চাটাইয়ে ঘেরা স্কুলটির সুনাম এখন গ্রামবাসীর মুখে মুখে

0

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ ॥ সমাপনী পরীক্ষায় প্রত্যন্ত গ্রামের একটি স্কুল থেকে সবাই জিপিএ-৫ পেয়েছে। তাদের এমন ফল অর্জনে বেশ সাড়া ফেলেছে গ্রামটিতে। উপরে টিনসেড, চারপাশে বাঁশের তৈরি চাটাই দিয়ে ঘেরা স্কুলটি ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলার দখলপুর বাজারে। নাম আলোর দিশারী কেজি স্কুল। এ স্কুল থেকে এবার সমাপনী পরীক্ষায় ১৬ শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে সবাই জিপিএ-৫ পেয়েছে। এতেই স্কুলটির শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থী আর অভিভাবকের আনন্দের শেষ নেই। শিশুরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে। খুশিতে অভিভাবকরাও এসে জড়িয়ে ধরেন শিক্ষকদের। যেন কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। তাদের সন্তানরা এ স্কুল থেকে এত ভালো ফল করবে এটা অনেক অভিভাবক ভাবতেও পারেননি। চার কক্ষ বিশিষ্ট স্কুলটির মোট শিক্ষার্থী ১৮০ জন। শিক্ষক ছয়জন।
এক শিক্ষার্থীর মা রোজিনা খাতুন জানান, স্কুলটিতে বাচ্চা ভর্তি করার পর অভিভাবকরা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যান। কারণ শিক্ষকরা এতটা খেয়াল করেন যে বাবা-মাকে তেমন পরিশ্রম করতে হয় না। তাছাড়া বাচ্চাদের আলাদা কোনো প্রাইভেট পড়াতে হয় না। পরীক্ষা এলে শিক্ষকরা টাকা ছাড়াই কোচিং করান। তিনি বলেন, তার মেয়ে জিপিএ-৫ পাওয়ায় খুবই খুশি। অন্য এক শিক্ষার্থী আল-আমিনের বাবা আনিচুর রহমান জানান, শিক্ষকদের চেষ্টায় তাদের ছেলে-মেয়েরা এত ভালো ফল করেছে। তারা অনেকে এ ফল আশা করতে পারেনি। জিপিএ-৫ পাওয়ায় শিশু শিক্ষার্থী মিম জানায়, শিক্ষকরা তাদের পেছনে যে পরিশ্রম করেছেন তা সবসময় তাদের পড়ালেখা করতে অনেক সহজ হতো। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রকিবুল ইসলাম জানান, দখলপুর গ্রামে ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বেশ কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যেও বাচ্চাদের দেখভাল করার দায়িত্ব নেন তারা। ২০০২ সালে ৩০ শতক ভাড়া জমির উপর প্রতিষ্ঠা করেন আলোর দিশারী কেজি স্কুল। পাড়াগায়ে স্কুলটি হওয়ায় সম্পূর্ণ বাণিজ্যিকভাবে চালানো যায় না। নিজেরা বেঁচে থাকতে পারেন এমন পয়সা নিয়ে তারা শ্রম দিয়ে চলেছেন। তারা ছয়জন শিক্ষক-শিক্ষিকা বাচ্চাদের পড়ালেখা শেখানোর কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতিটি বছরই তাদের প্রতিষ্ঠান ভালো ফল করছে। এবার ১৬ জন সমাপনী পরীক্ষা দিয়ে সবাই জিপিএ-৫ পেয়েছে। যেটা তাদের জানামতে ঝিনাইদহ জেলার মধ্যে সেরা। এ বিষয়ে হরিনাকুন্ডু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস. এম আব্দুর রহমান জানান, প্রতিষ্ঠানটির ফলাফল খুবই সন্তোষজনক। ওই প্রতিষ্ঠানের শিশুরা খুবই ভালো ফল করেছে। শিক্ষক-অভিভাবকরা পরিশ্রম করলে অবশ্যই সন্তানরা ভালো ফল করবে, যা দখলপুর কেজি স্কুলটি করেছে।