ, টাঙ্গাইলের হামিদুল্লাহ, কুমিল্লার তোফাজ্জলকে। বিদেশ ফেরত কর্মীদের ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য সহায়তা প্রদান করা হয়। ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে ২৪ হাজার ২৮১ বাংলাদেশিকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়। আর নতুন বছরের শুরু পর চার দিনে ফিরলেন ২৪৭ জন।