ফেডারেশন কাপ বসুন্ধরার

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ অনেক দিন পর বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে মাঠে এসেছিলেন সমর্থকেরা। কিন্তু নিজেদের ইতিহাসে আরেকটি নতুন পাতা যোগ করতে পারেনি রহমতগঞ্জ।তাদের ২-১ গোলে হারিয়েই প্রথমবারের মতো ফেডারেশন কাপ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বসুন্ধরা কিংস। অস্কার ব্রুজনের দলের জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন কোস্টারিকার ফরোয়ার্ড দানিয়েল কলিনদ্রেস। পুরো ম্যাচে পুরনো ঢাকার দলটির রক্ষণভাগকে চাপে রেখে করেছেন জোড়া গোল। এই মৌসুমে রহমতগঞ্জের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। একে একে বড় বড় দলকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয় তারা। ফাইনালেও বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়ার আশা করেছিল দলটি। কিন্তু শক্তির বিচারে এগিয়ে থাকা বসু্ন্ধরার গতির সঙ্গে তারা এঁটে উঠতে পারেনি। পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে সমতা ফেরালেও শেষটা ভালো করতে পারেনি। যোগ্য দল হিসেবেই শিরোপা জিতেছে বসুন্ধরা।
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে রবিবার ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণে গেছে বসুন্ধরা কিংস । ৪-৩-৩ ছকে প্রতিপক্ষকে চেপে ধরে তারা। রক্ষণ সামলাতেই ব্যস্ত থাকতে হয়েছে রহমতগঞ্জকে। তবে আক্রমণের ঢেউ তুলেও প্রথম গোল পেতে বিজয়ী দলকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৪০ মিনিট পর্যন্ত। এর আগে ম্যাচের ২ মিনিটে কলিনদ্রেসের কর্নারে বখতিয়ার দুইশবেকভের হেড ক্রসবার ছুঁয়ে যায়।৮ মিনিটে কলিনদ্রেসের কর্নারে নিকোলাস দেলমন্তের হেড নাহিদুল ইসলাম গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করেন। প্রতি আক্রমণনির্ভর ফুটবল খেলে রহমতগঞ্জ ১৫ মিনিটে সুযোগ পায়। কিন্তু উজবেক মিডফিল্ডার তুরায়েভ আখোবিরের ক্রসে সুহেল মিয়ার শট গোলকিপার জিকোর শরীরে লেগে প্রতিহত হয়। ৪১ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোল পায় বসুন্ধরা। এর একটু আগে তাজিক ডিফেন্ডার আখপোপভ আশররোভ চোট পেয়ে মাঠের বাইরে যান।এই সুযোগে ডান প্রান্ত থেকে বিশ্বনাথ ঘোষের কর্নারে কোস্টারিকার হয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলা দানিয়েল কলিনদ্রেস হেডে লক্ষ্যভেদ করেন।
বিরতির পর বসুন্ধরা আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়েছে। ৫৮ মিনিটে দুইশবেকভের গোলপ্রচেষ্টা পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। তবে রহমতগঞ্জ ৬৪ মিনিটে সমতা এনে ফেলে খেলার ধারার বিপরীতে থেকে। শাহেদুল আলমের কর্নারে গাম্বিয়ার মোমোদু বাহ হেডে লক্ষ্যভেদ করেন। জয় নিয়ে যাবতীয় অনিশ্চয়তা মুছে ফেলতে এরপর মরিয়া হয়ে আক্রমণ চালায় বসুন্ধরা। তবে ৬৯ মিনিটে মতিনের কাটব্যাক থেকে সুফিল দুবারের চেষ্টাতেও ব্যবধান বাড়তে পারেনি।৭৫ মিনিটে প্রতিপক্ষের গোলকিপার রাসেল মাহমুদ লিটনের ভুলে বসুন্ধরা দ্বিতীয় গোল পায় । সতীর্থের ব্যাক পাস বিপদমুক্ত না করে সতীর্থকে সামনে বাড়াবেন না কিক নেবেন, এ নিয়ে দ্বিধায় ভুগছিলেন লিটন। দ্রুত দৌড়ে এসে বল ছিনিয়ে নিয়ে সহজেই দলকে এগিয়ে নেন কলিনদ্রেস। এবং এ গোলটাই ভাগ্য গড়ে দেয় ম্যাচের। গতবার মৌসুমসূচক ট্রফিটি বসুন্ধরাকে নিতে দেয়নি আবাহনী। এবার আর সেটি হাতছাড়া হয়নি, প্রথম প্রতিযোগিতার ট্রফি উঠলো বসুন্ধরার হাতেই! ম্যাচ শেষে রহমতগঞ্জ কোচ গোলাম জিলানির মধ্যে যুগপৎভাবে পাওয়া গেল হতাশা ও তৃপ্তি। হতাশা,গোলকিপার লিটন যদি ওই শিশুতোষ ভুলটা না করতেন, ফলটা অন্যরকম হতেও পারতো। ওটাই যে ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। তৃপ্তি, ‘বসুন্ধরার মতো শক্তিশালী দলের সঙ্গে লড়াই করা তো কম নয়। তার আগে আমরা আবাহনী ও মোহামেডানকে হারিয়ে উঠেছি ফাইনালে।’