আরেকটি যুদ্ধ বহন করার সামর্থ্য নেই বিশ্বের- জাতিসংঘ মহাসচিব

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ উপসাগরীয় অঞ্চলে নতুন করে সৃষ্ট উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরাঁ। তিনি বলেছেন, উপসাগরীয় অঞ্চলে আরেকটি যুদ্ধ বহন করার সামর্থ্য নেই বিশ্বের। তাই তিনি সব পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। ওদিকে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের ওই হামলার আইনগত বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জাতিসংঘের নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ অ্যাগনেস ক্যালামার্ড। যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরাকের রাজধানী বাগদাদে বিমানবন্দরে নিহত হন ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলাইমানি। এ ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্য উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ইরান ভয়াবহ প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে শুক্রবার স্থানীয় সময় সকালে বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
এদিন সকালে জাতিসংঘের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক ওই বিবৃতি ইস্যু করেন। এতে বলা হয়, জাতিসংঘ মহাসচিব অব্যাহতভাবে উত্তেজনা হ্রাসের পরামর্শ দিচ্ছেন। এটা এমন একটি সময় যখন নেতাদেরকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করতেই হবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইউএন নিউজ।
এতে আরো বলা হয়েছে, কাসেম সোলাইমানিকে বাগদাদ বিমানবন্দরের বাইরে টার্গেট করে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাকে হত্যা করে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাকে হত্যার এ নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই হামলায় আরো যারা নিহত হয়েছেন তার মধ্যে রয়েছেন ইরাকের মিলিশিয়া নেতা আবু মাহদি আল মুহানদিস। আবু মাহদি আল মুহানদিসের গ্রুপ খতিব হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ আছে। এক সপ্তাহ আগে ইরাকে এক রকেট হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের একজন বেসামরিক কন্ট্রাক্টর নিহত হন। এ জন্য খতিব হিজবুল্লাহকে দায়ী করা হয়।
জেনারেল সোলাইমানিকে হত্যার পর দেশে তিনদিনের শোক ঘোষণা করেছেন ইরানের সুপ্রিম নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার প্রতিশোধ নেয়া হবে। এমন অবস্থায় সবাইকে সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে শুক্রবার দুপুরে নিয়মিত ব্রিফিংয়ের সময় ফারহান হক বলেন, পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেছেন অ্যান্থনিও গুতেরাঁ। তবে কি কথা হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানান নি ফারহান হক। তিনি বলেন, ইরাক ও সেখানে জাতিসংঘের মিশনে অব্যাহতভাবে বিস্তৃত পর্যায়ে কাজ করে যাবে জাতিসংঘ। একই সঙ্গে পুরো দেশে স্থিতিশীলতার পরামর্শ দেবে। এ সময়ে জাতিসংঘের পারসোনালদের মোতায়েন করার বিষয়ে রিপোর্টে কোনো পরিবর্তন নেই। জাতিসংঘ প্রধানের বার্তার জবাবে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি জেনিন হেনিস প্লেচার্ট বলেছেন, ওই অঞ্চলের নেতারা যদি বিরত না থাকেন, তাহলে এর ফল হবে বিধ্বংসী এক সহিংসতা। তিনি টুইটে লিখেছেন, দীর্ঘ সময় ধরে ইরাক হলো বিভিন্ন শক্তির প্রতিযোগিতার একটি থিয়েটার। ইরাকিরা স্থিতিশীলতা ও শান্তির দাবিদার। অবশ্যই মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে। ওদিকে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের এমন হামলার আন্তর্জাতিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জাতিসংঘের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, খেয়ালখুশিমতো হত্যাকাণ্ড বিষয়ক নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ অ্যাগনেস ক্যালামার্ড। দৃঢ়তার সঙ্গে হস্তক্ষেপের জন্য তিনি জাতিসংঘকে তার আইনগত উপায় ও প্ল্যাটফরম ব্যবহারের অনুরোধ করেছেন। জাতিসংঘ ও এর নেতৃত্বের সামনে এখনই চাপ দেয়া ছাড়া আর কোনো সময় নেই।