যশোর সেনানিবাসে বর্ণিল আয়োজনে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্ণিল আয়োজনে যশোর সেনানিবাসে মহান সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মিলিত আক্রমণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ নতুন গতি পায় এবং বিজয়ের পথ আরও সুদৃঢ় হয়। সেই বীরগাঁথাময় দিনটির স্মরণে প্রতিবছর দিবসটি পালন করে সেনাবাহিনী। এরই ধারবাবাহিকতায় শুক্রবার বিকেলে যশোর সেনানিবাসে এক মনোমুগ্ধকর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে আগত মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সদস্য ও আমন্ত্রিত অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এবং যশোর এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল জে এম ইমদাদুল ইসলাম, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, এমফিল।

পরে স্বাগত ভাষণে জিওসি জেএম ইমদাদুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধে যশোর অঞ্চলের মানুষের সাহস, ত্যাগ ও বীরত্বপূর্ণ অবদান গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অকুতোভয় সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়েই বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। তিনি সকল বীর শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।

তিনি আরও বলেন, দেশের প্রতিটি সংকট ও দুর্যোগে সশস্ত্র বাহিনী দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে আসছে। জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা, পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাস দমন, বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা এবং বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনীর অবদান অনস্বীকার্য। পাশাপাশি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দেশের সেনাসদস্যদের সাফল্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করেছে।

এর আগে বেলুন উড়িয়ে তিনি অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন। এরপর সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে কেক কাটেন তিনি। এসময় সেখানে যশোরের নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশেক হাসান, পুলিশ সুপার রওনক জাহানসহ সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ এবং দাউদ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা এক মনোজ্ঞ ডিসপ্লে উপস্থাপন করে। দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, শৃঙ্খলা ও ঐতিহ্যের মিশেলে সাজানো এই পরিবেশনা অতিথিদের মুগ্ধ করে। সুসমন্বিত দেশাত্মবোধক থিম এবং মনোমুগ্ধকর উপস্থাপনা অনুষ্ঠানে বিশেষ আবেগঘন আবহ সৃষ্টি করে।

অনুষ্ঠান শেষে জিওসি মেজর জেনারেল জে এম ইমদাদুল ইসলাম উপস্থিত অতিথিদের কাছে গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এসময় তিনি দৈনিক লোকসমাজের প্রকাশক শান্তনু ইসলাম সুমিত, প্রেস ক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুনসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও সাক্ষাত করেন।

তিনি সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, তাদের দায়িত্বশীল সংবাদ পরিবেশন সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সদস্য, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন পেশার মানুষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল দেশাত্মবোধ, সম্মান ও শ্রদ্ধায় ভরপুর পরিবেশ।