যশোরের রেলবাজারে মাদকের রমরমা ব্যবসা, সেবনও চলে চক্রের আস্তানায়

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর শহরের রেলবাজার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র ফেনসিডিল ও ইয়াবা ট্যাবলেটের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। শুধু ব্যবসা নয়, তাদের আস্তানায় খরিদ্দারদের মাদকদ্রব্য সেবন করানো হয়। প্রায় প্রকাশ্যে এই মাদকের কারবার চললেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, রেলবাজার গাড়োয়ানপট্টির রবি মিয়ার ছেলে জাহিদ, মৃত নাছির মিয়ার ৩ ছেলে আব্বাস, জামাল ও কামাল, ফারুকের ছেলে বিদ্যুৎ, একই এলাকার আকাশ ও মামুন মাদক ওই চক্রের সদস্য। এর মধ্যে জাহিদ মাদক ব্যবসায়ী চক্রের মূল হোতা। চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে রেলবাজার এলাকায় দাপটের সাথে ফেনসিডিল ও ইয়াবা ট্যাবলেটের ব্যবসা চালিয়ে আসছে। তারা দিনের বেলায় রেলবাজার এলাকার হোটেল শাহানাজের সামনের রুহুল আমিনের ভাড়া দেওয়া কলার আড়ৎ, বাবলু ওয়েল্ডিংয়ের দোকান, হোটেল শাহানাজে যাওয়ার গলিতে ও তার বিপরীত পাশে চায়ের দোকানের সামনে এবং একটি কফিশপে অবস্থান করে থাকেন। রেলবাজারের পূর্ব দিকে রাস্তা সংলগ্ন সাবেক ভিউ হোটেলের সামনে বিদ্যুতের জোড়া খাম্বার নিচে রয়েছে মাদক ব্যবসায়ী চক্রের সদস্য আব্বাসের একটি চায়ের দোকান। চাঁচড়া রায়পাড়া ইসমাইল কলোনির এক সময়ের কুখ্যাত হেরোইন ব্যবসায়ী রহিমা বেগম ওরফে বুদ্ধি বুড়ির জামাই আব্বাস। মূলত চায়ের ব্যবসা তার লোক দেখানো। এই চায়ের ব্যবসায়ের আড়ালে আব্বাস মাদকের ব্যবসা করে। হোটেল শাহানাজের সামনের রুহুল আমিনের ভাড়া দেওয়া কলার আড়তে বসে মাদকদ্রব্য বিক্রি করে আব্বাসের দুই ভাই জামাল ও কামালসহ চক্রের অন্য সদস্যরা। আর মাদক চক্রের মূল হোতা জাহিদকে দিনের বেলায় সার্বক্ষণিক হোটেল শাহানাজের দিকে যেতে গলিতে দুটি চায়ের দোকানের সামনে অবস্থান করতে দেখা যায়। রিকশা, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল এমনকি প্রাইভেটকারে করে মাদকসেবীদের রেলবাজার এলাকার মাদক চক্রের আস্তানায় যেতে দেখা যায়। তবে দুপুরের পর পরই মাদকসেবীদের আনাগোনা বেড়ে যায় সেখানে। প্রাইভেটকারে করে আসা কোনও মাদকসেবী রাস্তায় গাড়ি রেখে মোবাইল ফোন করলে তার কাছে ছুটে যায় মাদক বিক্রেতা। তবে ধনী পরিবারের সন্তান মাদকসেবীরা এলে তাদের কাছে যেতে দেখা যায় চক্রের হোতা জাহিদকে। মাদকসেবীরা প্রাইভেটকারে বসে টাকা দেওয়ার পর তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ফেনসিডিল ও ইয়াবা ট্যাবলেট। রিকশা ও ইজিবাইকের ভেতর বসেও মাদকদ্রব্য হস্তান্তর করা হয়।
সূত্র জানায়, শহরের পুরাতন কসবা কাজীপাড়ার অনেক যুবক রেলবাজার এলাকার মাদকের আস্তানায় যাতায়াত করে থাকে। এরা মোটরসাইকেল এবং রিকশায় করে আসে মাদকদ্রব্য কিনতে ও সেবন করতে। রেলবাজারে আজিজ মিয়া নামের এক ব্যক্তির একটি বরফ ফ্যাক্টরি রয়েছে। এর ভেতর এবং উপরের ছাদে মাদক সেবন করানোর ব্যবস্থা রয়েছে। সন্ধ্যার পর বরফ ফ্যাক্টরির ছাদে মাদকদ্রব্য বিশেষ করে ইয়াবা ট্যাবলেট সেবনের কাজ চলে। সূত্র আরও জানায়, মাদক ব্যবসায়ের সাথে জড়িতরা সন্ত্রাসী প্রকৃতির। যে কারণে স্থানীয় সাধারণ ব্যবসায়ীরা তাদের মাদক ব্যবসায়ের প্রতিবাদ করতে সাহস পান না।
স্থানীয়রা আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে রেলবাজার এলাকায় এভাবে রমরমা মাদকের কারবার চললেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেয় না। বিষয়টি তাদের কাছে রহস্যজনক বলে মনে হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইনসপেক্টর তারিকুল ইসলাম জানান, রেলবাজার এলাকার মাদক ব্যবসায়ের বিষয়ে তারা খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

 

 

 

Lab Scan