সরবরাহ বাড়লেও সবজির দাম কমেনি ক্রেতা সংকটে কমল মুরগির দাম

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ॥ সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম এখনও সহনীয় পর্যায়ে আসেনি। বাজারে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের দামও চড়া। আমদানি অব্যাহত থাকায় বাজারে চালের দাম স্থির রয়েছে। তবে নতুন আমন ধান ওঠায় মোটা চালের দাম কিছুটা কমেছে। ক্রেতাদের চাহিদা কমায় খামারিরা কমিয়ে দিয়েছেন মুরগি ও ডিমের দাম। প্রতি কেজি মুরগিতে দাম কমল ৩০ টাকা। রোববার যশোর শহরের বড় বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

বড় বাজারে আগাম শীতকালীন সবজির সরবরাহ প্রচুর। কিন্তু দাম এখনও ক্রেতাদের নাগালে আসেনি। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন তাদের পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে সবজি কিনতে হচ্ছে। এইচ এম এম রোডের খুচরা বিক্রেতা কৃষ্ণ চন্দ্র দাস জানান, রোববার টমেটো বিক্রি হয়েছে মানভেদে প্রতি কেজি ১২০ টাকা, উচ্ছে ১০০/১২০ টাকা, ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে শিম, গাজর,শসা,ফুলকপি ও ঢ্যাঁড়স। কুশি ও পটল ৬০ টাকা করে, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৪০/৪৫ টাকা।

বড় বাজারে কাঁচামালের আড়তদার মো. আলাউদ্দিন জানান,‘ আগামী পৌষের শুরুতে বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়বে। সে সময় দামও কমে আসবে। সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে আগাম শীতকালীন সবজির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সরবরাহে ঘাটতির কারণে এখন দামও খুব একটা কমেনি।’

তবে রোববার বাজার করতে আসা জনৈক ক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে সবজির সরবরাহ প্রচুর। এর পরও এক শ্রেণির অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী বৃষ্টির অজুহাত দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। তিনি বাজার তদারকির গাফিলতিকেও এর জন্য দায়ী করছেন।

এদিকে বাজারে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। বড় বাজার মাছবাজারের খুচরা মাছ বিক্রেতা এরশাদ আলী জানান, রোববার ৬০০/৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হয়েছে ২৪০০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১৮০০ টাকা, ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১৪০০ টাকা ও ৩টায় কেজি ইলিশ ১০০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এসব ইলিশ নদীর এবং ছোট-বড় সব ইলিশের পেটে ডিম রয়েছে।

বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিক্রেতা আনিসুর রহমান জানান, প্রতি কেজি রুই মাছ ৩০০ টাকা, সিলভার কেজি ১৬০ টাকা, ৫/৭ পিস কেজি গলদা চিংড়ি ১৫০০ টাকা, ১৫/১৬ পিস কেজি গলদা চিংড়ি ১০০০ টাকা, দেশি কৈ ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা, নাইলোটিকা ২০০ টাকা ও বাটা ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

যশোর চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুশীল কুমার বিশ্বাস জানান,আমদানি অব্যাহত থাকায় বাজারে সরু চালের দাম স্থির রয়েছে। তাছাড়া নতুন আমন ধান ওঠায় সরবরাহ বেড়ে বাজারে মোটা চালের দাম কিছুটা কমেছে। রোববার বড় বাজার চালবাজারে কেজিতে ২ টাকা কমে মোটা গুটি স্বর্ণা চাল বিক্রি হয়েছে মানভেদে ৪৬ থেকে ৫০ টাকা। আর হীরা চালের কেজি বিক্রি হয়েছে ৪২ টাকায়।

অপরদিকে চাহিদা কমে যাওয়ায় খামারিরা মুরগি ও ডিমের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। রোববার খুচরা মুরগি বিক্রেতা মোহাম্মদ আজম জানান, সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৮০ টাকা। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৩৩০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮০ টাকা।

তিনি আরও জানান, বাজারে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের আমদানির কারণে ক্রেতারা মুরগি কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। তাছাড়া খামারের মুরগির ডিমের দামও গত সপ্তাহের থেকে কিছুটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে।

ডিম বিক্রেতা ‘মায়ের দোয়া স্টোর’-এর স্বত্বাধিকারী শেখ আব্দুল কুদ্দুস জানান, তিনি বাদামি রঙের মুরগির ডিম প্রতি হালি ৪২ টাকা ও সাদা ডিম ৪০ টাকায় বিক্রি করছেন।